১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার, ১০:৪২

নীলনকশায় রোহিঙ্গা নিধন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজটি এখন করছি : মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হওয়া দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সমাজের সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিলেও ২০০৫ সাল থেকে তা পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। এরপর থেকে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, নির্যাতন-হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে মিয়ানমারে চলমান ঘটনাবলিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই গণহত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বেশ আগে থেকেই। এখানে ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘মুসলমান’ দুটি ইস্যুই গুরুত্ব পেয়েছে। ১৯৬২ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তা সরকার জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে ধর্মকে ব্যবহার শুরু করে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরই তখন মিয়ানমারের প্রকৃত নাগরিক হিসেবে প্রচার করা হয়।
১৯৭৪ সালে রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বিদেশি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর পর জান্তা সরকারের দমন-পীড়নে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। ১৯৮২ সালে মিয়ানমার যে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করে তাতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।

এ বছরের শুরুর দিকে মিয়ানমারের বিশেষ দূতের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিল সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে মিয়ানমারের দূত বলেছিলেন, এ সংখ্যা মাত্র দুই হাজার হতে পারে। বাংলাদেশ তাত্ক্ষণিকভাবেই পরিস্থিতি দেখতে মিয়ানমারের দূতকে কক্সবাজার যাওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেছিলেন, তাঁর ঢাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই।
রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীকে নাগরিক বলেই স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। ১৯৮২ সালের বিতর্কিত এক আইনে তাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই থেকে তাদের ‘বেঙ্গলি’ (বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশকারী) তকমা দিয়ে মিয়ানমার থেকে বিতাড়নের চেষ্টা চলছে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে নতুন মাত্রায় গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা দাবি করেছে, তাদের অনতিবিলম্বে মিয়ানমার ছাড়তে বলা হয়েছে। এমনকি মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে মাইক দিয়ে এ নির্দেশনা প্রচার করেছে।

একই সময় মিয়ানমার বলেছে, যারা মিয়ানমার ছেড়ে যাচ্ছে তারা নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারলে ফিরতে পারবে না। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি বলেছেন, তাঁর সরকার নাগরিকদের রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় কুইন মারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল স্টেট ক্রাইম ইনিশিয়েটিভের (আইএসসিআই) পরিচালক অধ্যাপক পেনি গ্রিন বলেছেন, সু চি খুব ভালোভাবেই জানেন যে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়নি।
মিয়ানমার যে রোহিঙ্গাদের ওপর ‘প্রতিশোধ’ নিচ্ছে তা দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লিংয়ের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজটিই এখন করছে মিয়ানমার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৎকালীন আরাকানের (বর্তমানে রাখাইন রাজ্য) রাখাইন সম্প্রদায় নািস সমর্থক জাপানিদের পক্ষ নিলেও রোহিঙ্গারা ছিল মিত্র বাহিনীর পক্ষে। ২০১৫ সালের জুন মাসে যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধে বর্তমান বিশ্বে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে নিপীড়িত গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানে আরো বলা হয়েছিল, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো হামলার বিচার হয় না। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বসতি থেকে তাড়ানো হচ্ছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়নের পটভূমিতে ওই নিবন্ধে সে সময় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যার কথাও স্থান পেয়েছে। কুইন মারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল স্টেট ক্রাইম ইনিশিয়েটিভের গবেষকদের মতে, তখন ওই সহিংসতার আয়োজন করা হয়েছিল। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হামলার জন্য অন্যদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে ছুরি রাখতে বলা হয়েছিল। এ জন্য তাদের বিনা মূল্যে খাবার দেওয়া হয়েছে। মুসলমানবিরোধী আবহে রাখাইনে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও রাজনীতিকরা তাদের ধর্ম ও জাতি রক্ষায় মুসলমান রোহিঙ্গা জনসংখ্যার সম্প্রসারণ ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। নির্বাচনে পরাজয় এড়াতে তখন সরকার এটি করেছিল।
আইএসসিআইয়ের পরিচালক অধ্যাপক পেনি গ্রিন ২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলাকে ‘গণহত্যার প্রক্রিয়া’ হিসেবেই অভিহিত করেছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন দেশে গণহত্যার প্রক্রিয়া শুরু হয় কোনো জনগোষ্ঠীর ওপর কলঙ্কলেপন, হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি, বিচ্ছিন্নকরণ এবং ধারাবাহিকভাবে নাগরিক অধিকারগুলো থেকে এক এক করে বঞ্চিত করার মধ্য দিয়ে। সেই ধাপগুলো সম্পন্ন করার পরই গণহত্যার শেষ ধাপটি কার্যকর করা হয়।
২০১৫ সালেই পেনি গ্রিন বলেছেন, গণহত্যার পথের পাঁচটি ধাপের মধ্যে চারটি ধাপ মিয়ানমার বেশ আগেই সম্পন্ন করেছে। শেষ ধাপটি মিয়ানমারের পক্ষে করা অসম্ভব নয়। ২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যার কোনো বিচার হয়নি।
২০১২ সালের পর গত বছর অক্টোবর মাস থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নতুন করে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু হলে জাতিসংঘ একে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আশঙ্কা করেছিল। সে সময় অভিযোগগুলো তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ আন্তর্জাতিক তদন্ত দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেও মিয়ানমার সেই দলকে দেশটিতে ঢুকতে দেয়নি।

গত ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে বলে জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে। রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর তথ্যানুযায়ী, এ সংখ্যা তিন থেকে ১০ হাজার হতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও দেশটিতে রাখতে চায় না। তাই তাদের হত্যা, নির্যাতন ও বিতাড়নের পথ বেছে নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর ধারাবাহিকভাবে জাতিগত নির্মূল অভিযান চললেও তা মানতে নারাজ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য সরকার। তাদের মুখপাত্র ২০১৩ সালে বলেছেন, রোহিঙ্গারা তো জাতিগোষ্ঠীই নয়। তাহলে তা জাতিগত নির্মূল হয় কিভাবে?
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ তুলেছে বিশ্বের অনেক মানবাধিকার সংস্থা। ব্রাসেলসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ গত ৫ সেপ্টেম্বর ‘বুড্ডিজম অ্যান্ড স্টেট পাওয়ার ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মিয়ানমার সমাজে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের উত্থান, রাষ্ট্রীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ, মুসলমানবিরোধী বক্তব্যের কথা স্থান পেয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আল ইয়াকিন’ বা ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) মিয়ানমার সরকার ঘোষিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। গত আগস্ট মাসে আরসার হামলা রাখাইনে নতুন করে সংকট সৃষ্টি করেছে। একে ব্যবহার করে কট্টর বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা সারা দেশে তাদের এজেন্ডা প্রচার করছে। বর্তমান সংকট মুসলমানবিরোধী মনোভাবকে আরো উসকে দিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে আরো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আশঙ্কা আছে, যা দেশটির অগ্রযাত্রাকেও সংকটে ফেলতে পারে।
২০১১ সাল থেকে মিয়ানমার যখন রাজনৈতিক উদারীকরণের দিকে যাত্রা শুরু করে, তখনই সেখানে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী সংগঠন হলো ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রটেকশন অব রেস অ্যান্ড রিলিজিয়ন’, বার্মিজ ভাষায় যার সংক্ষিপ্ত নাম ‘মাবাথা’। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নিয়ে গড়া এ সংগঠনের মূল লক্ষ্য মিয়ানমারে তাদের জাতি ও ধর্ম রক্ষা করা। সরকার এ গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলেও কার্যত তেমন ফল আসেনি।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মতে, মিয়ানমার সরকার মাবাথার বৈশিষ্ট্য ও জনসমর্থন বুঝতে ভুল করেছে। ওই সংগঠনটি ইসলামবিরোধী বা রাজনৈতিক লক্ষ্য বেশি প্রচার না করে বৌদ্ধ ধর্ম রক্ষার বিষয়টিই গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মাবাথার অনেক ভিক্ষু চরম মুসলমানবিরোধী মনোভাব নিয়ে ধর্ম ও জাতি রক্ষার নামে সহিংসতায় উসকানি দিয়ে থাকে। এর ফলে আগামীতে মিয়ানমারে মুসলমানবিরোধী আরো সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে ক্ষোভের কারণ তারা তাদের বিদেশি হিসেবে গণ্য করে। আবার ধর্মীয় পরিচয়ে তারা মুসলমান। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বৌদ্ধ সমাজের জন্য হুমকি মনে করা হয়। মিয়ানমারের বৃহত্তর সমাজের জোরালো বিশ্বাস, রাখাইন রাজ্যের বৌদ্ধরা যদি তাদের দেশের পশ্চিম সীমান্ত রক্ষা না করত তাহলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘বেঙ্গলি’দের চাপে মিয়ানমার তথা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অনেক আগেই মুসলমান হয়ে যেত। এটি বিশ্বাসযোগ্য হোক আর নাই হোক, বাস্তবতা হলো—রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অধিকার না দেওয়ার পক্ষেই দেশটিতে গণদাবি আছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ছাড়া অন্য জনগোষ্ঠীর মুসলমানদের ব্যাপারেও দিন দিন এ ধারণা জন্মাচ্ছে। তাদেরও মিয়ানমারে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ কারণে ২০১৫ সালের নির্বাচনে মিয়ানমারে বড় রাজনৈতিক দলগুলো একজনও মুসলমান প্রার্থী দেয়নি। পুরো মিয়ানমারেই মুসলমান ভোটারদের বেশির ভাগ ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ওই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, মিয়ানমারে মুসলমানদের ওই সমাজের ক্যান্সার হিসেবে গণ্য করা হয়। মাবাথার ব্যাপক চাপে ২০১৫ সালের মে থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে মিয়ানমারে চারটি আইন প্রণয়ন করা হয়। সেগুলো মুসলমানদের বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের দিকে দৃষ্টি দিয়েই করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
আইন চারটির মধ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বৌদ্ধধর্মাবলম্বী নারীদের বিশেষ বিয়ে আইন দ্বারা বৌদ্ধ নয় এমন কোনো পুরুষকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে। ধর্মবিশ্বাস পরিবর্তন আইনে আগ্রহী ব্যক্তিদের ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হওয়া, ধর্ম পরিবর্তন ও নিবন্ধন বোর্ডের মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার প্রদানসহ বেশ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এ ছাড়া বহু বিয়ে আইন দ্বারা এ ধরনের চর্চা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের চলমান বর্বরতায় শঙ্কিত হয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গত সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে নজিরবিহীনভাবে একটি চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকরা তাঁকে রাখাইনে জাতিগত নিধন বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। মহাসচিব গুতেরেস উত্তর দিয়েছেন, ‘আমরা ঝুঁকিতে আছি। আমি আশা করি, এমন পরিস্থিতি হবে না। ’
কিন্তু এর পরও মিয়ানমার থেকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের যে বর্ণনা মিলছে তা অবিশ্বাস্য ও ভয়াবহ।

 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/09/11/541301