১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, রবিবার, ১০:১৭

রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাদের রয়েছে হাজার বছরের সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার

রোহিঙ্গাদের রক্ত ঝরার ইতিহাস-৭

‘রোহিঙ্গা’ শব্দ লিখে ইন্টারনেটে সার্চ দেয়া হলে উইকিপিডিয়াতে তাদের সম্পর্কে ইংরেজিতে যে লেখা ভেসে ওঠে তার মানে হলোÑ রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রহীন একটি জনগোষ্ঠী যারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আগত।
অফুরন্ত প্রাচুর্যে ভরপুর হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বাধীন ছিল যে জাতি দুর্ভাগ্যের বিষয় আজ তারা রাষ্ট্রহীন নাগরিক। আর জাতিসঙ্ঘের মতে বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর নাম ‘রোহিঙ্গা’। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। কারা সমৃদ্ধ এই রোহিঙ্গা জাতিকে রাষ্ট্রহীন আর সবচেয়ে হতভাগা জাতিতে পরিণত করল? এক কথায় এর উত্তর ১৯৬২ সাল থেকে চলমান মিয়ানমারের সামরিক সরকার।
বর্তমান মিয়ানমারে যে লিখিত ইতিহাস রক্ষিত রয়েছে, তাতেই দেখা যায় আরাকানে কমপক্ষে ১২শ বছর আগে মুসলমানদের রাষ্ট্রশক্তির গোড়াপত্তন হয়। তা ছাড়া মিয়ানমারের সংবিধানে বুনিয়াদি জাতির যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে, তাতেও রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের একটি বুনিয়াদি জাতি। সে মোতাবেক কোনোভাবেই বলা যায় না যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়। কিন্তু সব ঐতিহাসিক তথ্য-প্রমাণ চাপা দিয়ে আর বাস্তবতা উপেক্ষা করে দীর্ঘ দিন ধরে বলা হচ্ছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা বহিরাগত, বাংলাদেশের নাগরিক। মিয়ানমার সরকার রাষ্ট্রীয় আইন করে কেড়ে নিয়েছে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার।
অথচ রোহিঙ্গা একটি ভাষাভিত্তিক জাতির নাম। রোহিঙ্গা একটি ভাষার নাম। ১৯৬০ সালে রেঙ্গুন রেডিওতে রোহিঙ্গা ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে তখন রোহিঙ্গাদের বুনিয়াদি জাতি হিসেবে অভিহিত করা হয়। রাখাইন রাজ্য সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে যে বিবরণ রয়েছে, তাতেও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের একটি বুনিয়াদি (ইন্ডিজেনাস) জাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপর দিকে ১৯৪৭, ১৯৪৮, ১৯৫১, ১৯৫৬ এমনকি ১৯৯০ সালে সামরিক সরকারের নেতৃত্বে নির্বাচনেও রোহিঙ্গাদের থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন অনেকে। রোহিঙ্গা নেতারা বার্মার মন্ত্রিসভাসহ বিভিন্ন উঁচুপদও অলঙ্কৃত করেছেন মিয়ানমারের স্বাধীনতা লাভের পরেও।
মিয়ানমারের স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৪৭ সালে আরাকান থেকে এম এ গাফফার ও সুলতান আহমেদ তৎকালীন বার্মার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫১ সালে পাঁচজন রোহিঙ্গা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বার্মায়। তাদের মধ্যে জোহরা বেগমসহ আরো একজন নারী এমপির নাম জানা যায়। ১৯৫৬ সালে ছয় রোহিঙ্গা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সুলতান মাহমুদ তখন বার্মার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হন। ১৯৯০ সালে রোহিঙ্গাদের ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর হিউম্যান রাইটসের অধীনে চারজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারা হলেন : শামসুল আনোয়ারুল হক, চিদ লেউইন এব্রাহিম, ফজল আহমদ ও নূর আহমদ। কিন্তু সামরিক সরকার তখন রোহিঙ্গাদের এ দল নিষিদ্ধ করে এবং প্রায় সব নেতাকে জেলে নিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। ২০০৫ সালে শামসুল আনোয়ারুল হককে ৪৭ বছরের জেল দেয় সামরিক সরকার।
হাসান আলী ও মুসা আলী মামলা এবং বার্মা সুপ্রিম কোর্টের রায় : ১৯৫৮ সালে জেনারেল নে উইনের তত্ত্বাবধায়ক শাসনকালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। তখন ইমিগ্রেশন পুলিশ মংড়– মহকুমা থেতে অনেক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ দাবি করে তারা বার্মার নাগরিক নয়, কারণ তারা বর্মি নাগরিক মর্মে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাসান আলী ও মুসা আলী নামে দুই রোহিঙ্গা বার্মা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তাদের নাগরিকত্ব রক্ষার স্বার্থে। আদালত ১৯৫৯ সালে তাদের মুক্তির নির্দেশ দিলেও সরকার তাদের মুক্তি না দিয়ে পরে দাবি করে তারা বর্মি ভাষায় কথা বলতে পারে না সুতরাং তারা বার্মার নাগরিক নয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে ক্ষোভের সাথে তাদের নির্দেশ না মানার অভিযোগ আনেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ পর্যায়ে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন একজন নাগরিককে তার আবাসভূমি থেকে উচ্ছেদ করা মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়ার শামিল। রায়ে বিচারক আরো বলেন, ইউনিয়ন অব বার্মায় বহু ধর্ম-বর্ণ ও জাতির মানুষ বাস করে। বার্মা ইউনিয়নে বহু জাতি আছে, যারা বর্মি ভাষা জানে না। তাই বর্মি ভাষা জানা বার্মার নাগরিকত্বের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্ত নয়। রায়ে বলা হয় সংবিধানের ৪(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ওরা বার্মার নাগরিক যারা বার্মায় জন্ম নিয়েছে, বার্মায় লালিত-পালিত হয়েছে এবং যাদের পূর্ব-পুরুষ বার্মায় তাদের আবাস গড়ে তুলেছে। রায়ে আদালত গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ও মংড়– মহকুমা প্রশাসকের কার্যকলাপ বেআইনি উল্লেখ করে অবিলম্বে সব বন্দীকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
১৯৪৭ সালে ঐতিহাসিক প্যানলং সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় যে, বার্মা স্বাধীনতা অর্জনের আগে একটি সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে এবং সংবিধানে সব জাতির স্বতন্ত্র স্বকীয়তা রক্ষার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাধীন বার্মা ইউনিয়নের সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়, যার উপদেষ্টা ছিলেন উ চান টুন। ১৯৪৭ সালের ২ অক্টোবর সংবিধান প্রণয়ন কমিটির উপদেষ্টা উ চান টুন মুসলিম নেতাদের সংস্থার সভাপতির কাছে এক চিঠিতে লেখেন বার্মা ইউনিয়নের সংবিধান অনুসারে যেসব মুসলমান বার্মায় জন্মগ্রহণ করেছে, বার্মায় লালিত-পালিত হয়েছে, বার্মায় শিক্ষাগ্রহণ করেছে এবং যাদের পিতা-মাতা অথবা পিতা-মাতার যে কোনো একজন বার্মার নাগরিক তারা সবাই বার্মার নাগরিক।
মিয়ানমারের (বার্মা) সংবিধানে বুনিয়াদি জাতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “যেসব জনগোষ্ঠী একটি স্বকীয় জাতিগত বা গোষ্ঠীগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে ইউনিয়ন অব বার্মার অধীন কোনো অঞ্চলে ১৮২৩ সালের আগে থেকে ক্রমাগতভাবে বাস করে আসছে, ওইসব গোষ্ঠী বুনিয়াদি জাতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
সংবিধানে ১১(১) ধারা মতে যাদের পিতা-মাতা উভয়ই বার্মার যেকোনো বুনিয়াদি জাতির সদস্য; ১১(২) ধারা মতে যেকোনো ব্যক্তি বার্মা ইউনিয়নের অন্তর্গত যেকোনো অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন, যার দাদা-দাদী বা নানা-নানীর যেকোনো একজন বার্মার স্বীকৃত বুনিয়াদি জাতিগুলোর কোনো একটির সদস্য হলেন ১১(৩) ধারা মতে যেকোনো ব্যক্তি বার্মা ইউনিয়নের অন্তর্গত যেকোনো অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন, তাদের পিতা-মাতা উভয়ই বার্মায় জীবিত থাকলে অথবা পিতা-মাতা এই সংবিধান কার্যকর হওয়কালে জীবিত থাকলে, তাদের সবাই বার্মার নাগরিক।
কিন্তু মিয়ানমার সরকার ১৯৮২ সালে নাগরিকত্ব আইনের আওতায় শুধু ১৩৫টি বুনিয়াদি জাতি গোত্রের লোকদেরই বার্মার নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেয়। বার্মার স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি ওই তালিকায় রোহিঙ্গাদের রাখা হয়নি। সেনাসরকার ওই তালিকার সূত্র ধরে রোহিঙ্গাদের বারবার মিয়ানমার নাগরিক নয় মর্মে আখ্যায়িত করে আসছেÑ সব ঐতিহাসিক সত্যতা আর বাস্তবতা চাপা দিয়ে। তাদের দাবি ব্রিটিশ আমলে রোহিঙ্গা মুসলমানেরা ভারত ও বাংলাদেশ থেকে এখানে এসে বসতি গেড়েছে। প্রকৃত ইতিহাস গোপন করে তারা এ খণ্ডিত ইতিহাস সামনে রেখে অনবরত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। বাস্তবে ব্রিটিশ আমলে যেসব রোহিঙ্গা মুসলমান কক্সাবাজার, চট্টগ্রাম থেকে মিয়ানমারে গেছে তারা মিয়ানমারেরই আদি আধিবাসী ছিল এক সময়। বিভিন্ন সময়ে বর্মি রাজাদের অত্যাচারে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। তবে ব্রিটিশ আমলে ভারত থেকে অনেক হিন্দু মুসলমান বার্মা গেছে এটাও সত্য। কিন্তু মিয়ানমার সরকার শুধু এ খণ্ডিত ইতিহাসই সামনে রাখছে আরাকানে রেহিঙ্গাদের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য গোপন করে।
বর্মি রাজা ভোদাপায়ার শাসনামলসহ বিভিন্ন সময়ে আরাকানিদের বিদ্রোহ এবং বিদ্রোহ দমনের নামে বর্মি রাজাদের হত্যা নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে এখনকার মতো লাখ লাখ আরাকানি কক্সবাজার, চট্টগ্রামে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ব্রিটিশ আমলে এদের অনেকে আবার আরাকানে ফিরে গেছে। আরাকানে পতিত জমি চাষের জন্য পতিত জমি অধ্যাদেশ আইন ১৮৩৯, ১৮৪১ এবং পেগু পতিত জমি অধ্যাদেশ আইন ১৮৬৫ জারি করে ব্রিটিশ সরকার। এ আইনের আওতায় ব্রিটিশ সরকার চট্টগ্রাম থেকে অনেক আরাকানিকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় বার্মায় পতিত জমি চাষের জন্য। এসব মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে বনের হিংস্র জানোয়ার ও প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে গভীর জঙ্গলকে চাষ ও বাসযোগ্য করে। এমনকি অনেকে মারা যায় এ সময়। এভাবে পতিত জমি চাষ আইনে যারা আরাকানে ফেরত গেছে বা নতুন করে গেছে তাদের সবাইকে আরাকানের বৌদ্ধরা বহিরাগত বলে অভিহিত করতে থাকে তখন থেকেই। এ ছাড়া ব্রিটিশ শাসনামলে নতুন রাজধানী রেঙ্গুনে স্থানান্তর করা হলে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং তখন অনেক ভারতীয় সেখানে যায়। ব্রিটিশ আমলের শেষ দিকে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে রেঙ্গুনে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন জোরদার হয়। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পরে রোহিঙ্গাদেরও বিরুদ্ধে বহিরাগত প্রচারণা তীব্র আকার ধারণ করে। কালের পরিক্রমায় এ প্রচারণাকে মিয়ানমার সেনাসরকার কঠোরভাবে আমলে নিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযানে নামে। তারা চিরতরে মুছে ফেলতে চাচ্ছে রোহিঙ্গা জাতি সত্তার সমস্ত ইতিহাস আর অমোচনীয় সভ্যতার নিদর্শন।
রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা জাতি : উইকিপিডিয়াতে রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রহীন নাগরিক সংজ্ঞায়িত করে বলা হয়েছে এদের ১৩ লাখ বর্তমানে মিয়ানমারে বাস করে আর ১৫ লাখ বিভিন্ন দেশে উদ্বাস্তু হিসেবে রয়েছে। কিছু হিন্দু বাদে রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই মুসলমান।
উইকিপিডিয়াতে মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) রাজ্য সম্পর্কে যে তথ্য রয়েছে, তাতে বলা হয়েছে রাখাইনের জনসংখ্যা ৩১ লাখ। এর ৬৩ ভাগ রোহিঙ্গা।
বর্তমানে বাংলাদেশেই শুধু আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানে দুই লাখ, থাইল্যান্ডে এক লাখ, মালয়েশিয়ায় ৪০ হাজার, ভারতে ৪০ হাজার, যুক্তরাষ্ট্রে ১২ হাজার ও ইন্দোনেশিয়ায় ১১ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে।
গত দুই সপ্তাহে তিন লাখের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণে বাঁচাতে। জাতিসঙ্ঘের তথ্য মতে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা হত্যা করা হয়েছে দুই সপ্তাহের অভিযানে। বাস্তবে এ সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি বলে বর্ণনা করেছে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। একটি গ্রামে পরিচালিত গণহত্যা থেকে একটি মাত্র বালক প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। অন্য সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকারই স্বীকার করেছ গত কয়েকদিনে তারা ছয় হাজারের বেশি রোহিঙ্গার ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী এভাবে হাজার বছরের একটি সমৃদ্ধ গৌরবময় জাতিকে রাষ্ট্রহীন নিপীড়িত জাতিতে পরিণত করার পর এবার সম্পূর্ণরূপে মিয়ানমারের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার দুরভিসন্ধি নিয়ে অভিযানে নেমেছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/250539