৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার, ১০:১০

চামড়া শিল্পে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমে যাওয়া, লবণের দাম বৃদ্ধি এবং হাজারীবাগের অনেক ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চামড়ার বাজারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার এ বছর ছাগলের চামড়ার জন্য প্রতি বর্গফুট দাম নির্ধারণ করে দেয় ২০ টাকা। সেই হিসেবে প্রতিটি চামড়ার জন্য ১০০ থেকে ১২০ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা পুরো চামড়ার জন্য ৩০ থেকে ৫০ টাকার বেশি দিতে চান না। ফলে কোরবানির ঈদের দিন ঘুরে ঘুরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে আশানুরূপ দাম না পেয়ে মৌসুমী চামড়া বিক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন।

আজ রবিবার রাজধানীর হাজারীবাগে গিয়ে দেখা যায়, ছাগলের চামড়া ফুট হিসেবে বিক্রি না করে আকার ভেদে ৩০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গরুর চামড়া সরকার নির্ধারিত দামে প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মৌসুমী বিক্রেতারা বলছেন, যারা কোরবানি দেন তারা গরুর চামড়া নিজেরা বিক্রি করে দিলেও অনেকে ছাগলের চামড়া মাদ্রাসা এতিমখানায় দান করে দেন। এর বাইরে মাদ্রাসা এতিমখানার লোকজন নিজেরাও চামড়া সংগ্রহ করে। সংগ্রহ করা চামড়ার সঙ্গে দানের চাড়মা মিলিয়ে বিক্রি করছেন বলে শেষ পর্যন্ত হয়ত লোকসান হবে না, কিন্তু তেমন কোনো লাভও থাকবে না। তবে আবহাওয়া ভালো থাকায় গতবারের তুলনায় এবার দেশে কোরবানির পশুর চামড়ার মান ভালো বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ জানান, হাজারিবাগের ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় থাকায় এবার চামড়া কেনার চাহিদা কমে গেছে। তিনি জানান, ছোট ট্যানারিগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছাগল বা ভেড়ার চামড়া ও গরুর মাথার চামড়া প্রক্রিয়া করার ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে হাজারিবাগে। এ কারণে এ চামড়ার চাহিদা নেই এবার।

চামড়া ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, হাজারীবাগে ছোট বড় প্রায় ৪০০ ট্যানারি ছিল। এর মধ্যে সাভারে চালু হয়েছে মাত্র অর্ধশতাধিক ট্যানারি। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে মাত্র চার-পাঁচটি ট্যানারি রয়েছে, যারা গরুর মাথার চামড়া ও ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। তাছাড়া অনেক ট্যানারির কাছে গত বছরের চামড়াও জমা রয়েছে। আর আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়ার দাম কম। এ ছাড়া কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে লবণ দরকার হয়। এবার লবণের দামও বেশি। এসব কারণে এবার চামড়া ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে।

http://www.kalerkantho.com/online/national/2017/09/03/538955