৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, রবিবার, ১০:২১

জলাবদ্ধতার পর রক্তাবদ্ধতা, রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ

ঈদের দিন বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে কোরবানির পশুর রক্ত মিশে সড়কগুলোকে রক্তনদীর মতো দেখায়। এই 'রক্তাবদ্ধতা' রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ আরো বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

ঈদুল আজহার দিন ঢাকার বকশিবাজার, হোসেনি দালাল, যাত্রাবাড়ি, শান্তিনগর, শান্তিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, মালিবাগ, সিদ্ধেশ্বরী, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ অনেক এলাকার রাস্তা ডুবে যায় বৃষ্টির পানিতে। কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও কোমর সমান পানি। এই পানি কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। তারপরও পানিতেই চলছে যান্ত্রিক যানবাহন, রিকশা। উপায় না থাকায় কেউ কেউ রক্তমাখা পানিতে হাঁটতে বাধ্য হন।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের (দক্ষিণ) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিল্লাতুল ইসলাম জানান, "শান্তিনগর ও এর আশপাশের এলাকায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কারণ মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে ওই এলাকার ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থা বলতে গেলে অকার্যকর। তাই ওই দিন পানি সরতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
জমে থাকা পানি ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায়। "

ঢাকার বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে রয়েছে। তবে নগরবাসী যদি নিয়ম মেনে নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দিত, তাহলে এই রক্তাক্ত পরিস্থিতি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হতো বলে মনে করেন মিল্লাতুল ইসলাম। তার কথায়, "এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে ৫০৪টি জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হয় পশু কোরবানির জন্য। কিন্তু এর অর্ধেকই খালি। অনেকেই বাসার সামনে অথবা বাড়ির ভেতরে খোলা জায়গায় কোরবানি দেন। ফলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে গরুর রক্ত ও বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, পানি জমে থাকায় উলটে ড্রেনের বর্জ্য উপরে উঠে আসে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মোট ২৫০০ কিলোমিটার খোলা ড্রেন এবং চার হাজার কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা করে আসছে। গত চার বছরে ৩০৩ কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হয়েছে ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নতি সাধনে। কিন্তু তার ফল শূন্যই বলা চলে। বৃষ্টিপাত থেকে যে পানি জমা হয়, তা 'রানঅফ ওয়াটার' বলে পরিচিত। রাজধানীর এই পানি 'স্টর্ম' ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশিত হওয়ার কথা। গতবছর থেকে ঢাকা ওয়াসা 'স্টর্ম ওয়াটার ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান' বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু তা কবে শেষ হবে নিশ্চিত নয়।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে

http://www.kalerkantho.com/online/national/2017/09/02/538804