ফকিরা বাজারের কুলছুমা ৭ দিনের শিশু নিয়ে পালিয়ে এসেছেন
৩১ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৮:০৬

স্বামীর লাশ রেখে ৭ দিনের শিশু নিয়ে সীমান্তে রোহিঙ্গা নারী

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম জলপাইতলী সীমান্ত পয়েন্টের শূন্য রেখায় পলিথিনের তাঁবু টাঙ্গিয়ে আতঙ্কে ণ গুনছেন সেখানে অবস্থান করা অসংখ্য রোহিঙ্গা। সবার চোখে-মুখে আরাকানে চলমান অরাজকতার আতঙ্ক। তবে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মোহছেনা বেগমের (২০) অন্য অভিব্যক্তি। সপ্তাহখানেক আগে জন্ম নেয়া মেয়েকে বাঁচানো যাবে কি না এ নিয়েই বিচলিত সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের মংডুর ঢেঁকিবনিয়ার রুহুল আমিনের স্ত্রী মোহছেনা।

তিনি বলেন, আলোতে যেন অন্ধকার, মাত্র এক সপ্তাহ আগেই পৃথিবীর আলো দেখেছে তার মেয়েটি। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে আকস্মিক গোলাগুলি ও দূরের কিছু গ্রামের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার তথ্য আসে। এতেই চোখে ভাসে গত বছরের অক্টোবরের সেই নির্যাতনের চিত্র। তাই অসুস্থ শরীরে শিশুসন্তান কোলে অন্যদের সাথে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে এসেছেন। মোহছেনা বলেন, অমানবিক এক পরিস্থিতি পার করছি। পেছনে গুলি ও আগুনের লেলিহান শিখা, সামনে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সীমান্তরী বাহিনীর প্রতিরোধ। অসহায় অবস্থায় খোলা আকাশেই পলিথিন টাঙ্গিয়ে বসে অভুক্ত রাত-দিন পার করছি। নিজে মরি-বাঁচি এতে কোনো অসুবিধা নেই। এখন বড় দুচিন্তা শিশুটিকে বাঁচাতে পারব তো? শুধু মোহছেনা নন, একই পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ রশিদ আহমদও।

তিনি জানান, আরাকান রাজ্যের ঢেঁকিবনিয়া গ্রামে ৪ ছেলে ও ৬ মেয়ে নিয়ে তাদের পরিবার ছিল। শুক্রবার দুই ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। তিনি নিশ্চিত ধরে নিয়ে যাওয়া ছেলেরা আর জীবিত ফিরবে না। তাই বাকিদের নিয়ে প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশের সীমানায় পালিয়ে এসেছেন তারা। মোহছেনা ও রশিদ আহমদের মতো কয়েক হাজার নারী-পুরুষ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলার অজুহাতে নিরাপত্তা বাহিনী নিপীড়ন চালাচ্ছে। সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/248551