বন্যাদুর্গত এলাকায় ঈদের আমেজ নেই। সহায়-সম্বল হারিয়ে দুর্গত মানুষরা এখন বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন। কারও বাড়ি নেই। কারও জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। আবার কারও সবকিছুই নিয়ে গেছে বন্যার পানি। এ অবস্থায় ঈদুল আযহার আমেজ নেই বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অনেক গ্রামে কোনো পশু কোরবানিই হচ্ছে না। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত চরে। ঈদ সামনে রেখে এসব এলাকায় বিশেষ ত্রাণ কার্যক্রম চালাবে সরকার। ঈদের পর এসব এলাকায় সৌদি আরব থেকে পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণ করা হবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে। সরকার মনে করছে, নতুন করে বৃষ্টি না হলে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে। তখন পুরোদমে পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল মানবজমিনকে বলেন, বিশেষ ধরনের ত্রাণ আমরা প্রতিদিনই দিচ্ছি। তবে ঈদের আগে ও পরে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী দেয়া হবে। এছাড়া পুনর্বাসন কার্যক্রম জোর কদমে চালানো হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হবে। এছাড়া সৌদি আরব থেকে কুরবানির দুম্বার মাংস পাওয়ার পর পরই তা বন্যা আক্রান্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এর বাইরে ঘড়বাড়ি স্থাপনের জন্য টিন বরাদ্দ করা হবে। তবে সবকিছুই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিলি-বণ্টন করা হবে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টার থেকে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ৩১ টি নদীর পানি বেড়েছে। তবে ৫৫ টি নদীর পানি কমেছে। এখনও বিপদ সীমার উপরে রয়েছে ১৮ টি নদীর পানি। ওই প্রতিবেদনে ১৫ টি জেলার বন্যা পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলা হয়েছে, এসব জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদেরগঞ্জ উপজেলার তিন হাজার আটশ’ ৮৫ টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। এ জেলায় নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে আট হাজার ৫২৯ টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এছাড়া অন্য জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি খুব একটা খারাপ অবস্থায় নেই। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, এ পর্যন্ত বন্যায় ৫৬৮ টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আট হাজার ৪৩৭ টি পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে প্রায় ২৭ হাজার টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রায় দশ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব শাহ কামাল বলেন, ত্রাণসামগ্রী ও জিনিসপত্র বরাদ্দে কোনো ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুযায়ী আমরা ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ দিচ্ছি। আশা করছি কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।