২৭ আগস্ট ২০১৭, রবিবার, ১০:৩৮

প্রধান বিচারপতিকে অপসারণ করা যাবে না সুপ্রিম কোর্টের রায় বহাল থাকবে

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ যেভাবে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে পরিবেশ উত্তপ্ত করেছে তার শেষ কোথায় সেটা এখন সচেতন মানুষের মাথা ব্যথার কারণ হয়েছে। বিষয়টি যে ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে সেটি বোঝা যায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের অতি সাম্প্রতিক ছোটাছুটি দেখে। সরকারের তরফ থেকে সিনিয়র নেতারা একের পর এক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাথে বৈঠক করছেন। এই বৈঠকটি শুরু করেন আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি চিফ জাস্টিসের সাথে দেখা করার আগে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। সেখান থেকে তিনি চিফ জাস্টিসের সাথে দেখা করেন। চিফ জাস্টিসের সাথে বৈঠক করার পর তিনি বৈঠকের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এর পর ষোড়শ সংশোধনী রায় বাতিল ইস্যু নিয়ে সিনিয়র নেতারা বঙ্গ ভবনে প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের সাথে বৈঠক করেন। যারা বৈঠক করেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাদের এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল জল্পনা কল্পনা সৃষ্টি হয়। এই মর্মে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণের বিভিন্ন সম্ভাব্য ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে ঐ বৈঠকে আলোচনা হয়। এই বৈঠকের রেশ কাটতে না কাটতে প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী প্রধান বিচারপতির সাথে তার অফিসে ১ ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকের ফলাফল জানা যায়নি। তবে বৈঠকের ফলাফল যে ইতিবাচক হয়নি সেটি ড. গওহর রিজভীর বরাত দিয়ে প্রকাশিত নিউজ পোর্টালের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়। গওহর রিজভীর সাথে প্রধান বিচারপতির বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর গত বুধবার ২৩শে অগাস্ট আওয়ামী লীগের দুইজন সিনিয়র নেতা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করেন। তারা প্রধান বিচারপতির সাথে কি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সেটি জানা যায়নি। তবে তারা যে প্রেসিডেন্টের সাথে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল মামলার রায় নিয়ে কথা বলেছেন সে ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তোফায়েল আহমেদ এবং আমির হোসেন আমু তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করতে অস্বীকার করেন। তবে ২৪ অগাস্ট বৃহস্পতিবার একটি অন লাইন নিউজ পোর্টালে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। ঐ পত্রিকাটি সরকারের ধামা ধরা বলে খবরটি বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে। ঐ খবর মোতাবেক প্রধান বিচারপতি নাকি বলেছেন যে তিনি যদি পদত্যাগ করেন তাহলে নাকি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে সরকার। কারণ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল মামলার রায় নিয়ে বিশ্বব্যাপী এখন আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেই সময় যদি তিনি পদত্যাগ করেন তাহলে সারা দুনিয়াতে এই বার্তাটি ছড়িয়ে পড়বে যে তিনি চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

প্রকাশিত রিপোর্ট মোতাবেক প্রধান বিচারপতি তার রায় এবং পর্যবেক্ষণসমূহকে দৃঢ়ভাবে ডিফেন্ড করেন। তিনি বলেন যে, তিনি তার পর্যবেক্ষণে কোথাও বঙ্গ বন্ধুকে কটাক্ষ করেননি। সমগ্র রিপোর্টটি পড়লে দেখা যাবে যে তিনি বরং বঙ্গ বন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাই জ্ঞাপন করেছেন। ঐ দিকে গত ২৫ শে অগাস্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট অন্তত এক মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। সুপ্রিম কোর্ট যখন আবার খুলবে তখন দেখা যাবে যে চিফ জাস্টিস হিসাবে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার আয়ু আছে আর মাত্র ৪ মাস। এই ৪ মাসের জন্য সংবিধান বহির্ভূতভাবে জোর করে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণ করলে এই সরকারের দারুণ বদনাম হবে। কারণ, ইতোমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট তথা প্রধান বিচারপতি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে যে বাকযুদ্ধ চলছে, বিশেষ করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু হয়েছে, সেটির প্রতিক্রিয়া দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের এখন হাজার হাজার মানুষের আত্মীয়স্বজন বিদেশে আছেন। সারা পৃথিবীতেই তারা ছড়িয়ে পড়েছেন। টেকনিক্যাল ভাষা ধার করে বলতে হয়, সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বাংলাদেশী ডায়াসপোরা (Diaspora)। পৃথিবীর সব মহাদেশ থেকেই বাংলাদেশীরা স্বদেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজনকে টেলিফোন করে অথবা ফেসবুকে জানতে চাচ্ছেন, চিফ জাস্টিসকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কি করতে চায়? তারা কি তাকে বরখাস্ত করবে? আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের পত্রপত্রিকাতেও বিষয়টি হাইলাইট করা হচ্ছে। এমন একটি পটভূমিকায় যদি চিফ জাস্টিসকে অপসারণ করা হয় তাহলে পশ্চিমা দুনিয়াতো বটেই, এমনকি প্রতিবেশী ভারতের মিডিয়াতেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। কারণ, ইতোমধ্যেই ভারতের একাধিক পত্রপত্রিকা এবং দুই তিনটি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে সরকার ও উচ্চ আদালতের বিরোধকে ফোকাস করা হচ্ছে।

আমার ব্যক্তিগত মতে, চিফ জাস্টিসকে অপসারণ করা হবে না আরো একটি বিশেষ কারণে। সেটি হলো, চিফ জাস্টিসকে অপসারণের সাংবিধানিক কোনো পথ নেই। আমি এর আগেও বলেছি যে, একমাত্র ৯৭ অনুচ্ছেদ নিয়ে শাসক দল এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। কিন্তু সেটিও সংবিধান শুদ্ধ হবে না। একমাত্র পথ হলো সংবিধানের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া। সেটি করলে দেশে এবং বিদেশে প্রতিবাদের যে ঝড় উঠবে সেই ঝড় সামাল দেয়া সরকারের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আমার তাই মনে হচ্ছে যে, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নরমে গরমে সময়টি কেটে যাবে।

॥দুই॥
এমন একটি পরিস্থিতিতে সরকারের সামনে, আমার মতে, দুইটি পথ খোলা আছে। একটি হলো এভাবেই সময়টি কাটিয়ে দেওয়া এবং পরবর্তী প্রধান বিচারপতির আগমন পর্যন্ত অপেক্ষা করা। আর একটি হলো, এসকে সিনহার আমলেই রিভিউ পিটিশন করা এবং কিছু কিছু পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করানো। এটি করতে হলে সরকারকে ক্যারট এ্যান্ড স্টিক (Carrot and stick) পলিসি গ্রহণ করতে হবে। মনে হচ্ছে, সরকার এই পলিসি এখন গ্রহণ করেছে। তাই আমির হোসেন আমুরা সকালে চিফ জাস্টিসের বিরুদ্ধে গরম গরম বক্তৃতা করছেন, আবার সন্ধ্যায় তার বাসভবনে গিয়ে দেখা করছেন। এছাড়াও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী চিফ জাস্টিসের সাথে এই বিরোধ নিয়ে এক দফা নেগোশিয়েট করেছেন। বরফ কতদূর গলেছে সেটি এখনো জানা যায়নি। তবে মনে হচ্ছে, কোনো পার্টিই এখন রুবিকন ক্রস (Cross the Rubicon) করবে না। অর্থাৎ কোনো পক্ষই ডেঞ্জার লাইন ক্রস করবে না।

একদিকে পরিবেশ উত্তপ্ত রাখা, অন্যদিকে পর্দার অন্তরালে কথা চালাচালি করার কাজটি শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে সরকারপন্থী একটি নিউজ পোর্টালে একটি খবর বেরিয়েছে। ঐ খবরে বলা হয়েছে যে, সরকার এসকে সিনহার বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রধান বিচারপতির আয়-ব্যায়ের প্রকৃত তথ্য জানার উদ্দেশ্যে তদন্ত করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নাকি গোপন নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত একজন জামায়াত নেতার পরিবারের সাথে এসকে সিনহা গোপন বৈঠক করেছিলেন কিনা সেটিও নাকি তদন্ত করা হচ্ছে। একজন মামলাকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ পরিবর্তন করেছেন কিনা সেটিও নাকি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকলেই জানেন যে এই সব তদন্ত করে কোনো লাভ হবে না। তারপরেও এগুলো করা হচ্ছে প্রধান বিচারপতির ওপর প্রচন্ড মনস্তাত্বিক চাপ সৃষ্টি করা, যাতে করে তিনি রিভিউ মামলায় সরকার পক্ষের দাবি মোতাবেক কতিপয় পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করে নেন।
॥তিন॥
প্রথম কয়েকদিন রাজপথ এবং মাঠঘাট গরম করলেও আওয়ামী লীগ এখন নাকি বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছে যে কোনো অবস্থাতেই রায় পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হয়েছে। সেটি বাতিলই থাকবে। সেটি আর কোনো অবস্থাতেই ফিরে আসবে না। আওয়ামী লীগ প্রথমে যে দাবি তুলেছিল সেটি মাটিতে থুথু পেলে সেই থুথু চেটে খাওয়ার আবদার। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এরকম নজীর পাওয়া যায় না, এখানেও পাওয়া যাবে না। সেই আবদারের ধরনটিও আবার বিচিত্র। সুপ্রিম কোর্টকে নাকি এটি করতে হবে স্যুয়োমটো, অর্থাৎ স্বপ্রণোদিত হয়ে। যেন মামা বাড়ির আবদার।

আমার তো মনে হয়, আওয়ামী লীগ দম্ভ এবং গরম মাথা নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা শুরু করেছিল। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাসহ আপিল বিভাগের যে ৭ জন বিচারপতি সর্বসম্মত রায় দিয়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেছেন তাদের সকলকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে, বিশেষ করে তারা আপিল বিভাগে প্রমোশন পেয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েইে। সেই সুপ্রিম কোর্টের সাথে সরকারের লাগলো কেন? এই পয়েন্টটি আওয়ামী লীগ খুঁজে পায়নি অথবা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টাও করেনি। সেই পয়েন্টটি হলো, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা এবং ক্ষমতার পৃথকীকরণ। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট করা আছে। ঐ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,“রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।” কিন্তু ৯৬ অনুচ্ছেদের দুই উপ অনুচ্ছেদে যা বলা হয়েছ তার ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে গেছে। ঐ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,“প্রমাণিত অসদাচরণে বা অসামর্থ্যরে কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোন বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না”। অর্থাৎ ২২ অনুচ্ছেদে উচ্চ আদালতকে এক হাত দিয়ে যে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে ৯৬ অনুচ্ছেদে অন্য হাত দিয়ে সেই স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে।

১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে গৃহীত ৪র্থ সংশোধনীতে ঐ ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাত থেকে প্রেসিডেন্টের হাতে নেয়া হয়েছে। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সংবিধানের ৫ম সংশোধনী মোতাবেক উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাত থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে দেয়া হয়। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজের হাত থেকে ঐ ক্ষমতা ছেড়ে দেন। কিন্তু তার পরেও অধস্তন আদালতগুলোর নিয়ন্ত্রণ ভার নির্বাহী বিভাগ অর্থাৎ সরকারের হাতে থেকে যায়।
এই অবস্থায় দুইটি বিভাগের পৃথকীকরণের দাবিতে মাসদার হোসেন নামক একজন জুডিশিয়াল কর্মকর্তা একটি মামলা করেন। এই মামলায় তার সহযোগী ছিলেন আরো ৪ শতাধিক অফিসার। ১৯৯৯ সালের মে মাসে এই মামলার রায়ে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে পৃথক করার জন্য হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় এবং ৮ সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশনা কার্যকর করার জন্য বলে। ২০০০ সালের নভেম্বরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের এই রায় বহাল রাখে। ২০১১ সালে একটি রিভিউ পিটিশন মামলায় আপিল বিভাগ এটি কার্যকর করার জন্য ১২ দফা নির্দেশনা দেয়।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ১৮ বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে বর্তমান সরকার ’৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ আবার ফিরে আনে এবং বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে অর্পণ করেন। এটিকে বলা হয় ষোড়শ সংশোধনী।

২০১৭ সালের ২রা জুলাই প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপলি বিভাগের ৭ জন বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেন। ফলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়।
ওপরের এই সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি থেকে দেখা যায় এবং বোঝা যায় যে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কোনো বিচার বিভাগীয় পদক্ষেপ নয়। এটি আসলে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করা এবং নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার পদক্ষেপ। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আওয়ামী লীগ এটিকে অযথা তাদের ঘাড়ে টেনে নিয়েছে এবং বিচার বিভাগের সাথে বিরোধে লিপ্ত হয়েছে। এটি নীতির ব্যাপার। তাই মূল রায় কোনো সময় পরিবর্তিত হবে না। এখন যদি বর্তমান সংসদ ব্রুট মেজরিটির জোরে ষোড়শ সংশোধনীর আদলে আর একটি আইন পাস করে তাহলে সেটি হবে সমগ্র বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য একটি দুর্ভাগ্যের ঘটনা। জনগণ আশা করেন যে আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগের রায় মেনে নেবেন এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবেন।

http://www.dailysangram.com/post/297677