২৬ আগস্ট ২০১৭, শনিবার, ৯:৪৯

মহাসড়কে তীব্র যানজট

গাড়ির চাপ বৃদ্ধি চাঁদাবাজি ও পশুর হাট * যাত্রী, ব্যবসায়ী ও পরিবহণ শ্রমিকদের চরম দুর্ভোগ * মারা গেছে ৫টি গরু

যাত্রী ও কোরবানির পশুবাহী গাড়ির চাপ বৃদ্ধিসহ নানা কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়েন হাজার হাজার যাত্রী, ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিক। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪৫ কিমি., ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৩০ কিমি. ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট দেখা যায়।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের সংযোগস্থলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই দুই মহাসড়কের উভয় দিকে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর পর্যন্ত চার দিন ধরেই যানজটের কবলে পড়ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কোনাবাড়ী-চন্দ্রা এলাকায় যানজট দেখা গেছে। যানজটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ১ ঘণ্টার স্থলে সময় লাগছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। যানজটে আটকা পড়ে প্রচণ্ড রোদে ও খাবার-পানি সংকটে ৫টি গরু মারা গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, অতিরিক্ত যাত্রী ও পশুবাহী গাড়ির চাপ, গাড়ি থামিয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি, কোরবানির পশুর হাট, বিভিন্ন সড়কের সংস্কার কাজ ও নিয়ম ভঙ্গ করে যান চলাচলকে কেন্দ্র করে এ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের উভয় দিকে প্রায় ৩০ কিমি. যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মহাসড়কের রূপগঞ্জ ভুলতা-গাউসিয়া পয়েন্ট থেকে এশিয়ান হাইওয়ের কাঞ্চন সেতু ও অপরদিকে সোনারগাঁয়ের মদনপুর এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা যায়। এলাকাবাসী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, নির্মাণাধীন ভুলতা ফ্লাইওভার, এশিয়ান বাইপাস সড়কের সংযোগস্থল ও বাইপাসের অপ্রশস্ততা ও দেশের বৃহত্তম পাইকারি কাপড়ের হাট গাউছিয়া মার্কেটের অবস্থান থাকায় এ অঞ্চলে যানজট সমস্যা দীর্ঘদিনের। ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রী ও পশুবাহী যানবাহনের চাপ, পশুর হাট, পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল ও নিয়ম ভঙ্গ করে যান চলাচলের কারণে শুক্রবার যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহার চাঁদ দেখার পর থেকে পশুবাহী যানবাহন দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটে যাচ্ছে। এছাড়া গাউছিয়া অঞ্চলের ভুলতার পশুর হাট ও স্থায়ী হাট হিসেবে পরিচিত গোলাকান্দাইল হাটে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পশুবাহী যানবাহনগুলোর কারণেও যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। যানবাহনে আটকা পড়ে বাদল বেপারি নামে এক গরু ব্যবসায়ীর একটি গরু মরে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পরিবহন চালক, যাত্রী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ক্রস করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আবার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। দুটি সড়কেই যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তাই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কটির প্রশস্ততা কম। এতে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে কোনো প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

গাউছিয়া মার্কেটকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ মার্কেটে পাইকারি ও খুচরাসহ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার দোকান রয়েছে। মালামাল আনা-নেয়ার জন্য এখানে প্রতিদিন কয়েকশ’ গাড়ি জমা হয়। গাউছিয়া মার্কেটের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই চালকদের গাড়ি রাস্তায় রাখতে হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের।

অভিযোগ রয়েছে, কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ সদস্যরা এবং তাদের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে। এ চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে থেমে থাকে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।

ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মাহবুব বলেন, চাঁদা আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয়। ভুলতা ফ্লাইওভার ও রাস্তার নির্মাণ কাজ এবং ঈদ যাতায়াতে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ সমস্যা দীঘস্থায়ী হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কুমিল্লা, দাউদকান্দি ও সোনারগাঁ : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর পর্যন্ত ৪ দিন ধরেই যানজটের কবলে পড়ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। এ মহাসড়কের ওই অংশে প্রতিদিনই কমবেশি ৪৫ কিমি. এলাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। তারা জানান, দাউদকান্দি ব্রিজ পার হতেই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগছে। দাউদকান্দি টোল প্লাজায় পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের ওজন স্কেলে সময়ক্ষেপণ এবং টোল আদায়ে বিলম্বের কারণে এ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে যানবাহন চালক ও যাত্রীরা জানান। অভিযোগ রয়েছে, টোল প্লাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেসব পরিবহন ওজনের আওতায় আসে না, সেগুলোকেও অযথা সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখেন। ফলে এক লেনের সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, মঙ্গলবার থেকে এ মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। শুক্রবারও এটি অব্যাহত ছিল। এতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগের পাশাপাশি চরম বিপাকে পড়েন কোরবানির পশু ব্যবসায়ীরা। গরু ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ট্রাকবোঝাই গরু ও ছাগল নিয়ে সময়মতো হাটে যেতে না পারলে ব্যবসায় চরম লোকসান গুনতে হবে।

গরু ব্যবসায়ী মো. শামিম মিয়া বলেন, যানজটে একই স্থানে প্রচণ্ড রৌদ্রে গরু নিয়ে ৩ ঘণ্টা বসে পশুদের খাবার ও পানি নিয়ে চরম সংকটে আছি। এভাবে চলতে থাকলে গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাসযাত্রী নাজনিন বলেন, কতক্ষণ গাড়িতে বসে থাকা যায়? ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে আটকা পড়ে আছি। বিশেষ করে মহিলাদের ওয়াসরুমে যাওয়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এদিকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া যাত্রীদের আরও বেশি দুর্দশায় পড়তে হয়।

দুপুরে সরেজমিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যানজটের এক ভয়াবহ দৃশ্য। প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে বিভিন্ন যানবাহনের ভেতরে থাকা হাজার হাজার যাত্রীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। কোরবানির পশু বহন করা ট্রাকের চালক আবু মিয়া এ সময় অভিযোগ করেন, যানজটে আটকা পড়ে তার গাড়িতে থাকা ২০টি গরুর মধ্যে ৩টি গরু প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে মারা গেছে। এছাড়াও মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অপর একটি ট্রাকে থাকা হিট স্ট্রোকে আরও ২টি গরু মারা গেছে।

চট্টগ্রামগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী রফিক মিয়া জানান, তাদের বাসটি গতকাল যানজটের কারণে সিমরাইল মোড় থেকে মেঘনা সেতু এলাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় ৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। গাড়ি চলাচল করেছে কচ্ছপ গতিতে। তার মতো একই অবস্থার শিকার হয়েছেন অনেক পরিবহন যাত্রী।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার দায়িত্বে থাকা ট্রুফিক ইন্সúেক্টর (টিআই) তৈয়বুর রহমান জানান, যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। ঈদ সামনে রেখে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, টোল প্লাজায় ওজন মাপার স্কেলে ভারি যানবাহন থেকে টোল এবং জরিমানা আদায়ের নামে সিএনএস কোম্পানির লোকজন যানজট সৃষ্টি করছেন।

গাজীপুর ও কালিয়াকৈর : শুক্রবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কোনাবাড়ি-চন্দ্রা এলাকায় যানবাহনের গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও বিকালে তার চিত্র উল্টো দেখা যায়। বিকালে ওই পথের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের কবলে পড়ে শত শত যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

স্থানীয়রা জানান, সকালে গাজীপুর জেলা শহর থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ি চলাচল অনেকটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু দুপুর আড়াইটার দিকে চন্দ্রার পর থেকেই যানজট শুরু হয়। চন্দ্রা থেকে জেলা শহরে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার পথ যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগেছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর চন্দ্রা থেকে কোনাবাড়ী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

বাসচালক এমারেত হোসেন জানান, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগছে কালিয়াকৈরের সফিপুর পর্যন্ত আসতে। ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলাচল করতে বিঘœ ঘটছে। সড়কের অনেক স্থানে মেরামত কাজ চলছে। ওইসব স্থানে গাড়ি বন্ধ করে বসে থাকতে হয়।

কভার্ডভ্যান চালক ফিরোজ মিয়া জানান, সড়কে বিভিন্ন স্থানে হাইওয়ে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না। তারা যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হতো না।

শুক্রবার সকালে চন্দ্রা এলাকায় যানজট পরিস্থিতি দেখতে এসে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ঈদ উপলক্ষে গাজীপুরে যানজট নিরসন করতে মহাসড়কে এক হাজার ২শ’ পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। মহাসড়কে গরুর হাটও বসতে দেয়া হয়নি। তাদের কাজ নজরদারিতে রাখতে চন্দ্রা, চান্দনা-চৌরাস্তা, স্টেশন রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গত ঈদের মতো এ ঈদেও যানজট হবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ঈদে জেলার প্রায় ২ হাজার পুলিশ সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

সালনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হোসেন সরকার জানান, বৃষ্টি ও মহাসড়কে স্থানে স্থানে খানাখন্দ থাকায় এবং বিকালে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কোনাবাড়ী থেকে সফিপুর পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে সড়ক মেরামত করতে গিয়েও যান চলাচলে কিছুটা বিঘœ ঘটছে। তবে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে।

এছাড়া বিকালের দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথের বিভিন্ন স্থানে জানজট সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, টঙ্গী থেকে ভোগড়া বাইপাস আসতে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা।

গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ডিএকেএম নাহীন রেজা জানান, রাস্তা সচল রাখতে সড়ক বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক ভাবে নিয়োজিত রয়েছেন। যেখানে খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের লোকজন দ্রুত সেই স্থান মেরামত করে ফেলছেন। তবে বৃষ্টির কারণে মাঝে মধ্যে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।

রাজশাহী : ঢাকা-টাঙ্গাইল-উত্তরবঙ্গ সড়কে নিত্য যানজটে কাহিল হয়ে পড়ছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ। ৬ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা চলে যাচ্ছে। ফলে আগে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েও চরম ভোগান্তির মধ্যেই পড়তে হচ্ছে তাদের। এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন মহাসড়কে চরম দুরবস্থার কারণে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বৃহস্পতিবার রাজশাহী ডিআইজি অফিসে বিভিন্ন জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা হয়েছে। সভায় ঈদ উপলক্ষে ঘর ফেরত মানুষের চলাচল নির্বিঘœ করতে মহাসড়কগুলোতে তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ তৎপর থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মহাসড়কগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে রংপুর ও রাজশাহীমুখী মহাসড়কগুলোর খানাখন্দ দ্রুত সারানোরও অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সভায় যানবাহন মালিক ও প্রতিনিধিদেরও বলা হয়েছে ঈদে যেন স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রাখা হয়।

এ ব্যাপারে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম খুরশীদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, উত্তরবঙ্গের মহাসড়কগুলোতে ঈদ উপলক্ষে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা তৎপর থাকবে। এছাড়া বগুড়ার মহাস্থানে একটি ভাঙা সেতুর সংস্কার কাজ দ্রুত করতেও পুলিশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে মহাস্থান সেতু, কড্ডার মোড় ও হাটিকমরুলে পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে যাতে কোনো যানজট সৃষ্টি না হয়।

http://www.jugantor.com/online/national/2017/08/26/56314