২৫ আগস্ট ২০১৭, শুক্রবার, ১১:০৩

১৩ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার রাস্তা পারের রেকর্ড

পর্যালোচনা

মিনা ফারাহ : মাত্র ৯ দিনের জন্য বাংলাদেশে যাওয়াটা ছিল সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যহীন। অতিরিক্ত পাওনার মধ্যে বৃষ্টির সাথে প্রায় পুরোটা সময় বসবাস। বৃষ্টি আমার পুরানো ভালোলাগা, এই অনুভূতির বর্ণনা সম্ভব নয়। তুমুল বর্ষণে জনদুর্ভোগ স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা রহিত করার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। খবরে প্রকাশ, সৎকারের সুযোগের অভাবে বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে লাশ। লেখার উদ্দেশ্য, বন্যা নয় বরং ঐতিহাসিক ট্রাফিক জ্যামে নাকাল ১৩ ঘণ্টা। ঢাকার জ্যাম নিয়ে এনসাইকোপিডিয়া লেখার ইচ্ছা না থাকলেও এবারের দুঃসহ যন্ত্রণার কথা না লিখে পারলাম না। এভাবে চলতে থাকলে বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার খবরও অচিরেই ুদ্র হয়ে যাবে।

ভারী বর্ষণে নাকাল বাংলাদেশের জন্য প্রত্যেকেই দুষছে বৃষ্টিকে। কিন্তু কেউই বলছে না, দোষ বৃষ্টির নয় বরং রাজনীতিকে ‘মানিব্যাগ ভর্তি সিন্ডিকেট’ বানানোই কারণ। উদাহরণস্বরূপ, রাস্তা ঢালাই করতে লাগে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি সিমেন্ট অথবা এ্যাস্ফল্ট। কিন্তু বছর খানেক পরেই চামড়া উঠতে শুরু করে। এত সুরকি-সিমেন্ট যায় কোথায়? বড়জোর ২ ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে ৬ ইঞ্চির বিল। চলাচলের অনুপযুক্ত রাস্তার ওপর দিয়ে কয়েকগুণ ভারী যানবাহন চলাচল, ধারণমতার বাইরে যানবাহনের সংখ্যা, মূর্খ ও নিষ্ঠুর চালক, খানাখন্দ আর কাদার এনসাইকোপিডিয়া হয়েছে সড়ক-মহাসড়ক। অথচ রাস্তা মেরামতের নামে প্রতি বছরই হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ নিচ্ছে দলীয় সিন্ডিকেট।

আমার শহর থেকেই বিপন্ন রাস্তার শুরু। রাস্তার দুই পাশে চিরাচরিত ময়লার ভাগাড় এবং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ানো পশুসম্প্রদায়। পশুর কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে; কিন্তু দেখার কেউ কী আছে? অথচ মতাসীনদের অবাস্তব দাবি, তারা নাকি অভূতপূর্ব উন্নতি করেছেন। তারা না থাকলে নাকি দেশের উন্নতি বন্ধ হয়ে যাবে। প্রবাদে বলে, বৃ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়।’ কথাটি আসলেই ঠিক, মরিচ গাছে আপেল ধরে না। অতীতের দুর্নীতিবাজদের খবর প্রত্যেকেই জানে। উন্নতি হলে জনগণই বলবে। ফিরিস্তি লাগিয়ে বিলবোর্ডের প্রয়োজন নেই। যত দূরেই চোখ যায়, মতাসীনদের আমলে যেন উন্নতির বিলবোর্ডের মিউজিয়াম বাংলাদেশ।

টেনেটুনে ময়মনসিংহ পার হতেই চু চড়কগাছ। সড়ক বিভাগ আগেভাগে জানালে মহাজ্যামের মধ্যেই ঢুকতাম না। কারণ কয়েক ঘণ্টা পরেই নিউ ইয়র্কের ফাইট। ভাগ্যিস, অনেক সময় তখনো বাকি। আরো ১ ঘণ্টা পর সব গাড়ির মুভমেন্ট বন্ধ। চারদিকে উপচে পড়া পার্কিং লট। আরো ২ ঘণ্টা জ্যামে আটক থাকার পর ভাবলাম, বিষয়টি অস্বাভাবিক। এ দিকে অসম্ভব গরমে হাঁসফাঁস। গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে গাড়ি বন্ধ রেখেছি। খবর পেলাম, চৌরাস্তার মোড়ে মাত্র এক লাইনে হঠাৎ হঠাৎ গাড়ি চলছে। বিভিন্ন জেলা থেকে গাড়ি এসে হামলে পড়েছে মোড়ে। এই জ্যাম উত্তরা ছাড়িয়ে গেছে। কারণ, জলাবদ্ধতায় রাস্তাঘাট সব ডুবে গেছে। গ্যাসের অভাবে অনেক গাড়ি বন্ধ। দুর্ঘটনায় অচল অনেক যানবাহন। কিন্তু কোথাও উদ্ধারের তৎপরতা নেই।
সে দিনের কত অভিজ্ঞতা! যারা ঢাকায় গিয়ে পণ্য বিক্রি করবে, মাছ-তরকারি...। আনলোড করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে। ট্রাক থেকে লাফিয়ে পড়ছে জ্যান্ত পাঙ্গাশ মাছ। সেগুলো বস্তায় ভরে স্থানীয় বাজারে। পনিরের বস্তার ওপর বসে থাকা বেপারি, ট্রাক থেকে নামিয়ে দিলো কয়েক বস্তা। কারণ, এরপর খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যাবে পনির। এরকম বহু অভিজ্ঞতা। আরো ২ ঘণ্টা পর মাত্র আধা মাইল এগিয়ে গেলে বুঝলাম, ফাইট ধরতে হলে যেকোনো উপায়ে বের হতেই হবে।
রাত ১২টায় ফাইট, তাই ধৈর্য ধরলাম। চৌরাস্তার মোড় আরো দেড় মাইল বাকি। যেচে একজন পথচারী জানালো, আমার গাড়ির চাকা ফাট! সর্বনাশ! ফাট ঠিক করার প্রশ্নই আসে না। এমনকি কারো হার্টঅ্যাটাক হলেও গাড়ি বের হতে পারবে না, বরং গাড়িতেই মরতে হবে। খানাখন্দের ওপর দিয়ে চলার সময় হয়তো পেরেক ঢুকেছিল। ট্রাফিকে ৬ ঘণ্টা পার করার পর, বিকল্প রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। কিন্তু কিছু দূর যেতেই আবারো একই পার্কিং লট।

এবার আমি সত্যিই বিচলিত। ৩টার মধ্যে এলাকা না ছাড়লে ফাইট ধরা অসম্ভব। জ্যামে আটক এক ট্রাক ড্রাইভার বললো, মীরের বাজার থেকে ৬ ঘণ্টায় মাত্র ১ মাইল পার হয়েছে। হাতে সময় থাকায় সিদ্ধান্ত নিলাম, হেঁটে ৪ মাইল পার হয়ে অটোরিকশা, রিকশা, যেকোনোভাবে এয়ারপোর্টে পৌঁছাবো। কিন্তু সেটা আর করতে হয়নি। স্থানীয়দের পরামর্শে, ভাওয়াল রাজার বনবাদাড়ের রাস্তা দিয়ে আবারো যাত্রা শুরু। এভাবেই বাড়ির অদূরে পৌঁছে দ্বিতীয়বারের মতো ফাট টায়ার। গাড়ি বন্ধ। একফোঁটা গ্যাসও নেই। কিন্তু ফিলিং স্টেশনেরও চিহ্ন নেই। এরপর অসম্ভবের সাথে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত গন্তব্যস্থলে।

চৌরাস্তার ভিড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করার সময় ভাবছিলাম, হয়তো সেতুমন্ত্রীকে কোথাও দেখবো। কারণ হামেশাই ফুল ক্যামেরা ইউনিটসহ ‘ট্রাফিক পুলিশ’ বনে যান তিনি। আইন অবমাননার অপরাধে ড্রাইভারদের শাস্তিও দেন। এমনকি লাইসেন্সও বাতিল করে দেন। কিন্তু না, অনেক অপোর পরেও মন্ত্রীর দেখা মিলল না। জানি, এসব তুচ্ছ ব্যাপারে তাদের সময় নেই, বরং ব্যস্ত বড় বড় কাজে।
যেমন সেতুমন্ত্রীর এখন একনম্বর কাজ, বিধ্বস্ত রাস্তাঘাটের বদলে, ১৬তম সংশোধনী বাতিলের রায়টি মেরামত করা। কারণÑ অপরিপক্ব, অপরিণত, সংসদীয় গণতন্ত্রহীন চলমান সংসদের বিষয়ে রায়ে যে পর্যবেণ, রাজনৈতিক মহাপ্লাবনে ভেসে গেছে দুর্নীতিবাজ আওয়ামী মহাসড়কের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত। সেখান থেকে বের হওয়ার প্রায় প্রতিটি রাস্তাই বন্ধ করতে সাত বিচারপতিই একমত। এমনকি গজলডোবার পানিতে ভাসা বন্যার্তদের চেয়েও করুণ অবস্থা, বিধ্বস্ত আওয়ামী সড়ক-মহাসড়কের। তবে চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী, এই রায়কেও বিতর্কিত না করলে, এবার রা নেই। কারণ এরপর আসতে পারে, অবৈধ সংসদের পদত্যাগের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। বিষয়টি আমি বলিনি; বলেছেন সাতজন বিচারপতি, যাদের প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। রায়ে পর্যবেণ, বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করার বদলে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে, যা করলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ওবায়দুল কাদেরদের দৌড়ঝাঁপ দেখে মনে হচ্ছে, এইসব পলিটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে, এমনকি বিচার বিভাগের মহাসড়কও ভেঙে যেতে পারে। হাইকমান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী, জুডিশিয়ারির বিরুদ্ধে যে ধরনের অ্যাক্টিভিজম রাস্তায় এবং ভেতরে, রায়ে কি এর বিরুদ্ধেই সতর্ক করেননি সাত বিচারক? এই ‘আমিত্ববাদের’ বিরুদ্ধেই হুঁশিয়ারি জারি করে বলা হয়েছে, মতা হচ্ছে মহামারী, একটি ভাইরাস।

পরবর্তীতে খবরের কাগজে যা দেখলাম, হজম করা কঠিন। রাস্তাঘাট মন্ত্রী নাকি সত্যিই সে দিন একবার প্রধান বিচারপতি, আরেকবার প্রেসিডেন্টের সাথে আওয়ামী মহাসড়ক মেরামতে ব্যস্ত ছিলেন। সেখানে নাকি ভারতীয় ও নেপালি কারিগরেরাও উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি মোটেও ভালো ঠেকলো না। অন্য কোনো সভ্য দেশে হলে, এই কিসিমের অপরিপক্ব সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে বাধ্য করার আগেই ইস্তফা দিতেন।
অভিযোগ, উন্নতি ঠেকাতে নাকি উঠেপড়ে লেগেছে ২০ দলীয় জোট। তাই তাদের ওপর অভিনব দমনপীড়ন চালাতে হবে। অথচ ৯ বছর নিরবচ্ছিন্ন মতা ভোগ করছে আওয়ামী লীগ। বিলবোর্ড যাই বলুক, তারা প্রমাণ করেছে উন্নতির বদলে সবেেত্রই ভয়ানক অবনতি। কারণ, পাহাড় সমান দুর্নীতি। ইংরেজিতে বলে করাপশন। বরাদ্দের হাজার হাজার কোটি টাকা খেয়ে ফেলছে সড়ক-সিন্ডিকেট। একমাত্র আফ্রিকা এবং বাংলাদেশেই করাপ্ট রাজনীতিবিদরা পদত্যাগের বদলে অন্যদের ভুল প্রমাণের চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরূপ, রাষ্ট্রের সব অঙ্গ শেষ করে, এবার ধরা হয়েছে বিচার বিভাগকে। তাদেরকে নাকি হয় পদত্যাগ, নয় এক্সপাঞ্জে বাধ্য করা হবে। আমাদের প্রশ্ন, হর্স ট্রেডিং আর এক্সপাঞ্জের রাজনীতিই কি আওয়ামী লীগের একমাত্র সম্বল?

একটি দেশের উন্নতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো যোগাযোগব্যবস্থা। কত দ্রুত পণ্য পৌঁছাতে পারে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। কত দ্রুত পাবলিক গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়। বাংলাদেশের বেলায়, কত দেরিতে পৌঁছাতে পারে। গোদের ওপর বিষফোঁড়া, হাইকমান্ডের ট্রাফিক জ্যাম নীতি। হাইকমান্ড বের হলে পাবলিকের পুরো দিন সাবাড়। তুরুপের তাস কয়েকটি ফাইওভার। বিশেষ ব্যক্তি মতায় না থাকলে নাকি দেশ বাঁচবে না। বাস্তব বলে ভিন্ন কথা। রাস্তা বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনাই নেই, বরং যা আছে সেখান থেকেও কমছে। সাধারণ মানুষ প্যারাসিটিক মানসিকতার শিকার না হলে এই জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলো কেন?
যে পরিমাণ রাস্তার প্রয়োজন, তা কিছুতেই সম্ভব নয়। যেসব প্রজেক্ট হাতে, বেশির ভাগই অবাস্তব। বর্ষা এলেই রাস্তা কাটার ধুম। এরমধ্যেই প্রতিদিন বাড়ছে কয়েক শ’ গাড়ি। পরিকল্পিত নগরের বদলে, পরিকল্পিত কল্পনা। গাড়িগুলোর ৯৫ ভাগই গ্যাসচালিত হয় কিভাবে? সিএনজির উদ্ভাবন জনজীবনকে আরো দুর্বিষহ করেছে। অথচ বাসাবাড়িতে গ্যাস দেয়া বন্ধ। গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিগুলো গ্যাসের অভাবে নাকাল। সঙ্কটের কারণে, বিকল্প ব্যবস্থায় চলছে উনান। গরিব মানুষেরা গাড়ি কেনে না। তাহলে কাদের স্বার্থে সিএনজিচালিত গাড়ি?

ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ সস্তায় গ্যাস। গ্যাসের মূল্য তেলের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ। তেলের ব্যবহার থাকলে, সস্তা সিএনজির গ্যাঁড়াকলে পড়তে হতো না। গাড়ির সংখ্যাও কমতো। আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের তুলনায় এবং বাংলাদেশী নব্য ধনীদের সংজ্ঞা অনুযায়ী, তেলের মূল্য এখানে বরং অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক কম। সুতরাং জ্বালানির মূল্য সাশ্রয় বড় লোকদের জন্য কি হাস্যকর নয়? প্রশ্নÑ গ্যাস পাম্পগুলো বন্ধ হচ্ছে না কেন? বরং মতায় এসেই এই উদ্যোগ নিলে এতদিনে ভোগান্তি অনেক কমতো।

জলাবদ্ধতার বিষয়ে হাইকমান্ডের ব্যাখ্যা সত্যিই লজ্জাজনক। জিয়াউর রহমান নাকি নদী-নালা, খাল-বিল বন্ধ করে দিয়েছেন বলেই জলাবদ্ধতা। অথচ তিনি গত হয়েছেন ৩৬ বছর আগে। বরং এদের সিন্ডিকেটই বেশির ভাগ নিচু জায়গা ভরাটের জন্য দায়ী। শিশুদের খেলার মাঠগুলো পর্যন্ত রেহাই পায়নি। এমনকি ধানমন্ডির অভাবনীয় ট্রাফিক জ্যাম সত্ত্বেও বিশেষ একটি লেকঘেরা রাস্তার দুই পাশেই লোহার ব্যারাজ দিয়ে বন্ধ করা কেন? সাত বিচারপতি এই আমিত্ববাদের বিরুদ্ধেই একসাথে রায় দিয়ে পাবলিককে সজাগ হওয়ার ইশারা দিলেন।

ক’টা বলবো? ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের অন্তর্ভুক্তÑ নূর হোসেনদের বালুমহাল, বালুর ট্রাক সংগঠন, ড্রেজার ব্যবসায়ী, মেগাবাজেট...। মতাসীনদের ছায়াতলে বহু অর্গানাইজড ক্রাইম সংগঠনের জন্ম হয়েছে। এরাই একের পর এক খেয়ে ফেলছে উঁচু-নিচু জায়গাগুলো। অথচ নিচু জায়গাগুলো দিয়েই পানি বের হওয়ার কথা। সুতরাং জিয়াউর রহমান নয়, জলাবদ্ধতার দায়িত্ব বর্তমান মতাসীনদেরকেই নিতে হবে। বরং তারা ব্যস্ত জনদুর্ভোগ ঠেকানোর বদলে, এক্সপাঞ্জ নিয়ে হর্স ট্রেডিংয়ে। যেন এক্সপাঞ্জ করতে পারলেই ট্রাফিক জ্যামের অবসান হবে।

ভবিষ্যতে মুখ থুবড়ে পড়বে ট্রাফিক পরিস্থিতি। অসম্ভব হবে মুভমেন্ট। দ্রুত বাংলাদেশ হয়ে উঠছে ড্রেজার মিউজিয়াম। যে যেখানে পারছে দখল করছে। সাত বিচারকের পর্যবেণ অনুযায়ী, এটাই অনিয়মিত এবং অপরিপক্ব সংসদ। অদূর ভবিষ্যতে, সুন্দরবনেরও পুরোটাই হয়তো পুঁজিবাদের ক্যাপিটাল হতে যাচ্ছে। হয়তো উন্নতির ভিশন এবং রূপকল্পে গড়ে উঠবে, সবচেয়ে উঁচু ও ব্যয়বহুল ভবন। ইতিহাস হবে চিত্রাহরিণ আর চিতাবাঘ। বরং ‘শ্যালা’ নদী হয়ে উঠতে পারে, দুবাই স্টাইলে নয়নাভিরাম মেগালেকসিটি। সুন্দরবনে তিন শতাধিক শিল্পকারখানার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ ব্যক্তি যত বড়ই হোক, সুন্দরবনের মতো প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করার এখতিয়ার কারোরই নেই। বলছি, প্রকৃতির সাথে জনদুর্ভোগের ভারসাম্যের কথা। ধসেপড়া রাজনীতির মহাসড়ক মেরামতে যত আন্তরিক ওবায়দুল কাদের এবং হাইকমান্ড, ন্যূনতম আন্তরিকতা থাকা কি উচিত ছিল না, জলাবদ্ধতায় ধসেপড়া জনজীবন মেরামতে?
সাত বিচারপতি যখন একমত, তখনো রাস্তা মেরামত বাদ দিয়ে মতা মেরামত কি লজ্জাজনক নয়?

ই-মেইল : farahmina@gmail.com
ওয়েবসাইট : www.minafarah.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/246848