২৪ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৬:২৩

সরজমিন

ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম

ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। সরকারের তরফে পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ তারা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না। আবার কোনো কোনো এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা যাচ্ছে বলে সরজমিন ঘুরে তথ্য পাওয়া গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও স্থানীয়দের অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের স্বজন, সরকারি দলের লোকজনকে ত্রাণ সুবিধা দেয়া হলেও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নন এমন ব্যক্তি ও সচ্ছল ব্যক্তিরাও দলীয় পরিচয়ে ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন। এলাকায় থাকেন না এমন ব্যক্তির নামেও ত্রাণ বরাদ্দের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট, চিলমারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় মাঠ পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণে এমন নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বানভাসী মানুষ।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান মানবজমিনকে বলেন, আমিও ত্রাণ বিতরণে কিছু অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। একটার সত্যতা পেলেও বাকিগুলোর সঠিক নয়। কোন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলেয়া। একজন প্রবাসী নারী। রয়েছেন বিদেশে। তার নামেই বিতরণ হয়েছে ১০ কেজি চাল (বিতরণ তালিকায় ক্রমিক নং ১৫০৪)। এই ঘটনা রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের। ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছিনাইহাট বড়গ্রাম পাড়ার বাসিন্দা আলেয়া। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছোবহান আলী ওরফে ছোবহান ব্যাপারীর বিরুদ্ধে উঠে এই অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি, আঞ্চলিকতা এবং ভোট রাজনীতির অভিযোগও রয়েছে স্থানীয়দের। ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও তার আপন চার ভাই আসাদুল, সোহরাব, আহাদ এবং আশরাফ ত্রাণ পেয়েছেন। এর মধ্যে দু’বার পেয়েছেন আহাদ। শুধু তাই নয়। গত ইউপি নির্বাচনে যারা তার হয়ে কাজ করেছে তারাও এরই মধ্যে কয়েকবার ত্রাণ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জন ওই ওয়ার্ডের বানিয়াপাড়ার বাসিন্দা ওমেদ আলী ও খয়রাত। অবস্থা সম্পন্ন দু’পরিবারে গিয়ে দেখা গেছে তাদের ঘরে পানি ঢুকলেও ক্ষয়ক্ষতি কম। অথচ তারা এরই মধ্যে সরকারিভাবে দেয়া ত্রাণ দু’বার পেয়েছেন। কিন্তু ওই ওয়ার্ডের বানিয়াপাড়া, কেন্দুয়াপাড়া, নাপিতপাড়া, মেকলীসহ কয়েকটি গ্রামের বহু হতদরিদ্র ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ত্রাণ পায়নি। এর মধ্যে ভাটিয়াপাড়ার শাহারা ও বানিয়াপাড়ার মল্লিকা, সিরাজুল হক, আবদুল বাতেন, আজিরন এবং মততাসহ অনেকে। তারাসহ বেশ কয়েক নারী-পুরুষ জানান, ‘ত্রাণ নিতে গেলে গত ১৯শে আগস্ট স্থানীয় ছোবহান মেম্বার বলেন, তোমরা আমাকে ভোট দাও নাই। আমি আমার লোককে ত্রাণ দেবো। আমি তোমাদের ত্রাণ দেবো না। এরপর থেকে আমরা যারা তাকে ভোট দিইনি তাদের অনেকেই ত্রাণ পাইনি।’
এর সত্যতা জানতে ওই ইউপি সদস্যের লোক বলে পরিচিত ওমেদ আলীর বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি মেম্বার ও চেয়ারম্যানের লোক। আমি দু’বার সরকারি ও দু’-একবার বেসরকারি ত্রাণ পেয়েছি। তবে এর আগে যখন অন্য চেয়ারম্যান ক্ষমতায় ছিল, অন্য মেম্বার দায়িত্বে ছিল তখন আমরা ৫ থেকে ৬ বছর বন্যায় কোনো ত্রাণ পাইনি। মেম্বার ও চেয়ারম্যানের অপর ঘনিষ্ঠ খয়রাত বলেন, আমার ঘর ভাঙেনি, খড়ি ভেঙেছে। ২ বার রিলিফ পেয়েছি। আমি মেম্বার-চেয়ারম্যানের লোক হলেও তারা এই এলাকার সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নটির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে ৯৩৭টি পরিবার (২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী)। এরমধ্যে প্রথমবার ১৫ই আগস্ট ৩৪১ জনকে (বিতরণের মাস্টাররোল ক্রমিক নং-১২৯০ থেকে ১৬৩১) এবং দ্বিতীয়বার ১ হাজার ৩৯ জনকে (ক্রমিক নং ১৪৮০ থেকে ২৫১৯) ত্রাণ বিতরণ করা হয়। দু’বারে মোট ১ হাজার ৩৮০ জনকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর বিতরণ করা ত্রাণও ওই ওয়ার্ডের অনেকে পেয়েছেন। সে হিসাবে ওই ওয়ার্ডের প্রতিটি পরিবার অন্তত একবার বা তার বেশি ত্রাণ পাওয়ার কথা থাকলেও পায়নি কয়েকটি পাড়ার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারই।
এর বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ছোবহান আলী মানবজমিনকে বলেন, আমার ভাইও গরিব। তাই তাকে দু’বার ত্রাণ দেয়া হয়েছে। যারা ভোট দেয়নি তাদের ত্রাণ দেবো না একথা আমি বলিনি। তবে হাতে সময় কম থাকায় হয়তো তালিকায় এক নাম কয়েকবার এসেছে। আগামীবার ত্রাণের বরাদ্দ এলে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী মেম্বার প্রার্থীদের দেবো।
স্থানীয়দের একই অভিযোগ অপর ইউপি সদস্য খালিদ হাসান খলিলসহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে খলিল বলেন, তালিকায় নাম থাকলেও নিতে না আসায় সে ত্রাণ অন্যজনকে দিয়ে ফেলেছি। তাছাড়া সবাই ত্রাণ পেয়েছে।
এমনকি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলুর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ। ছিনাই ইউনিয়নে মোট ৬ হাজার ৬৮৩ পরিবার। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার দুর্গতের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। আর দু’দফায় যথাক্রমে ২১ ও ৪০ টন চালের বরাদ্দ দেয়া হয়। তা ১০ কেজি করে ৬ হাজার জনের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে এক টন চাল রান্না করে বিতরণ করা হয়। সে হিসাবে শুধু ক্ষতিগ্রস্তরা নয়, ইউনিয়নের সব পরিবার অন্তত একবার করে ত্রাণ পাওয়ার কথা। কিন্তু বহু সর্বস্বান্ত পরিবার এখন একবারও ত্রাণ পায়নি।

স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার খালিদ হাসান খলিল ও ইউপি চেয়াম্যান বুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হক। তিনি বলেন, গরিব ও অতি দুর্গতদের অনেককে না দিয়ে তারা নিজেদের লোকজনকে বেছে বেছে ত্রাণ দিচ্ছে। একজনকে কয়েকবারও দিচ্ছে। এ কারণে গত ২১শে আগস্ট ত্রাণ পাওয়া ও না পাওয়াদের মধ্যে গড়ের বাজারে মারামারির ঘটনাও ঘটে উল্লেখ করেন স্থানীয়রা।
ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলু বলেন, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। যাতে অভিযোগ না উঠতে পারে সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে পারে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ বিতরণে এমন কোনো অনিয়ম হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
একই অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফুলবাড়ী ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের প্রাণকৃষ্ণ সাহেব বাজারের প্রীতিশচন্দ্র বর্মণ ও বিউটি বেগম জানান, স্থানীয় মেম্বাররা তাদের পছন্দের লোকজনকে ত্রাণ দিচ্ছে। আমাদের কিছুই দেয়নি। ভাঙামোড় ইউনিয়নের খোঁচাবাড়ী তালতলা গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন ও রাহিলা বেগম বলেন, কয়েক দিন ধরে ত্রাণ দেয়া হলেও আমাদেরকে কেউ ত্রাণ দিতে আসেনি। মেম্বাররা তাদের নিজেদের লোকদের ত্রাণ দিচ্ছে।
এদিকে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা মুরাদ হাসান বেগ বন্যার পর রমনা মডেল ইউনিয়নের চরপাত্রখাতা এলাকার রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসায় আশ্রয় নেয়া বন্যার্ত পরিদর্শনে যান। সেখানে ত্রাণ না পৌঁছায় তিনি তাদের কাছে ৭০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী পাঠান স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আবদুল আজিজের মাধ্যমে। কিন্তু তিনি কয়েক প্যাকেট সেখানে বিতরণ করে বাকিগুলো অন্যত্র নিজের পছন্দের লোকদের বিতরণ করেন। তাতে মনোক্ষুণ্ন ইউএনও নিজেই গত ২০শে আগস্ট নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে ওই অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করেন। জানান সেখানে পরবর্তীতে ত্রাণ বিতরণের কথাও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল আজিজ বলেন, আমার শত্রুরা আমার দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছে।
এদিকে জামালপুরে বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণের বরাদ্দের তেমন কমতি নেই। ত্রাণ বিতরণও করা হচ্ছে। কিন্তু ত্রাণ জুটছে না সকলের। অভিযোগ উঠেছে, ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি করা হচ্ছে। সাধারণত জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ত্রান বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যার্তদের অভিযোগ বেশির ভাগ চেয়ারম্যান নিজেদের লোক ও দলের নেতাকর্মীদের বারবার ত্রাণ দিলেও অন্যদের বঞ্চিত করছেন। অনেক এলাকাতে বন্যা শুরুর পর থেকে দেখা মিলছে না সংসদ সদস্য থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের। জামালপুরের ইসলামপুরের নোয়াগাঁও, ধর্মখুড়া গ্রামে একাধিকবার ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ পেয়েছেন অনেকে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের ভাগ্যে তা জুটেনি। তাদের একজন ধর্মখুড়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন। বন্যায় তার ঘরের কাঁথা-বালিশ পর্যন্ত নষ্ট হয়েছে। ঘরটিও নড়বড়ে। বন্যার কারণে সড়কে আশ্রয় নিয়েছিল তার পাঁচ সদস্যের পরিবার। খেয়ে না খেয়ে কেটেছে প্রায় দুই সপ্তাহ। কিন্তু সরকারের বরাদ্দকৃত ত্রাণ জুটেনি তার ভাগ্যে। একইভাবে বন্যায় ভেঙে গেছে ওই উপজেলার ছিনাডুলি গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফের বসত ঘর। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তার ভাগ্যেও ত্রাণ জুটেনি। নতুনপাড়া, রাজনগর চেতরাই ও উলিয়া-মাহমুদপুর বাঁধে আশ্রয় নেয়া বন্যার্তরা জানান, বন্যার পর থেকে নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মুখ দেখেননি তারা। চেয়ারম্যান তার নিজের আত্মীয় ও দলীয় কর্মীদের মধ্যেই ত্রাণ বিতরণ করছেন। পরিষদের কয়েক মেম্বারকেও ত্রাণ বিতরণ করার সুযোগ দেননি তিনি। ওই ইউনিয়নের মেম্বার মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমাদের কাছে কোনো ত্রাণ আসেনি। আমার এলাকার বন্যার্তরা ত্রাণ না পেয়ে হাহাকার করছে।

একই অভিযোগ পাওয়া গেছে সরিষাবাড়ী উপজেলায়। উপজেলার পিংনা ইউনিয়নে গত রোববার ত্রাণ বিতরণ করা হলেও বন্যার্তদের সবাই তা পাননি। বাসুরিয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী পুরান আলী জানান, তাকে ১০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে। এভাবে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ত্রাণ জুটেনি রাসেল, নুরুল আমিন, আনিসুর রহমান, আবদুুস সালামসহ অনেকের ভাগ্যে। তাদের অভিযোগ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে দলীয় বিবেচনায়। চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক দলের কর্মী না বলেই তাদের ভাগ্যে ত্রাণ জুটেনি।

বন্যায় ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর থেকে ঘরহীন জামাল উদ্দিন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইমামপুর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত তাদের কোনো ত্রাণ দেয়া হয়নি। নিজেদের লোক না থাকায় এদিকে ত্রাণ দেন না এলাকার চেয়ারম্যান। যদিও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানরা। ইসলামপুরের নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ত্রাণ যা পাচ্ছি তাই দিচ্ছি। ত্রাণের চাহিদা বেশি। না পেলে কি করবো। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি হিসেবে বন্যাদুর্গত প্রায় সকল পরিবারের জন্যই অন্তত ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, বরাদ্দকৃত ত্রাণ দ্রুত বিতরণ করা হচ্ছে। আরও ৫শ’ মেট্রিক টন চালের চাহিদা রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১ হাজার ৩শ’ ৬২ গ্রামের মধ্যে ৬শ’ ৭৪টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জামালপুর জেলার ইসলামপুর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর সদর, বকশীগঞ্জ ও মাদারগঞ্জের ২ লাখ ১৭ হাজার ১শ’ ৭২টি পরিবার। বন্যার্তদের সংখ্যা ১০ লাখ ৪৪ হাজার ৬শ’ ৪২ জন। বিপুল এই মানুষের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ২ হাজার ৩৮ মেট্রিক টন চাল। এরমধ্যে ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮শ’ ৪৯ মেট্রিক টন। এছাড়াও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর মানবজমিনকে বলেন, দলীয় লোক বা নিজেদের লোক হিসেবে না, ত্রাণ দিতে হবে বন্যার্তদের। নিজেদের লোক বিবেচনায় ত্রাণ বিতরণ করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ত্রাণ বিতরণে যাতে অনিয়ম না হয় সেদিকে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=80256