২৪ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৬:০৮

পাঁচ মহাসড়ক বেহাল

দেশের প্রধান মহাসড়কগুলো বেহাল। কোথাও সুরকি উঠে গেছে, কোথাও খানাখন্দ। যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। কোথাও চলছে ধীরগতিতে। সামনে ঈদ। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে। এতে দুর্ভোগও বাড়বে
অতিবৃষ্টির কারণে যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোলসহ পাঁচটি জাতীয় মহাসড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। এসব সড়কে যাত্রীবাহী বাস ও গরুবোঝাই ট্রাক চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী-চালকেরা।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পবিত্র ঈদুল আজহার অন্তত ১০ দিন আগে জাতীয় মহাসড়কগুলো যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার নির্দেশ দিলেও যশোরের সড়কগুলো এখনো উপযোগী হয়নি। ঈদের আগে এসব সড়ক চলাচল উপযোগী করা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এতে ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে পারে ঘরমুখী মানুষ।
অতিবৃষ্টিতে যশোরের পাঁচটি জাতীয় মহাসড়ক ও দুটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়কের অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইট, বালু, পাথর ফেলে এসব সড়ক চলাচল উপযোগী রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি মহাসড়ক হচ্ছে যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা ও যশোর-নড়াইল। এ ছাড়া যশোর-কেশবপুর, শহরের পালবাড়ী-দড়াটানা- মনিহার-মুড়লী সড়ক ভেঙে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদের আগে সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করতে কাজ চলছে। অতিবৃষ্টিতে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করতে সময় লাগবে। এর মধ্যে যশোর-খুলনা ও যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য ৬৪২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া গেছে। দরপত্র আহ্বানের কাজ চলছে।

সড়কগুলো চলাচল উপযোগী রাখতে বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ৩৮ কিলোমিটার যশোর-খুলনা মহাসড়কের চাঁচড়া মোড়, মুড়লী, রাজঘাট, বসুন্দিয়া, প্রেমবাগ, চেঙ্গুটিয়া ও ভাঙ্গাগেট পর্যন্ত অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যশোর-বেনাপোল সড়কের পুলেরহাট থেকে নাভারণ মোড় পর্যন্ত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার অংশ বিধ্বস্ত। সাড়ে ২২ কিলোমিটার যশোর-মাগুরা সড়কের কদমতলী, পুলেরহাট থেকে লেবুতলা বাজার ও রজনীগন্ধা পাম্প পর্যন্ত বেহাল। যশোর-নড়াইল সড়কের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে মনিহার থেকে হামিদপুর অংশে অসংখ্য বড় গর্ত হয়েছে।

সম্প্রতি যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পুলেরহাট এলাকার ভাঙা অংশে বিটুমিনের ওপর ইট বিছিয়ে (সলিং) যোগাযোগ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। গত রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই সলিংয়ের দুপাশে অন্তত ২০০ মিটার অংশে বড় বড় গর্ত হয়েছে। পণ্যবাহী যান ও যাত্রীবাহী বাস ওই অংশ পার হচ্ছে হেলেদুলে। পুলেরহাট এলাকায় ব্যাপক যানজট হচ্ছে। ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের একমাত্র সড়ক এটি। বলতে গেলে যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়কই চলাচলের প্রায় অনুপযোগী।

বছরখানেক আগে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-খুলনা সড়ক পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। কিন্তু ওই সড়কের মনিহার থেকে বকচর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশে সড়কের মাঝখানে ফুলে-ফেঁপে বড় ঢিবি, খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ঢিবিতে যানবাহনের নিচের অংশ আটকে যাচ্ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সওজ ওই রাস্তার মাটি পরীক্ষা করেছে। এ রাস্তা দিয়ে খুলনা, ঢাকা, কুষ্টিয়াসহ আঞ্চলিকপথের বাস-ট্রাক চলাচল করে।
যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কুষ্টিয়ার লালন শাহ সেতু পর্যন্ত অংশে বিটুমিন উঠে গর্ত হয়ে গেছে।
ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় গরুরহাট বসে যশোরের শার্শা উপজেলার সাতমাইলে। এখান থেকে প্রতিদিন ৩০-৪০ ট্রাক গরু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। রাস্তা খারাপ ও যানজটের কারণে এ বছর গরুবোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যেতে সাহস পাচ্ছি না। স্টিয়ারিং ঠিক রাখা যায় না। ট্রাকের পাতি, টিউবসহ যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে।’

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1300696