১৬ আগস্ট ২০১৭, বুধবার, ৩:৩২

সুশাসন

সংবিধান অবমাননায় আইন কমিশনে নিয়োগ

ইকতেদার আহমেদ

বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে আইন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। আইন কমিশন প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল অচল আইনগুলো বাতিল, প্রচলিত অন্যান্য আইনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তাদের যুগোপযোগী সংস্কার অথবা ক্ষেত্রমতো নতুন আইন প্রণয়ন বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করা। আইন কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও দুইজন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত মর্মে আইন কমিশন আইনে উল্লেখ থাকলেও চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতা বিষয়ে আইনটি নিশ্চুপ। কমিশনটি প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ছয়জন নিয়োগ পেয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবং একজন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যের বেশির ভাগই হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।
১৯৭২ সালে চালু করা সংবিধানের বিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসর-পরবর্তী প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে নিয়োগ বারিত ছিল। পরে দ্বিতীয় ঘোষণাপত্র (পঞ্চদশ সংশোধন) আদেশ, ১৯৭৮ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসর-পরবর্তী বিচারিক ও আধা-বিচারিক পদে নিয়োগের জন্য যোগ্য করা হয় এবং হাইকোর্ট বিভাগ থেকে অবসর-পরবর্তী আপিল বিভাগে ওকালতি করার জন্য যোগ্য করা হয়। দ্বিতীয় ঘোষণাপত্র (পঞ্চদশ সংশোধন) আদেশ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে অনুমোদিত হয়। সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স ৬২ হতে ৬৫ বছরে উন্নীত হয়। এরপর সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসর-পরবর্তী নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টা পদে নিয়োগ লাভের জন্য যোগ্য করা হয়।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতে পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষিত হলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আনার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসর-পরবর্তী নিয়োগ বিষয়ে পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে প্রবর্তিত সুবিধা এবং অবসরের বয়স বিষয়ে সপ্তম সংশোধনী দিয়ে প্রদত্ত সুবিধা অক্ষুণœ রেখে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবর্তিত সুবিধা রহিত করা হয়। চতুর্দশ সংশোধনী দিয়ে অবসরের বয়স ৬৫ থেকে ৬৭ বছরে উন্নীত করা হয় এবং এতে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই পঞ্চদশ সংশোধনী প্রণীত হয়।
আমাদের সংবিধানের কোথাও লাভজনক পদের ব্যাখ্যা দেয়া না হলেও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ২০০৮ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধনী এনে অনুচ্ছেদ নং ১২তে লাভজনক পদ বিষয়ে বলা হয় ‘লাভজনক’ পদ অর্থ প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বা সরকারি শতকরা ৫০ ভাগ বা তদূর্ধ্ব শেয়ার রয়েছে এরূপ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে সার্বক্ষণিক বেতনভুক্ত পদ বা অবস্থান।
বিচারিক পদ বলতে পদধারী কর্তৃক বিবদমান দু’টি পক্ষের বক্তব্য লিপিবদ্ধ অথবা শ্রবণান্তে অথবা উভয় কার্য সমাপনান্তে প্রদত্ত সিদ্ধান্তকে বোঝায়। অপর দিকে আধা-বিচারিক পদ বলতে বিচারিক পদে অধিষ্ঠিত নন এমন পদধারী কর্তৃক সময়ে সময়ে উপরি উক্ত কার্য সম্পাদন বোঝায়।
পৃথিবীর কোনো দেশে আইন প্রণয়নের সুপারিশের সাথে বিচারিক অথবা আধা-বিচারিক কাজ সম্পৃক্ত নয়। আামদের দেশসহ পৃথিবীর সব দেশে আইন কমিশন একটি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণার কাজের সাথে বিচারিক বা আধা-বিচারিক কাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আমাদের আইন কমিশন প্রতিষ্ঠার সময় আইন কমিশন আইন, ১৯৯৬-এ অনুসন্ধান কার্য পরিচালনা বা কোনো প্রশ্নের ওপর মতামত সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতে সাক্ষী উপস্থিতি বিষয়ে আদালতগুলোকে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮-এর অধীন যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ওই ক্ষমতা আইন কমিশনকে দেয়া হলেও এর মাধ্যমে এ কথা বলার অবকাশ সৃষ্টি হয়নি যে, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যের পদ বিচারিক বা আধা-বিচারিক পদ। বস্তুত আইন কমিশনকে ওই ক্ষমতা দেয়ায় এর সুবিধাভোগী পদধারী এটিকে আধা-বিচারিক পদে আসীন দেখানোর প্রয়াস নিলেও গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত কোনো বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণে বিচারিক বা আধা-বিচারিক কাজের কোনো সংশ্লেষ না থাকায় কোনো যুক্তিতেই কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ বিচারিক বা আধা-বিচারিক পদের আওতাভুক্ত নয়।
প্রণিধানযোগ্য যে, ফৌজদারি মামলার তদন্তকার্য পরিচালনায় পুলিশ সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে থাকে। এ সাক্ষ্য নেয়ার প্রক্রিয়া বিচারকার্য পরিচালনাকালীন সাক্ষ্য নেয়ার সাথে ভিন্নতর হওয়ায় একে বিচারিক কার্যক্রম হিসেবে আখ্যা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। অনুরূপ কমিশনস অব ইনক্যুয়ারি অ্যাক্ট-এর অধীন গঠিত কমিশনকে কারো সম্মুখে সাক্ষী উপস্থিতি বিষয়ে দেওয়ানি কার্যবিধির অধীন প্রদত্ত ক্ষমতা কোনোভাবেই ওই কমিশনকে তার কার্য বিচারিক বা আধা-বিচারিক মর্মে অভিহিত হওয়ার অবকাশ সৃষ্টি করে না। উল্লেখ্য, বিচারিক বা আধা-বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণকালীন মামলায় বিজড়িত এক পক্ষ অপর পক্ষের সাক্ষীকে জেরা করতে পারে, যা পুলিশ কর্তৃক ফৌজদারি মামলার তদন্তকার্য পরিচালনায়, আইন কমিশন কর্তৃক গবেষণা সংশ্লেষে বা কমিশন অব ইনক্যুয়ারি সংশ্লেষে সাক্ষ্য গ্রহণকালীন অনুপস্থিত।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন, ভাতা ও সুযোগ-সুবিধাদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রক্ষিত জনগণের দেয়া কর থেকে নির্বাহ করা হয়। এরূপ পদধারীরা প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত মর্মে অভিহিত।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদ এক দিকে বিচারিক বা আধা-বিচারিক পদ না হওয়ায় এবং অপর দিকে সুস্পষ্টভাবে প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদ হওয়ায় এরূপ পদে অবসরপ্রাপ্ত কোনো প্রধান বিচারপতি অথবা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে নিয়োগ দেয়া হলে সে নিয়োগ সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৯৯-এ প্রদত্ত সীমাবদ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দিতে পারে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অথবা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের নিয়োগ বারিত হলে কিভাবে কমিশন প্রতিষ্ঠার পর আজ পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এবং সদস্য পদে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকরা নিয়োগ পেয়ে আসছেন? এ ধরনের নিয়োগ যে সংবিধানের ৯৯ নং অনুচ্ছেদে প্রদত্ত সীমাবদ্ধতার আলোকে বারিত এ প্রশ্নে কেউ বিতর্ক করতে চাইলেও তা সংবিধান ও আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনোভাবেই গ্রহণীয় নয়। সুতরাং এ বিষয়ে অতীতের যেকোনো অন্যায়কে নজির হিসেবে দেখে সে অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি কখনো কাম্য হতে পারে না।
আমাদের দেশের প্রধান বিচারপতি ও উচ্চাদালতের বিচারকেরা অবসর-পরবর্তী বেতনের সমপরিমাণ অর্থ অবসরভাতা হিসেবে প্রাপ্ত হন। এরূপ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা বিচারক অবসর-পরবর্তী তার অবসরভাতার অর্ধেক বাধ্যতামূলকভাবে সমর্পণপূর্বকের বিনিময়ে আনুতোষিক গ্রহণ করে থাকেন। এরূপ একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বা বিচারক অবসরভাতার সম্পূর্ণ অংশ সমর্পণ করে এর বিনিময়ে আনুতোষিক গ্রহণ করতে পারেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যারা এরূপ আনুতোষিক গ্রহণ করেন, অবসর-পরবর্তী সময়ে তারা প্রজাতন্ত্রের কোনো পদে পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত হলে সে ক্ষেত্রে আনুতোষিক হিসেবে মাসিক ধার্যকৃত গৃহীত অর্থ নতুন পদে ধার্যকৃত মাসিক বেতন থেকে বিয়োজিত হয়; তবে বাড়ি ভাড়াভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কোনো ধরনের বিয়োজন ছাড়াই অক্ষুণœ থাকে। এ নিয়মটি ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশ অভ্যুদ্বয়-পরবর্তী প্রথম দিকে আমাদের দেশে বলবৎ ছিল। ভারত ও পাকিস্তানে এটি এখনো বলবৎ আছে।
অবসরভাতা বিষয়ে পৃথিবীব্যাপী যে স্বীকৃত নিয়ম, তা হলো অবসরকালীন প্রজাতন্ত্রের পদ থেকে অবসরে যাওয়া পদধারী অবসরভাতা হিসেবে মাসিক যে পরিমাণ অর্থপ্রাপ্ত হন এরূপ পদধারী পুনঃনিয়োগ পেলে পুনঃনিয়োগকৃত পদে যদি তিনি মাসিক ধার্য করা বেতনের সম্পূর্ণটুকু গ্রহণ করেন সে ক্ষেত্রে এটি একই পদের বিপরীতে দুইবার বেতন গ্রহণের সমরূপ। একই পদ হতে দুইবার বেতন গ্রহণের উদাহরণ পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। এটি নৈতিকতা ও নীতিজ্ঞানবিরোধী এবং আইন ও বিধিবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আমাদের দেশের আইন কমিশনে এযাবৎকাল পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত যেসব প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন অনুসন্ধানে জানা গেছে তাদের সবাই অবসরভাতা হিসেবে সম্পূর্ণ পরিমাণ অর্থপ্রাপ্ত হওয়ার পরও কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে বহাল থাকাকালীন পদের বিপরীতে ধার্যকৃত বেতনের সম্পূর্ণটুকু গ্রহণ করেছেন বা করে চলেছেন, এটি অসততা ও অন্যায়।
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা হলেও আইন কমিশন কোনো সাংবিধানিক সংস্থা নয়। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে যে কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা বিচারিক বা আধা-বিচারিক কাজের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু সংসদ সদস্য (বিরোধ নিষ্পত্তি) আইন, ১৯৮০-এর অধীন নির্বাচন কমিশনকে বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে বিবদমান উভয়পক্ষের শুনানি গ্রহণান্তে সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা প্রদান করায় নির্বাচন কমিশনের এ কাজটি আধা-বিচারিক কাজের পর্যায়ভুক্ত। তা ছাড়া সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্রের বৈধতা বা অবৈধতা বিষয়ে আপত্তি উত্থাপনপূর্বক কমিশনের সম্মুখে যে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এর সিদ্ধান্ত কমিশন দেয়। এটিও কমিশন সম্পাদিত একটি আধা-বিচারিক কার্যক্রম। আর এ কারণে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলে উভয় পদ আধা-বিচারিক পদ বিধায় তা সংবিধানের ৯৯ নং অনুচ্ছেদের অযোগ্যতাকে আকৃষ্ট করে না। অনুরূপভাবে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অথবা আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অথবা সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান অথবা পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হলে উপরিউল্লিখিত পদগুলোর কার্যক্রম বিচারিক হওয়ায় তা ৯৯ নম্বর অনুচ্ছেদের বারিত দিতে দুষ্ট হয় না। আইন কমিশন কর্তৃক উপরিউল্লিখিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার ন্যায় কোনো বিচারিক বা আধা-বিচারিক কাজ সম্পন্ন না হওয়ার কারণে অনুচ্ছেদ নম্বর ৯৯-এর দেয়া সীমাবদ্ধতাকে উপেক্ষা বা অবজ্ঞাপূর্বক কমিশনে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নিয়োগ অযোগ্যতার মধ্যে আবদ্ধ। উপরিউল্লিখিত সব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবসরভাতা হিসেবে গৃহীত অর্থ বিয়োজনপূর্বক নিয়োগ দেয়া পদের বেতন নির্ধারণের আবশ্যকতা অপরিহার্য।
সংবিধান অনুমোদন করে না এমন যেকোনো কাজ অসাংবিধানিক ও অন্যায়। এ বিষয়ে সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সন্নিবেশিত অনুচ্ছেদ ৭ক অবলোকনে প্রতীয়মান হয়Ñ কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো অসাংবিধানিক পন্থায় এ সংবিধান বা এর কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করলে কিংবা তা করার জন্য উদ্যোগ নেয়া বা ষড়যন্ত্র করলে তার এ কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হবে এবং ওই ব্যক্তিসহ তাকে সহায়তাকারী ও উসকানিদাতাও একই অপরাধে অপরাধী হবে। সংবিধান পরিপন্থী যেকোনো কাজ সংবিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যয় পরাহত করে। সুতরাং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৯ অবমাননায় একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলে সে ক্ষেত্রে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক যে আকৃষ্ট হয় এ প্রশ্নে কারো মধ্যে কোনো সংশয় থাকার কথা নয়।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail : iktederahmed@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/244431