১৩ আগস্ট ২০১৭, রবিবার, ৯:৪৬

চলতে ফিরতে দেখা

অর্থমন্ত্রী এসব কী বলছেন?

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী

গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যা বলছেন, তাতে তাকে আর সুস্থ মানুষ বলে ভাবা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তার কথাবার্তায় এই অসংলগ্নতা ধরা পড়ে সোনালী ব্যাংকের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার পর। সে সময় সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছিলেন, হলমার্ক গ্রুপ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিয়ে গেল, এর কী হবে? বিষয়টিকে অর্থমন্ত্রী একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের বিশাল অর্থনীতির মধ্যে এই সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই নয়, নাথিং।’ তার অজানা ছিল না যে, এই বিপুল অঙ্কের টাকা লুণ্ঠনের পেছনে আছেন সরকারের কোনো কোনো কর্তাব্যক্তি। ভাবখানা ছিল এই যে, তারা মিলেমিশে যদি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খেয়েই থাকেন তাহলে এমন কী দোষের হয়েছে? অর্থাৎ প্রকারান্তরে সে দিন লুটেরাদের পক্ষেই গেছে মন্ত্রীর বক্তব্য। এতে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। একটি দেশের অর্থমন্ত্রী সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠনকেও হালকা করে দেখছেনÑ এটা ছিল এক অকল্পনীয় ঘটনা। এরপর বেশ কিছুকাল ধরে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। তার একপর্যায়ে তিনি বলেছিলেন, বুড়ো মানুষ ভুল হয়ে গেছে।
কিন্তু আমরা কখনোই দেখিনি যে, অর্থনৈতিক খাতে কোনো দুর্নীতিবাজকে ধরার জন্য অর্থমন্ত্রী জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার আমলেই দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো একে একে ফোকলা হয়ে গেছে। এর মধ্যে কেলেঙ্কারির শীর্ষে ছিল সোনালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক। বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। তিনি ব্যাংকটির সাড়ে চার কোটি টাকা লুটের সহায়ক ছিলেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী কখনোই তার বিরুদ্ধে একটা কথাও বলতে শুনিনি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য কোনো তৎপরতাও লক্ষ করা যায়নি। বরং এই বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে মন্ত্রী সেখানে জনগণের আরো টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। শুধু বেসিক ব্যাংকই নয়, লুটেরা অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই রকম মনোভাব তিনি প্রদর্শন করেছেন। ফলে লুট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। সরকারি ব্যাংক থেকে লুটের টাকা ফেরত আনার কোনো ব্যবস্থাই তিনি করতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক বারবার সতর্ক করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। বাচ্চুদের খুঁটির জোর এত বেশি ছিল যে, তারা সব শক্তিকে ছাপিয়ে সমাজে বহালতবিয়তে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন।
এরপর এলো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি। তা নিয়ে অন্তহীন নাটক করলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে কত ধরনের এলোমেলো বক্তব্য যে তিনি দিয়েছেন, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। সে চুরির তদন্তে বিভিন্ন ধরনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোয়েন্দারা নানা তথ্য-প্রমাণ উদ্ধার করেছেন। তারা বারবার বলেছেন, এই রিজার্ভ চুরির পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার হাত রয়েছে। কিন্তু আবুল মাল যেন মুরগির পাখার মতো তাদের আগলে রেখেছেন। এ ঘটনা ঘটেছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এ কথা সত্য তিনি সেটা জানতে পারেন প্রায় এক মাস পর। কিন্তু তার দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি কতটা অসচেতন এ থেকে কি সেটা প্রমাণ হয় না? বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে আড়াল করেছিলেন। আতিউর পরদিনই ঘটনা জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু মুহিতকে তা জানানোর প্রয়োজনটুকু বোধ করেননি। শেষ পর্যন্ত আতিউর অবশ্য অশ্রুসিক্ত নয়নে পদত্যাগ করেছিলেন। তাকে কেউ জিজ্ঞেস করেননি, কেন এ ঘটনা ঘটল, কেন ঘটনার মাত্র চার দিন আগে এক ভারতীয় কোম্পানি ফায়ার আইয়ের কর্মকর্তা রাকেশ আস্তানাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পর্শকাতর পদ, আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এই আস্তানার হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল কম্পিউটার। যেগুলো ছিল খুবই স্পর্শকাতর। গোয়েন্দারা এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু আতিউরকে না আইনের আওতায় আনা হয়েছে, না তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ফলে এই টাকা ফিলিপিনসের রিজাল ব্যাংক হয়ে চলে গেছে সেখানকার ক্যাসিনো মার্কেটে। সেখান থেকে উধাও হয়ে গেছে শত শত কোটি টাকা।
তবে সাংবাদিকেরা যতবার মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, ততবার তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। শত শত কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লুট হয়ে যাবে, আর সে বিষয়ে তাকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না, এটা তো হতে পারে না। কার্যত এ বিষয়ে কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেন। কিন্তু গত দেড় বছরে বারবার সময় ঘোষণা করেও মন্ত্রী মুহিত সে রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। একবার তো রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলেই ফেললেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের দেরি হবে, অনেক দেরি হবে।’ কেন দেরি হবে, কেন রিপোর্ট হাতে থাকা সত্ত্বেও তা প্রকাশ করা যাবে না, সেটি কারো কাছে স্পষ্ট নয়। তবে কি এই রিজার্ভ চুরির পেছনে এমন কারো হাত আছে যা অর্থমন্ত্রীর হাতের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী? যাদের নাম প্রকাশ করা অর্থমন্ত্রীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে? সর্বশেষ, এই রিজার্ভ চুরির বিষয়ে তিনি এক বালখিল্য যুক্তি তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনই প্রকাশ করা যাবে না। কারণ এ নিয়ে ফিলিপিনসে মামলা চলছে। ফিলিপিনসে মামলা চললে কেন সত্য প্রকাশ করা যাবে না, কেন সত্য লুকিয়ে রাখতে হবেÑ এ প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি, বরং রিজার্ভ চোররা আশ্রয় পেয়েই যাচ্ছে। যুক্তিটা এরকম যে, এক ছেলের হাতের লেখা খুব খারাপ। শিক্ষক জিজ্ঞেস করলেন, তোর হাতের লেখা এত খারাপ কেন? জবাবে ছাত্রটি নির্বিকারভাবে বলল, স্যার, আমরা গরিব মানুষ সে জন্যই হাতের লেখা খারাপ।’ মন্ত্রী মুহিতের ফিলিপিনসের মামলার যুক্তিও একই রকম। অর্থাৎ ব্যাংক চুরি থেকে রিজার্ভ চুরি, সব ক্ষেত্রেই চোরদের কোনো এক অজ্ঞাত কারণে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যে টাকা লুট হয়েছে তা ব্যক্তিবিশেষের নয়Ñ সে টাকার মালিক জনগণ।
কিন্তু এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলেই মাননীয় মন্ত্রী একেবারে ফুঁসে ওঠেন। এ দেশের নাগরিকদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার নেই। এই মনোভাব বদলাতে হবে। এ রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, মন্ত্রী সাহেবরা যারা আছেন তারা জনগণের সেবক মাত্র এবং জনগণের সম্পদের রক্ষক। রাগের চোটে রাবিশ, স্টুপিড, ননসেন্স এসব অভব্য বক্তব্য দিতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ করেন না, যা স্বাভাবিক মানুষের লক্ষণ নয়। কাকে কী বলছেন, কাকে কী বলা যায় এই কাণ্ডজ্ঞান তো থাকা চাই। যে জনগণই এই রাষ্ট্রের মালিক, তাদের চুষে খাবার নানা ফন্দিফিকির কেউ করার সুযোগ পেতে পারে না। ভিন্ন মত সহ্য করার, কোনো কথা শোনার ন্যূনতম ধৈর্যও মন্ত্রীদের থাকবে না?
শুধু অর্থনীতি বলেই কথা নয়। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দিয়েছেন। এ নিয়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা হয়েছে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপিত হয়েছে। আদালত দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের নিয়ে ‘অ্যামিকাস কিউরি’ গঠন করেছেন। অ্যামিকাস কিউরিরাও বক্তব্য দিয়েছেন। দু-একজন বাদে সবাই বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী। সে বিবেচনায় এবং অন্যান্য আইনগত অসঙ্গতির কারণে বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা কিছুতেই সংসদের হাতে দেয়া যায় না। তাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ হবে। সব বিচার-বিবেচনায় নিয়ে আদালত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছেন। তা নিয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে বিচার বিভাগের কঠোর সমালোচনা করেছে, যা করার অধিকার সংসদের নেই। কেন নেই সে কথাও আইনজীবীরা উল্লেখ করেছেন। তার পরও আওয়ামী লীগ এর সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যেন আরো এক কাঠি সরেস। তিনি বলে ফেললেন, ‘আদালত ষোড়শ সংশোধনী যতবার বাতিল করবে, আমরা সংসদে ততবারই তা পাস করে যাবো।’ অর্থাৎ দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে বসলেন। কিন্তু কথাটা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে এটা বুঝতে পেরেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরদিনই তিনি বললেন, মুহিত সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি তার নিজস্ব মত। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু গত ৮ আগস্ট তিনি এক নতুন কাণ্ড ঘটালেন, সংবাদপত্র মালিক সমিতির সঙ্গে তার বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, নবম ওয়েজবোর্ড কবে নাগাদ হবে। জবাবে তিনি একেবারে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন। বললেন, সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড আননেসেসারি, টোটালি আননেসেসারি, বিকজ ইউর স্যালারি স্কেলস আর বেটার দ্যান গভর্নমেন্ট স্যালারি স্কেলস। এ কথা শোনার পর একজন সাংবাদিক বলেন, টেলিভিশনে ওয়েজ বোর্ড নেই, সব পত্রিকায় ওয়েজ বোর্ড কার্যকর নেই। এটা শোনার পর অর্থমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চান, ঢাকায় ক’টি দৈনিক পত্রিকা আছে? একজন সাংবাদিক উত্তরে বলেন, ২০১টি। মুহিত চিৎকার করে বলেন, রাবিশ, ইটস মাই আনসার টু ইউ। রাবিশ, ২০১? এ সময় তার শরীর কাঁপছিল। তাকে থামানোর চেষ্টা করেন তথ্যমন্ত্রী। পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, স্যার ঠিক আছে।
অর্থমন্ত্রী এরপর বলেন, ‘১৫টি হবে কি না আমার সন্দেহ আছে। ২০টি হতে পারে বড় জোর। এই যে, ৫০০ কতটা কী আছে খবরের কাগজ, আপনারা বের করেন; এগুলো ফলস, এখানে সব চুরি করে, অল বোগাস, ওদের জন্য বেতন স্কেল ঠিক করব? নো নট অ্যাট অল। আই উইল ফিক্স দি বেতন স্কেল ফর দিজ ফিফটিন অর টোয়েন্টি নিউজ পেপারস। সেখানে মানুষজন কাজ করে এবং এগুলোতে কী স্যালারি স্কেল আছে, আমাকে দেন।’ নিয়ম-নীতি না মেনে কিভাবে পত্রিকাগুলো চলছে? জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘কাগজ পায়, এটা পায়, ওটা পায়। আমাদের ধারণা হলো সাংবাদিকদের জন্য কোনো ওয়েজ বোর্ডের প্রয়োজন নেই।’ টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য কিসের ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণ হবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, তাহলে পথে টেলিভিশনগুলো মরে যাবে। সেটাই ডিজায়ারেবল ফর দ্যা কান্ট্রি। দুনিয়ার কোনোখানে এতগুলো টেলিভিশন স্টেশন আছে? কোনো দেশে?’ নতুন নতুন টিভির অনুমোদন তো আপনারাই দিয়েছেন। এক সাংবাদিক এ কথা বলার পর মুহিত বলেন, আমি কতবার বলেছি, এতগুলো ব্যাংক আছে, টেলিভিশন স্টেশন আছে, এগুলো থাকবে না। অটোমেটিক্যালি এগুলো মরে যাবে। কত প্রফেশন আছে দেশে। কার জন্য ওয়েজ বোর্ড করি। গভর্নমেন্ট সার্ভিস ছাড়া কারো জন্য ওয়েজ বোর্ড করা হয় না।’
বেসরকারি খাতের বেতনের ওপর কি সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছেÑ এই প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, নাই। সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজ বোর্ড সব সময় ছিলÑ এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এটা রং, রং। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মন্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে আপনি এসব কথা বলছেন, প্রকৃত তথ্য পাননিÑ একজন সাংবাদিকের এই বক্তব্যের পর মুহিত বলেনÑ স্যালারি স্কেলটা কী আছে? ইফ আই ফাইন্ড ইট ইজ অ্যাবাঙ দি স্যালারি স্কেল অব দ্য গভর্নমেন্ট, আই শ্যাল নট কনস্টিটিউট ওয়েজ বোর্ড। লিসেন, মাই ইন্টারেস্ট ইজ নো ওয়ান শুড বি গিভেন দ্য স্যালারি। সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকদের তো এমন কোনো সুযোগ নেই।’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদেরও প্রভিডেন্ট ফান্ড আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে। কিন্তু সরকারি অফিসে তো তা নেই। এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মাস্টার্স পাস করা পিয়নও আমাদের আছে। ১৬ হাজার টাকা বেতন পায়। এরপর কথা অসমাপ্ত রেখেই অর্থমন্ত্রী চলে যান।
কথাবার্তার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয় যে, তিনি সাংবাদিকদের ওপর খুবই রাগ করে আছেন। কারণ সাংবাদিকেরা তাকে নানা প্রশ্ন করেন। ব্যাংক চুরি, রিজার্ভ চুরি নিয়ে প্রশ্ন করেন, যার জবাব তার কাছে নেই। ফলে তিনি সাংবাদিকদের ডিগনিটিতেও আঘাত করতে ছাড়েননি। তাদের তার অফিসের পিয়নের সমকক্ষ বলে তুলনা করেছেন। ব্যাংক বা টেলিভিশনের অনুমোদন সরকারই দিয়েছে। তিনিও বলেছিলেন, এসব ব্যাংকের অনুমোদন তিনি দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়োজন যদি না থাকে, তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ অনুমোদন কেন দিলেন? এরও জবাব নেই মুহিতের কাছে। এবারো তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি পরদিন বললেন, সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ডের কাজ ৮০ শতাংশ এগিয়ে গেছে।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/243541