১৩ আগস্ট ২০১৭, রবিবার, ৯:৪৩

অনিয়মের তদন্ত হতে বাধা কোথায়?

গেল সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে পত্রিকায় একাধিক সংবাদ ছাপা হয়েছে, যার কোনো কোনোটি উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের ভূমিকাকে একটি বড় ধরনের প্রশ্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। সমসাময়িককালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উপাচার্য এ ধরনের বিতর্কের মাঝে পড়েছিলেন বলে আমার জানা নেই। শুধু তাই নয়, তার ভূমিকা, বিশেষ করে অযোগ্যদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের অভিযোগ, প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, অনৈতিক পন্থায় সিনেট অধিবেশন ডেকে তৃতীয়বারের মতো উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছে। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ৭টি কলেজের ছাত্রদের আন্দোলন এবং পুলিশের টিয়ারগ্যাস শেলে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা সিদ্দিকুর রহমানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার উপাচার্য এড়াতে পারেন কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে। আমার দুঃখ লাগে যখন দেখি এ ঘটনায় উপাচার্য অনুশোচনা কিংবা হাসপাতালে গিয়ে সিদ্দিকুরের প্রতি সমবেদনা জানাননি, অথচ স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন সমবেদনা।


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন ছাত্রদের পরীক্ষা নেয়ার জন্য। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এখানেই রয়েছে সমস্যা। এখানেই সুশাসনের অভাব রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। আর উপাচার্য মহোদয়ের ‘অতি রাজনীতি’র কারণে তিনি এ সুশাসনটি নিশ্চিত করতে পারেননি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও ওই অপশাসনের শিকার হয়েছি। একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বিভাগের আমি দ্বিতীয় পরীক্ষক ছিলাম। আমার অনেক ‘বিল’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিশোধ করেনি। এরপর গত দশ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরীক্ষার সঙ্গে আমি আর সম্পৃক্ত থাকিনি। সর্বশেষ ঘটনায় একটি পিএইচডি থিসিস (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ) কমিটির বহিঃস্থ সদস্য ও সভাপতি ছিলাম। সেটি বোধকরি ৬-৭ বছর আগের কথা। উপাচার্য মহোদয়কে আমি লিখিত ও মৌখিকভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি ‘বিল’ পরিশোধের বিষয়টি। কিন্তু তিনি এত ‘ব্যস্ত’ থাকেন যে একজন শিক্ষকের চিঠির জবাব দেয়ার সময় পান না। এখানেই এসে যায় দায়িত্বহীনতা ও সুশাসনের অভাবের প্রশ্নটি। আজকে যে ঘটনায় সিদ্দিকুর ‘অন্ধত্ব’বরণ করতে যাচ্ছেন, তার জন্য ব্যক্তিগতভাবে হয়তো উপাচার্যকে দায়ী করা যাবে না। কিন্তু যিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ভার তো তাকেই বহন করতে হবে। ভারতের মতো দেশে একজন উপাচার্য এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পদত্যাগ করেছিলেন। আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতি নেই।

সাম্প্রতিককালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা আমি হালকাভাবে নিতে চাই না। একটি বড় ধরনের ‘বিতর্কের’ জন্ম দিয়েছেন উপাচার্য সিনেট সভা আহ্বান করে। এ নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকদের হাতাহাতির খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। সিনেট সভা আহ্বান করা হয়েছিল তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি উপাচার্য প্যানেল গঠন করার জন্য। অভিযোগ উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্য থেকে যে ২৫ জন প্রতিনিধি থাকেন, তাদের প্রতিনিধি নির্ধারণ বা নির্বাচন না করেই গত ২৯ জুলাই এ সিনেট সভা আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন ১২ জন শিক্ষকসহ ১৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সিনেট সভা স্থগিত করে দেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে চেম্বার আদালত আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি ৩০ জুলাই শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে ২৯ জুলাই সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি প্যানেল নির্বাচন করা হয়, যার মাঝে উপাচার্য স্বয়ং ছিলেন এক নম্বরে। কিন্তু আপিল বিভাগের কাছে এ প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য হয়নি। আপিল বিভাগ তিন সদস্যের প্যানেলের পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে উপাচার্য তার দায়িত্ব পালন করে যেতে পারবেন বটে, কিন্তু তার উচ্চাকাক্সক্ষার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক্ষতি হল, তা পূরণ হবে কীভাবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমার দুঃখ লাগে কেন তিনি এ কাজটি করতে গেলেন। তার মেয়াদ শেষ হবে ২৪ আগস্ট। সুতরাং বোঝাই যায় অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে তিনি সিনেটের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিলেন। তিনি তৃতীয় মেয়াদের জন্য উপাচার্য হতে চেয়েছিলেন। এর কি প্রয়োজন ছিল? একজন সজ্জন ব্যক্তি তিনি। তবে তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড তার সম্মানকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেনি। একজন উপাচার্যের জন্য দু’টার্মই সঠিক। আর কেন? নতুনদের সুযোগ দেয়া উচিত।

উপাচার্য মহোদয় নিজে নিজেকে বিতর্কিত করেছেন বলে মনে করেন অনেকে। গেল দুই বছর নিয়ম ভেঙে ৫০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর গত সাড়ে আট বছরে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৯০৭ জন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তে ছিল মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সব কটিতে প্রথম শ্রেণী থাকতে হবে। কিন্তু বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগ, দর্শন, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মুদ্রণ ও প্রকাশনা বিদ্যা, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংসহ একাধিক বিভাগে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের অনেকেই এ শর্ত পূরণ করেননি। একটি জাতীয় দৈনিকে তাদের নাম-ধাম দেয়া হয়েছে (কালের কণ্ঠ, ৪ আগস্ট)। বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে একাধিক। এটা যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নতুন নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু ‘অযোগ্যদের’ পুনর্বাসনের জন্য। কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছাত্রলীগ নেতা অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং যার ছবি পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল, তাকেও পরিসংখ্যান বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর এসব নিয়োগের পেছনে রয়েছে রাজনীতি তথা দলীয়করণ। যিনি ছাত্রলীগ করেছেন, তাকে ও তার স্ত্রীকে নিয়োগ দেয়া কতটা নীতিসম্মত সেটা এক প্রশ্ন। আর এ অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে বিরোধী সাদা গ্রুপ থেকে নয়, বরং আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দল থেকে। তাদের বক্তব্যও ছাপা হয়েছে সংবাদপত্রে। আর এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্যটি ছিল যথেষ্ট যুগোপযোগী। তিনি মন্তব্য করেছেন, শিক্ষক নিয়োগে ঐতিহ্য হারিয়েছে ঢাবি (যুগান্তর, ৪ আগস্ট)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে নিয়োগ পাওয়া জনৈক তোফায়েল আহমদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। তখন প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্যটি করেন। দেশের প্রধান বিচারপতি যখন এ ধরনের একটি মন্তব্য করেন, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান কোথায় থাকে? এর দায়ভার কি উপাচার্য মহোদয়ের ওপর বর্তায় না? যদিও এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি কোনো অনিয়মের কথা স্বীকার করেননি। বলেছেন, প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ কমিটিতে সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য।

অতীতে কোনো উপাচার্যের আমলে এমনটি হয়নি। ব্যক্তি আরেফিন সিদ্দিক আমার খুব পছন্দের। ভালো মানুষ তিনি। কোনো ধরনের অহংকার তার মধ্যে আমি দেখিনি। অন্য উপাচার্যদের মতো ‘সবকিছু’ ফেলে তিনি ‘টকশো’ নিয়ে পড়ে থাকেন না। খুব কমই টকশোতে যান। একাধিক টকশোতে আমি তার সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেছি। তিনি সরাসরিই আওয়ামী লীগ করেন। দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে দলীয় চিন্তা-চেতনা তিনি বিবেচনায় নেবেন, এটা আমি চিন্তাও করিনি। কোর্ট যখন কোনো রুলিং দেন তখন তার সেই ‘ভালো মানুষের’ ইমেজটি আর থাকে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র হিসেবে আমি লজ্জিত ও দুঃখিত। এখন তিনি কী করবেন, আমি জানি না। তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে ২৪ আগস্ট। এর অর্থ পরিষ্কার। এ সময়ের মধ্যে সিনেট অধিবেশনও হচ্ছে না। আর তিনিও তৃতীয় টার্মের জন্য প্যানেলে থাকতে পারছেন না। এক ধরনের অপবাদ নিয়ে তিনি তার পদ ছাড়ছেন। নিশ্চই তিনি উপলব্ধি করবেন তার ভুলগুলো কোথায় ছিল। তাকে যারা পরামর্শ দিয়েছিলেন, তারা সঠিক পরামর্শ দেননি। সুশাসনের চরম অবনতি ঘটেছিল। অভিযোগ আছে, তিনি ‘শিক্ষক রাজনীতি’ নিয়ে এত ব্যস্ত থাকতেন যে, সুশাসন নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ নেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, বেআইনিভাবে সিনেট অধিবেশন ডাকা এবং তা উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত হয়ে যাওয়া কিংবা শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য- এসব ঘটনা অন্তত একটি মেসেজ আমাদের দিচ্ছে। আর তা হচ্ছে, দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ আর যাই হোক, উচ্চশিক্ষার মান সমৃদ্ধ করতে পারে না, বরং প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ যে দুরবস্থা, তার পেছনে কাজ করছে এ শিক্ষক রাজনীতি তথা অযোগ্যদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদান। জানি না পরবর্তী উপাচার্য কে হবেন। এখানে তো ভালো ও যোগ্য শিক্ষকের কোনো সম্মান নেই। এখানে গুরুত্ব পায় শিক্ষক রাজনীতি। যিনি শিক্ষক রাজনীতিতে যোগ্য, তিনিই উপাচার্য হন, ইউজিসির সদস্য হন। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের কোনো পিএইচডি নেই বলে প্রশ্ন তোলে, তখন সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বৈকি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কি এ ধরনের প্রশ্ন তুলতে পারে? ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কোনো নেতিবাচক সংবাদ যেমন আমাকে কষ্ট দেয়, ঠিক তেমনি ইউজিসি নিয়ে কোনো মন্তব্যও আমাকে কষ্ট দেয়। এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না, এমনটাই আমরা প্রত্যাশা করি। রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ হলে শিক্ষক নিয়োগে এমনটিই ঘটবে। একজন ভালো ও যোগ্য শিক্ষকই আরেকজন যোগ্য শিক্ষক তৈরি করতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই শুধু নয়, প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষক নিয়োগে এ অনিয়মের খবর আমরা পাই। এ ক্ষেত্রে যা করা দরকার তা হচ্ছে, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটি ছেড়ে দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হাতে। অথবা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো একটি কমিশন গঠন করতে হবে, যাদের কাজ হবে দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া। আর তিন স্তরে (মূল রেজাল্ট, লিখিত পরীক্ষা ও প্রেজেনটেশন) এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নিয়োগপ্রাপ্তকে এক বছর ‘রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবে সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে একটি গবেষণাকর্ম সম্পন্ন করতে হবে। তারপরই তিনি প্রভাষক হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পাবেন। ইউরোপে এ সিস্টেম চালু রয়েছে। একসময় যেভাবে শিক্ষক নিয়োগ হতো, আজ সেভাবে শিক্ষক নিয়োগ হওয়া উচিত নয়। সময় অনেক বদলে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও বেড়েছে। দুঃখ লাগে এ জন্যই, যাদের এসব ভাবার কথা, তারা এসব নিয়ে ভাবেন না। ইউজিসির চেয়ারম্যানের কোনো ভূমিকা আমি দেখি না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন সংকটে, তখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

সবকিছু নিয়মের মধ্যে আসুক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জনপ্রিয় হয়েও অনেকগুলো অপবাদের বোঝা মাথায় নিয়েই তিনি এখন চলে যাচ্ছেন। এরপর যিনি উপাচার্য হয়ে আসবেন, তিনি নিশ্চয়ই এ থেকে শিক্ষা নেবেন। আমরা শুধু এটুকু প্রত্যাশাই করতে পারি।

পুনশ্চ : উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি অভিযোগ এনেছেন কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে। রবীন্দ্রনাথ মানুষের ওপর আস্থা হারাতে নিষেধ করেছিলেন। তাই তার প্রতি আস্থা রেখেই বলতে চাই- একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হোক, যারা অনিয়মগুলো তদন্ত করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির কি সেই ‘সাহস’ আছে?

ড. তারেক শামসুর রেহমান : প্রফেসর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

tsrahmanbd@yahoo.com

http://www.jugantor.com/window/2017/08/13/147694/