৯ আগস্ট ২০১৭, বুধবার, ১০:২৪

নিষেধাজ্ঞা না মেনে বসছে পশুর হাট

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে বসবে ২২টি পশুর হাট। এর মধ্যে ৯টি বসবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে (ডিএসসিসি) ১৩টি। এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, পার্ক, রাস্তা ও রেললাইনের পাশে হাট না বসাতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ নির্দেশনা না মেনে ডিএসসিসিতে ১০টি ও ডিএনসিসিতে তিনটি হাট বসানো হচ্ছে। একই অবস্থা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-২) মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন স্বাক্ষরিত চিঠিটি চলতি মাসের ২ তারিখে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসক, পৌরসভা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর পাঠানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে পশু বিক্রির জন্য অস্থায়ী হাট বসে। এ লক্ষ্যে জেলা/উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ, খেলার মাঠ, সড়ক/মহাসড়ক ও রেললাইনের সন্নিকটে ফাঁকা জায়গায় হাট বসানো হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসালে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে। তেমনি খেলার মাঠ, সড়ক/মহাসড়ক ও রেললাইনের সন্নিকটে পশুর হাট বসালে পরিবেশ বিনষ্টসহ জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ, খেলার মাঠ, রেললাইন ও সড়ক/মহাসড়কের সন্নিকটসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন স্থানে পশুর অস্থায়ী হাট না বসানোর জন্য নির্দেশানুক্রমে অনুরোধ করা হলো। ’
কিন্তু এ নির্দেশনা না মেনে ডিএসসিসি এলাকায় ১৩টি অস্থায়ী হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে মেরাদিয়া বাজার, উত্তর শাহজাহানপুর-খিলগাঁও রেলগেট বাজারসংলগ্ন মৈত্রী সংঘের মাঠ, ব্রাদার্স ইউনিয়নসংলগ্ন বালুর মাঠ, কমলাপুর স্টেডিয়ামের আশপাশের খালি জায়গা, জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, কামরাঙ্গীর চর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন জায়গা, আরমানিটোলা খেলার মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ এবং সাদেক হোসেন খোকা মাঠসংলগ্ন ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড ও সংলগ্ন খালি জায়গা। এর মধ্যে আটটি হাটের ইজারা হয়ে গেছে। বাকি পাঁচটির জন্য কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় পুনঃ দরপত্র ডাকা হয়েছে। এই ১৩টি হাটের মধ্যে ১০টিই খেলার মাঠ, রেললাইন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে বসছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) খান মোহাম্মদ বিলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের পত্রটি পেয়েছি। কিন্তু
রাজধানীতে তো তেমন খালি জায়গা নেই। তবে হাটের জন্য যাতে বাড়তি ভোগান্তি সৃষ্টি না হয় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ নজর রাখব। এ ছাড়া হাট শেষ হওয়ার পর দ্রুত তা পরিষ্কার করে ফেলব। ’
অন্যদিকে ডিএনসিসি এ বছর ৯টি অস্থায়ী হাটের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে আছে কুড়িল ৩০০ ফুট রাস্তার পাশে, বসিলা ব্রিজসংলগ্ন স্থান, মিরপুর ডিওএইচএস, উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টর, খিলক্ষেত বনরূপা, আশিয়ান সিটি, ভাটারার সাঈদনগর, আফতাবনগর ও মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশন। এর মধ্যে কুড়িল ৩০০ ফুট, বসিলা ব্রিজ ও উত্তরা ১৫ নম্বর সেকশনের হাট তিনটি রাস্তায় চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম (উপসচিব) বলেন, ‘নাগরিক দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে গতবারের চেয়ে কম হাট বসানো হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু হাট রাস্তাসংলগ্ন হয়েছে। তবে খেলার মাঠ, পার্ক ও রেললাইনসংলগ্ন হাট আমরা বাদ দিয়েছি। হাটের জন্য যাতে চলাচলে ঝামেলা না হয় সেদিকে আমরা নজর রাখব। 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2017/08/09/529477