৫ আগস্ট ২০১৭, শনিবার, ১২:২২

কাঁচামরিচের কেজি ১৩০ টাকা

গত দুই সপ্তাহে ঘন ঘন বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে বেশির ভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। আবার কিছু সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে সব থেকে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে

১৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে পণ্যটির কেজি ১০০ টাকার ঘরে ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে কাঁচামালের সরবরাহ কমে গেছে, এ অজুহাতে সবজিসহ কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও আলুর দাম বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে মাছের দরও বেশ চড়া। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। অনেকে বাড়তি দামের কারণে কাঙ্ক্ষিত পণ্য কিনতে পারছেন না।

ব্যবসায়ীরা জানান, অতি বর্ষণে রাজধানীর বড় বড় পাইকারি বাজারগুলোতে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারেনি। অনেক স্থানে কাঁচাপণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এসব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দাম আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বেগুন কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা; শিম ১২০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা; দেশি টমেটো ১০০ টাকা; শসা ৬০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা; পটোল ৫০-৫৫ টাকা; ঢেঁড়স ৫০-৫৫ টাকা; ঝিঙ্গা ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা ৫০-৫৫ টাকা; করলা ৫০-৫৫ টাকা; কাঁকরোল ৫০ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৫০-৫৫ টাকা; আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ ১২ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাওরান বাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতা সজিব জানান, কয়েক মাস ধরেই পটোল, ঝিঙ্গা, ধুন্দুল, করলা, ঢেঁড়সসহ প্রায় সব সবজির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

আরেক বিক্রেতা জানান, টানা বৃষ্টিতে স্থবিরতা ছাড়াও খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট ও যানজটের কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে বাজারে সময়মতো সবজির ট্রাক পৌঁছাতে পারছে না। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।

ক্রেতা সাকিল রহমান বলেন, সব ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষদের। একদিকে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় কষ্ট হচ্ছে; অন্যদিকে বর্ষার কারণে সবজির দাম বেড়ে গেছে। কোনো দিকেই স্বস্তি নেই। এভাবে চললে জীবনযাপন করাই কঠিন।

কাওরান বাজার ক্ষুদ্র আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি এটিএম ফারুক বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে আড়াইশর বেশি ট্রাক সবজি নিয়ে প্রবেশ করে। বৃষ্টি ও পানির কারণে বেশির ভাগ ট্রাকই বাজারে ঢুকতে পারেনি। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা।

এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া মাছের দাম কমেনি। উল্টো আরো বেড়েছে। বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ২৫০-৩৫০, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০, কাতল ৩৫০-৪০০, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০, সিলভারকার্প ২০০-২৫০, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ৫ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=77228&cat=3