রাজধানীর বাজারে প্রচুর সবজি থাকলেও দাম আকাশচুম্বি। মহাখালি বাজার থেকে তোলা ছবি
৫ আগস্ট ২০১৭, শনিবার, ১২:০১

৩০ টাকার পেঁয়াজ দুই সপ্তাহে ৫০-এ

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে হু হু করে। গত দুই সপ্তাহে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। ৩০ টাকার দেশী পেঁয়াজ এক লাফে ৫০ টাকায় উঠেছে। ২২ থেকে বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ। দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে সবজি, মাছ, ডিম ও আলুর। মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে রাজধানীসহ সারা দেশে টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্লেষকদের অনুমান, কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে ব্যবসায়ীরা এবার পেঁয়াজের দাম আগেভাগেই বাড়িয়ে দিয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পেঁয়াজের দাম আট দিনের মধ্যে দুই দফায় ২০ টাকা বেড়েছে। তারা জানান, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪০ টাকা দরে; যা এর আগের সপ্তাহে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। খুচরা পর্যায়ে গতকাল প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছিল ৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে সংরক্ষিত পেঁয়াজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন পর্যায়ের কৃষকেরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আগের সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি বেগুন ৬০ থেকে ৮০, শিম ১২০ থেকে ১৪০, টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০, শসা ৫০ থেকে ৫৫, কচুরলতি ৬০ থেকে ৬৫, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০, ঝিঙে ৬০ থেকে ৭০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৬৫, করলা ৫০ থেকে ৬০, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৫৫, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৭০, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৫০, ফুলকপি ৪০, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৪৫ ও লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। শাকের মধ্যে পালংশাকের আঁটি ২০, লালশাক ২০, পুঁইশাক ৩০ ও লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

মুদি দোকানে গতকাল প্রতি কেজি ছোলা ৮৫, দেশী মুগ ডাল ১৩০, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০, মাষকলাই ১৩৫, দেশী মসুর ডাল ১২৫ ও ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। দেশী পেঁয়াজ ৫০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৮, দেশী রসুন ১১০ ও ভারতীয় রসুন বিক্রি হয় ১৩০ টাকা দরে। ব্র্যান্ডভেদে ভোজ্যতেলের ৫ লিটারের বোতল ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ৫৩০ থেকে ৫৪০, প্রতি লিটারে ১ থেকে ২ টাকা বেড়ে ১০৭ থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হয়। ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে ৫ টাকা। ৯০ টাকার ডিম এখন ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ থেকে ১৬০, লেয়ার মুরগি ২২০ ও পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর গোশত ৫০০ থেকে ৫২০ ও খাসির গোশত ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ বাড়লেও বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। তবে মোটা চালের দাম গত তিন সপ্তাহে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা কমেছে বলে দাবি করেন খুচরা বিক্রেতারা। বাজারে গতকাল মোটা স্বর্ণা চাল ৪৪ থেকে ৪৫, পারিজা চাল ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ ছাড়া ভালো মানের মিনিকেট ৫৪ থেকে ৫৮, সাধারণ মিনিকেট ৫২ থেকে ৫৪, বিআর২৮ ৪৮, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫০, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫২ থেকে ৫৪, পাইজাম চাল ৪৮ থেকে ৫০, বাসমতি ৫৩ থেকে ৫৮, কাটারিভোগ ৭২ থেকে ৭৫ ও পোলাও চাল ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।

বাজারে গতকাল আকারভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০, সরপুঁটি ৩৫০ থেকে ৪৫০, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪০০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০, সিলভারকার্প ২০০ থেকে ২৫০, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ২৫০, টেংরা ৬০০, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০, আকারভেদে প্রতিটি ইলিশ ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারে প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/241598