১৮ জুলাই ২০১৭, মঙ্গলবার, ১১:৩৩

আবারো এক সপ্তাহের সময় পেল রাষ্ট্রপক্ষ

নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে রাষ্ট্রপকে আবারো এক সপ্তাহের সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে রাষ্ট্রপরে আবেদনের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন।
গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় চেয়ে লিখিত আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি তাকে বলেন, সব সময় মনে রাখবেন, সরকার এবং প্রধান বিচারপতির মধ্যে ব্রিজ হলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এরপর সময় আবেদনের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নট দিস উইক।’
গত ২ জুলাই সরকারকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে আপিল বিভাগ বলেছিলেন, এটাই ‘শেষ সুযোগ’। আপিল বিভাগ এর আগেও কয়েকবার ‘শেষ সুযোগ’ উল্লেখ করে সময় দিয়েছেন; তারপরও রাষ্ট্রপ দফায় দফায় সময় নিয়েছে।
এ দিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত রোববার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সাথে প্রায় এক ঘণ্টা একান্তে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিধিমালার গেজেট বৃহস্পতিবার নাগাদ হয়ে যাবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব ধরনের আলাপ-আলোচনা করছি, যেটা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই হবে। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেলে আবার প্রধান বিচারপতির সাথে বসবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমার মনে হয়, বৃহস্পতিবার নাগাদ বিষয়টি সম্পন্ন হয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত শুনানি করে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করতে ঐতিহাসিক এক রায় দেন। ওই রায়ে আপিল বিভাগ বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থী ও বাতিল ঘোষণা করেন। একই সাথে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেন সর্বোচ্চ আদালত।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে গত ২৮ আগস্ট শুনানিতে জানান আপিল বিভাগ। এরপর ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। সেই সাথে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। এরপর দফায় দফায় সময় দেয়া হলেও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে ওই বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়নি।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/236684