১৮ জুলাই ২০১৭, মঙ্গলবার, ১১:৩০

এমপিও নিয়ে ভয়াবহ দুর্নীতি টনক নড়ল মাউশির

মাঠপর্যায়ে অনলাইনে এমপিও কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের তথ্য সংগ্রহে ২০টি দল গঠন করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। সংস্থাটির ৪০ কর্মকর্তাকে জেলাভিত্তিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তৈরি করা হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে মাউশি পরিচালক অধ্যাপক এলিয়াছ হোসেন সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘দেশব্যাপী বিদ্যমান অনলাইন এমপিও কার্যক্রম মনিটরিং ও হালনাগাদ বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কিছু টিম গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি করা হয়নি।’
এর আগে সংস্থাটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেছিলেন, এমপিও সংক্রান্ত কাজে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। এজন্য শিগগির সারা দেশে টিম পাঠানোর চিন্তাভাবনা করছি। ওইসব টিম প্রয়োজনে ১০-১৫ দিন সরেজমিন কাজ করবে। প্রয়োজনে তারা এমপিও’র জন্য আবেদনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে দোষীদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোববার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মাউশি পরিদর্শন করেন। তখন খোদ মহাপরিচালকসহ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা এমপিও কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করেন। ওইসব শুনে শিক্ষামন্ত্রী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বলেন, ‘আপনারা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা আমাকে জানান। নাম দেন, আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব?’
মাউশি সূত্র জানায়, এর পরিপ্রেক্ষিতেই মাউশি ২০ টিম গঠন করেছে। দুই সদস্যের টিমে একজন দলনেতার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে টিমে যারা স্থান পেয়েছেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই এর আগে এমপিও কাজে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। পাশাপাশি আছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বদলি, পরিদর্শন, তদন্ত কাজে উৎকোচ নেয়ার বিস্তর অভিযোগ। এ কারণে ঘুষ-বাণিজ্যের সরেজমিন অনুসন্ধান কতটা খাঁটি হবে, তা নিয়ে খোদ মাউশিরই অনেক কর্মকর্তার সংশয় আছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা এ কাজে সদস্য বাড়িয়ে শিক্ষক নেতা, স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং সুশীল সমাজের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে মাউশির মধ্যম বা নিচের সারির কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে নামের প্রস্তাব না নেয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। জানা গেছে, টিমগুলোকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা প্রস্তাবনায় বলা আছে। প্রত্যেক টিম সর্বনিন্ম তিন জেলার দায়িত্ব পাচ্ছে। টিমে জায়গা পাওয়া ৪০ সদস্যের সবাই মাউশির কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, ৯ জুলাই যুগান্তরে ‘এমপিওভুক্তির সাতকাহন : ঘুষ দিতে হয় চার ঘাটে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/07/18/140597/