২৯ জুলাই ২০১৭, শনিবার, ১০:৩৯

সবজির দাম লাগামছাড়া

বেড়েছে পেঁয়াজ আদা, কাঁচা মরিচের দামও

দাম বেড়েছে বেশকিছু সবজির। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ, আদা ও কাঁচা মরিচের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে নতুন করে দাম বাড়েনি চাল, মাছ, তেল, মুরগি ও অন্যান্য মাংসের। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শেওড়াপাড়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারি বর্ষণ ও বন্যার কারণে অনেক সবজির ক্ষেত মরে যাচ্ছে। ফলে দাম বাড়ছে। কিন্তু ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলছেন, সবই কারসাজি। একটু ছুতা পেলেই দাম বাড়ানো অপকৌশল ছাড়া কিছুই নয়। বন্যার পানি নেমে গেছে বেশ কয়েকদিন আগেই। তারপরও কেন হঠাৎ করেই সবজির দাম বাড়ল, এ প্রশ্নের উত্তর কে দেবে।
দাম বৃদ্ধির তালিকায় থাকা সবজিগুলোর মধ্যে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। শসা বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০। পটোল ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা। চিচিঙ্গা ৫০, যা আগে ছিল ৪০ টাকা। টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-৯০ টাকা। ঢেঁড়স ৫০ টাকা, আগে ছিল ৩০ টাকা। করলা ৬০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। ধনেপাতা বিক্রি ১২০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে ছিল ৮০-৯০ টাকা। এছাড়া কচু ৪০, বরবটি ৬০, পেঁপে ২৬, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩৫ টাকা।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা কাওসার হামিদ জুয়েল বলেন, এখন চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজির গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। শেওড়াপাড়া বাজারে কথা হয় সরকারি চাকরিজীবী আবদুল্লাহ আল শাহীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এটা আমাদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও চালের দাম, কখনও তেলের দাম, আবার কখনও সবজির দাম বাড়বেই। আমরা বাধ্য হয়েই সব মুখ বুজে সহ্য করে কিনব। তিনি জানান, বাজারে বাড়তি দাম নেয়া হয়, কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি দামে বিক্রি করছেন ভ্যানে করে সবজি বিক্রেতারা। এসব অরাজকতা দেখার কেউ নেই। এদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ২৮ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ ২৮ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩-২৫ টাকা। আদা ১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা। কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা, তার আগের সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। এসব পণ্যের দাম বাড়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সরবরাহ কম।
চালের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। সব ধরনের চাল বিক্রি হয়েছে গত সপ্তাহের দামেই। গুটি স্বর্ণা বিক্রি হয় ৩৯-৪০ টাকা কেজি দরে। তবে অন্যান্য চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া জানান, গত সপ্তাহের দামেই সরু চালসহ সব ধরনের চাল বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন করে বাড়া বা কমা কোনোটিই হয়নি।
ইলিশের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া বিক্রি হয়েছে ১৭শ’ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬শ’ টাকা। ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩শ’ টাকা জোড়া, যা আগে ছিল ১৪শ’ টাকা। রূপচাঁদা, পাঙাশ, রুই-কাতলা, নলা, তেলাপিয়া, চিংড়ি ও কইমাছ আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। ইলিশের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শুকুর আলী জানান, বর্তমানে নদীতে পানি বেশি হওয়ায় মাছ কম ধরা পড়ছে। তাই দামটা একটু বেশি।
খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা কেজি দরে, আমদানি রসুন ১০০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ৮০-৯০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০-২২৫ টাকা কেজি, সাদা লেয়ার ১৬৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা কেজি, খাসি ৭৫০ এবং বকরির মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।


http://www.jugantor.com/last-page/2017/07/29/143664/