২৯ জুলাই ২০১৭, শনিবার, ১০:৩০

৫৭ ধারা গরল, না অমৃত?

এম আবদুল্লাহ

এই সময়ে সবচেয়ে আলোচিত সংখ্যাটি কত? শুধু আলোচিত নয়, সর্বাধিক উচ্চারিত, মুদ্রিত, নিন্দিত সংখ্যা কোনটি? নিঃসন্দেহে জবাব আসবে, ৫৭। মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে পথসভা পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রী থেকে ছাপোষা সংবাদকর্মী ৫৭ নিয়ে সরব। শাসক শ্রেণীর কল্যাণে একটি সংখ্যা কতটা গণধিক্কার কুড়াতে পারে তারও উদাহরণ, এই ৫৭।
এক সময় এমন সংখ্যা ছিল ‘৫৪’। দীর্ঘ দিন ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৫৪ ধারার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও লেখালেখি হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের বিরুদ্ধে এটি ছিল পুলিশের মোক্ষম অস্ত্র। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার ও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদসংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। একপর্যায়ে সংশোধনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সরকার আপিলে যায়। শেষ পর্যন্ত গত বছর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার নিপীড়ন থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি মেলে।
আলোচ্য ৫৭ ধারাটির আবির্ভাব ঘটেছে ২০১৩ সালে। ২০০৬ সালে প্রবর্তিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সংশোধন করে এ কালো ধারাটিসহ কয়েকটি নিপীড়নমূলক বিধান যুক্ত করেছে বর্তমান সরকার। এর প্রধান টার্গেট হয়ে ওঠেন সাংবাদিকেরা। এ ধারায় কী আছে বা কেন এটি ধিকৃত হচ্ছে, তা এরই মধ্যে জেনে গেছেন দেশের সচেতন মানুষ। সরকারি ও বিরোধী মতের সংবাদকর্মীরা অভিন্ন কণ্ঠে সোচ্চার এ নিবর্তনমূলক ধারা বিলোপের দাবিতে। এ ধারার প্রয়োগ বা অপপ্রয়োগ নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে নতুন করে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।
২৪ জুলাই মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় স্থান পায় ৫৭ ধারা। এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ৫৭ ধারায় কোনো সাংবাদিক হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে আইসিটি অ্যাক্টের এ ধারাটির পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘৫৭ ধারা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রণীত হয়নি। এটি গণমাধ্যমের বিষয় নয়। সাংবাদিকতার জন্য কারো বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা হয়নি। মামলা হয়েছে সাইবার অপরাধের অভিযোগে, এটা সব নাগরিকের েেত্র প্রযোজ্য।’ দৈনিক প্রথম আলোসহ কয়েকটি পত্রিকার খবর অনুযায়ী, তথ্যমন্ত্রীর সাফাই বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনলেও প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
মূলধারার অন্য বেশ কয়েকটি পত্রিকা ও একাধিক অনলাইন পোর্টালে একই খবরের শিরোনাম করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘৫৭ ধারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়।’ এসব রিপোর্টে বলা হয়েছে, তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, এই ধারায় কতজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং কতজন সাংবাদিক জেলে আছেন। প্রশ্নের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কয়েকটি মন্তব্যও গণমাধ্যমে এসেছে। তাতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেনÑ ‘যারা এই ধারা ব্যবহার করে সাংবাদিকদের নামে মামলা করেছে, তারা তো সরকারের কেউ না। এই মামলাগুলো যারা করেছে, তারা ব্যক্তিগতভাবে করেছে। সরকার তো কোনো সাংবাদিকের নামে মামলা করেনি। সাংবাদিকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে সরকার এই আইন করেনি।’
প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্যগুলো প্রকারান্তরে ৫৭ ধারার পক্ষে। তারা যে যুক্তি ও প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তাতে পরিষ্কার ইঙ্গিত মিলছে যে, ৫৭ ধারা ভিন্ন মোড়কে হলেও বহাল থাকবে। অথচ সাংবাদিক সমাজসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের তীব্র সমালোচনা ও দাবির মুখে আইনমন্ত্রী এরই মধ্যে একাধিকবার জানিয়েছেন, ৫৭ ধারা থাকছে না।
এখন দেখা যাক, ৫৭ ধারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কি না বা সাংবাদিকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে কি না। সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় কোনো মামলা করেনি বলে যে দাবি করা হচ্ছে তারই বা সত্যতা কতটুকু? কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করলেই আশা করি তা পরিষ্কার হবে।
গত বছর ৯ আগস্ট পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলামেইলের তিনজন সাংবাদিককে রাত ১০টার পর কর্মরত অবস্থায় অফিস থেকে র্যাব তুলে নিয়ে যায়। পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহাদাত উল্লাহ খান, নির্বাহী সম্পাদক মাকসুদুল হায়দার চৌধুরী ও স্টাফ রিপোর্টার প্রান্ত পলাশকে ধরে নেয়ার পরদিন ৫৭ ধারায় মামলা করে রিমান্ডে নেয়া হয়। তিন সাংবাদিককে কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে আদালতে হাজির করার দৃশ্য সাংবাদিকসমাজকে বিক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত করেছে। অভিযোগ আনা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের। যদিও অভিযুক্তদের দাবিÑ তারা বরং বিভ্রান্তি নিরসনে গুজবের বিরুদ্ধে এবং জয়ের পক্ষে রিপোর্টটি করেছিলেন।
এ ঘটনার এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর ৫৭ ধারায় গ্রেফতার হন অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক শিক্ষা ডটকমের সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান। একটি রিপোর্টে সংুব্ধ হয়ে শিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বোন অধ্যাপিকা ফাহিমা খাতুন মামলা করেন। ওই সম্পাদককে শিক্ষা ভবন থেকে গ্রেফতার করে ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট রাতে বিপুলসংখ্যক ডিবি পুলিশ দৈনিক ইনকিলাব অফিসে হানা দিয়ে পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবিকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। জব্দ করে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। সার্ভার রুম ও প্রেস সিলগালা করে পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার তাকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবি, চিফ রিপোর্টার রফিক মুহাম্মদ, নগর সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও প্রতিবেদক শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন। বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবিকে পরদিন আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। দীর্ঘ দিন তাকে কারাভোগ করতে হয়।
২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি ইনকিলাব কার্যালয়ে প্রায় একই ধরনের অভিযান চালানো হয়। সাতক্ষীরায় যৌথ অভিযান সম্পর্কিত একটি খবরের জেরে ওয়ারী থানায় ৫৭ ধারায় মামলা করে রাতে বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবি, চিফ রিপোর্টার রফিক মুহাম্মদ, কূটনৈতিক প্রতিবেদক আহমদ আতিক ও সিনিয়র রিপোর্টার আফজাল বারীকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তিনটি কম্পিউটার জব্দ ও সার্ভার স্টেশন, প্লেটরুম ও প্রেস সিলগালা করে দিয়ে পত্রিকার প্রকাশনা দ্বিতীয় দফায় বন্ধ করে দেয়া হয়।
আলোচিত আরেকটি ঘটনা হবিগঞ্জে। চলতি বছরের ১২ জুন দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং হবিগঞ্জ প্রেস কাব সভাপতি গোলাম মোস্তফা রফিককে পুলিশ ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করে। বাদি স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি আবদুল মজিদ খান। রফিক তার পত্রিকায় আগামী নির্বাচন সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। অনেক দিন তাকে রিমান্ড ও জেল খাটতে হয়।
অবশ্য তথ্যপ্রযুক্তি আইনের প্রথম শিকার দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক বিচারকের চাঞ্চল্যকর স্কাইপ সংলাপ প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনালের এক কর্মকর্তা বাদি হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৬ ও ৫৭ ধারায় মামলা করেন। ওই মামলায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে সাত দিন রিমান্ডে রাখা হয়। অপর দিকে স্কাইপ কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে ওই বিচারপতি ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেন।
বর্ণিত ঘটনাগুলো কি প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর পূর্বোক্ত দাবি সমর্থন করে? এসব ঘটনায় বাদি কারা? র্যাব, পুলিশের এআইজি, শিক্ষা অধিদফতরের ডিজি, সরকারি দলের এমপি কিংবা ট্রাইব্যুনালের কর্তারা কি সরকারের বাইরের? আর কে বা সরকারের কোন পর্যায় থেকে বাদি হলে ধরে নেয়া হবে যে, সরকারই ৫৭ ধারায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে?
সরকার যখন সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের মাঝে ভীতি ও ত্রাস ছড়াতে ৫৭ ধারাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে, তখন অন্যরা কম যাবেন কেন? তাই তো ওয়ালটনের ৫৭ ধারার মামলায় গত ১ মে নতুন সময় ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক আহমদ রাজুকে গ্রেফতার করে দুই দফায় রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গত বছর ১৪ নভেম্বর সিলেটে চ্যানেল২৪ ও সমকালের জেলা প্রতিনিধি শোয়েব চৌধুরী গ্রেফতার হন। একই মামলায় প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি হারুনুর রশীদ চৌধুরীও আসামি। গত বছর ১৬ ডিসেম্বর একুশে টিভি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের দৈনিক সাঙ্গু সম্পাদক কবির হোসেন সিদ্দিকী গ্রেফতার হন। একই বছর ২৯ অক্টোবর শেরপুরে সাংবাদিক সামিদুল ইসলাম জীবনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ছাড়া বিডিনিউজের গোলাম মুজতবা ধ্রুব, সকালের খবরের আজমল হক হেলাল, যমুনা টিভির নাজমুল হোসাইন, সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান তৌফিকুল ইসলাম বাবর মাসখানেকের মধ্যে ৫৭ ধারার শিকার হয়েছেন। এর বাইরেও বহু সাংবাদিক-পেশাজীবীর বিরুদ্ধে অস্ত্রটি ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।
২০১৩ সালে ৫৭ ধারা যুক্ত করার সময়ই আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, এ ধারায় রাষ্ট্রীয় মতার অপব্যবহার এবং দমন-পীড়ন চালানো যাবে। এতে মুক্তচিন্তার প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে, স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়বে এবং সবার মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করবে। এই আতঙ্কে থাকলে আর যাই হোক, সাহস করে সত্য লেখা বা প্রকাশ করা যায় না, চিন্তার স্বাধীনতা থাকে না, যা আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। চার বছরে আমাদের সে শঙ্কা শতভাগ ফলেছে।
প্রধানমন্ত্রী পুরো দেশ ও সরকার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক এ আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার তার দৃষ্টি এড়ানো অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু যার দায়িত্ব গণমাধ্যমের দেখভাল করা, সাংবাদিকদের স্বার্থ দেখা, সেই তথ্যমন্ত্রী কী করে ৫৭ ধারায় সাংবাদিক নিপীড়নের তথ্য চেপে গেলেন? সাংবাদিকতার কারণে এ ধারার ব্যবহার হয়নি এমন দাবি তিনি কী করে করতে পারেন? তার তো সাংবাদিকদের পক্ষে দাঁড়ানোর কথা। আর এ নিবর্তনমূলক ধারাটি তার এত পছন্দ কেন?
কেবল মন্ত্রিসভার বৈঠকেই নয়, জাতীয় সংসদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনেও তিনি ৫৭ ধারার পক্ষে সাফাই বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন। কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেনÑ ‘অতি ভয়ঙ্কর যে গরল তাহাতেও অমৃত মিশ্রিত থাকে। অতি পবিত্র অমৃতে থাকে প্রাণসংহারক গরল।’ তথ্যমন্ত্রী সম্ভবত অতি ভয়ঙ্কর ৫৭ ধারায় অমৃতের সুধা পাচ্ছেন। ভয়ের দণ্ড খাড়া রেখে নতজানু সাংবাদিকতা চাচ্ছেন। কিন্তু দেশের সাংবাদিক সমাজসহ গণতন্ত্রমনা মানুষ এটিকে অতি ভয়ঙ্কর গরল হিসেবে দেখছে।
৫৭ ধারা কিংবা প্রস্তাবিত ডিজিটাল আইনের ১৯-২২ ধারা মেনে নেয়া হবে না, তা এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সব সংগঠন। তারা সম্প্রচার আইনের নিপীড়নমূলক ধারাও প্রত্যাখ্যান করেছেন। অনলাইন নীতিমালায়ও ৫৭ ধারার খড়গ বিযুক্ত করার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রীর জানা থাকার কথা, তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে সাংবাদিকেরা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের সংবাদপত্রের স্বাধীনতাবিরোধী ধারা ১৬, ১৭ ও ১৮ বাতিল করতে বাধ্য করেছিলেন। তার পর সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার মতো কোনো আইন ছিল না। বর্তমান সরকার ফের একের পর এক নিবর্তনমূলক আইন করছে। এসবের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন গর্জে উঠেছে। সম্পাদক পরিষদ ও ‘নোয়াব’ উদ্বেগ জানিয়ে তাদের প্রতিবাদী অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। ৫৭ ধারার পক্ষে যেসব যুক্তি দেখানো হচ্ছে, তা ধোপে টেকে না। এ ধারায় যে অপরাধগুলোর কথা বলা হয়েছে, তার প্রতিটি দেশের প্রচলিত আইনেই বিচারের ব্যবস্থা আছে। অতএব, যত তাড়াতাড়ি কালাকানুনের পথ থেকে সরকার সরে আসবে, ততই মঙ্গল।
লেখক : সাংবাদিক ও মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/239712