গতকাল বুধবারের বৃষ্টিতে রাজধানীর কাজীপাড়া এলাকার দৃশ্য -সংগ্রাম
৩ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১০:২০

মাত্র ২৪ মি.মি. বৃষ্টিতেই ফের ডুবলো রাজধানী

মাত্র ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিতেই ফের ডুবলো রাজধানী। গতকাল বুধবার ২০-৩০ মিনিটের ভারিবর্ষণে ডুবে যায় ঢাকা শহরের কিছু নিম্নাঞ্চল। গত কয়েকদিন যাবত মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি চলছে।
মওসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গেপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এ কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি অথবা মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ চলছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার বিশেষ বার্তায় বলা হয়েছিল, অবিরাম বৃষ্টি হতে পারে।
আগের দিন মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া বিভাগ। এরপর দুপুর পর্যন্ত কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টির খেলা চলে। এ বৃষ্টির পানি খানাখন্দকে জমে থাকলেও অনেক স্থানের পানি নেমে যায়। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার পর রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, শাহজানপুর, কমলাপুর, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, মতিঝিল এলাকায় মাঝারী আকারে বৃষ্টি হয়। এদিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ৬ ঘন্টায় ঢাকায় বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় ২৪ মিলিমিটার।
মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভারি বৃষ্টি হয়। আর তাতেই এসব এলাকার সড়ক হাঁটু পরিমাণ বা কোথায়ও কোথায়ও তার চেয়ে বেশি পানিতে তলিয়ে যায়। সৃষ্টি হয় পানিবদ্ধতা। পানিবদ্ধতার কারণে ওইসব এলাকায় তীব্র যানজটে পড়ে নগরবাসী। এ কারণে অফিস ছুটির পর সন্ধ্যা পার হলেও অনেকেই আটকা পড়ে থাকেন। সমন্বয়হীন ও অপ-উন্নয়নের অব্যাহত খোঁড়াখুড়িতে নগরীর রাজপথ থেকে অলি-গলি পরিণত হয় গ্রামীন মেঠোপথে।
আর প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়েও এদিন জমে যায় হাঁটু পানি, ঢেউও উঠছে তাতে। কেউ একজন সেই পানিতে কাগজের নৌকা বাসিয়ে দিয়েছেন। সেই নৌকার ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সচিবালয়ে দেখা দেয় পানিবদ্ধতা। সচিবালয়ের প্রধান গেটের বাইরে ও ভেতরে হাঁটু পানি জমে যায়। পুরো সচিবালয়ই কার্যত পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীরা। এছাড়া সচিবালয়ের এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যেতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের। ফটকের সামনেও একই চিত্র। কোনোমতে ফটক পর্যন্ত এলেও এরপর চলাচলের পথটা পানিতে একদম ডুবে গেছে। সচিবালয়ের ভেতরের প্রাঙ্গণও ডুবে যায়।
বহুবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও কখনোই সচিবালয়ে এতো বৃষ্টির পানি জমতে দেখেননি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তবে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের দুর্ভোগের সৃষ্টি হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে, আবহাওয়াবিদ অফিস আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, মওসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মওসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দম্কা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, গতকাল দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছেগোপালগঞ্জে, ৬৫ মিলিমিটার। এছাড়া টাঙ্গাইলে ৩২ মিলিমিটার, ফরিদপুর ২৪, মাদারীপুর ৫৩, সন্দ্বীপ ৪৭, কুমিল্লা ৬১, সিলেট ৪০, রাজারহাট ৩০, খুলনা ৪০, যশোর ৫৭, বরিশাল ২৫ ও ভোলায় ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

 

http://www.dailysangram.com/post/294499-