৩০ জুলাই ২০১৭, রবিবার, ৮:৪৭

পানামা পেপারস কী ও কেন

গার্ডিয়ান

এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় তথ্যফাঁসের ঘটনাটি ‘পানামা পেপারস’ নামে খ্যাত। ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার একটি আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান থেকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অর্থপাচারের বিষয়ে এক কোটি ১৫ লাখ নথি ফাঁস হয়। মোসাক ফনসেকা নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে এসব ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে আইনি সহায়তা দিত।
জার্মান সংবাদপত্র জিতডয়েচে সাইতুংয়ের সূত্রে নথিগুলো প্রকাশ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটে। কর ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের অর্থপাচারের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায় ওইসব নথিতে। এতে নাম ছিল ১২ জন রাষ্ট্রনেতাসহ ১৪৩ জন রাজনীতিবদ, তাদের পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদের। ২০১০ সালে উইকিলিকস কিংবা ২০১৩ সালে এডওয়ার্ড স্লোডেনের ফাঁসকৃত নথির চেয়ে ‘পানামা পেপারস’ সংখ্যায় অনেক বেশি।
১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত মোসাক ফনসেকা বার্ষিক হারে অর্থের বিনিময়ে কাজ করে। পাশাপাশি সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও কাজ করে এটি। প্রতিষ্ঠানটি মধ্য আমেরিকার দেশ পানামাভিত্তিক হলেও এর কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী। বিশ্বের ৪২টি দেশের ৬০০ জন লোক এর নেটওয়ার্কে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানটি সুইজারল্যান্ড, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জের মতো বিভিন্ন ট্যাক্সমুক্ত দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে। কর্মপরিধির দিক থেকে মোসাক ফনসেকা বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তিন লাখেরও বেশি কোম্পানির হয়ে কাজ করে এটি। ব্রিটেনের সাথে রয়েছে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এদের গ্রাহকের অর্ধেকেরও বেশির অবস্থান ব্রিটেনশাসিত এলাকাগুলোয়।
কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য আইনি সহায়তা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়া বৈধ। এর অনেক কারণ রয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মতো দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা কৌশলগত কারণে তাদের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেন। সন্ত্রাসীদের হানা ও মুদ্রাসংক্রান্ত আইনি জটিলতা থেকে বাঁচতে তারা এটি করে থাকেন। আবার অনেকে উত্তরাধিকারী মনোনয়ন ও রাষ্ট্র পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এটা করে থাকেন। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যবস্থাপনার কাজে সহায়তা করে এসব প্রতিষ্ঠান। আর তখনই তা হয়ে যায় বেআইনি।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/239904