২৮ জুলাই ২০১৭, শুক্রবার, ১১:০০

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন

সবই সিন্ডিকেটের দখলে

রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) পুরোটাই দখলে নিয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও বহিরাগতদের সিন্ডিকেট। শক্তিশালী এ সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলছে এ সংস্থাটি। এমনকি বিআরটিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ সিন্ডিকেটের সুসম্পর্কের অভিযোগও উঠেছে। আর সুসম্পর্কের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিআরটিসি বাস ও ট্রাক ভাড়া থেকে যে আয় হয়, তার সিংহভাগই হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সিন্ডিকেট। ঢাকাসহ সারা দেশে বিআরটিসির এক হাজারের বেশি সচল বাস ও ট্রাক থেকে প্রতিদিন আয়ের কয়েক লাখ টাকা চলে যাচ্ছে তাদের পকেটে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে সংস্থার স্থাপনায় মার্কেট ও দোকানের ভাড়া আদায়েরও একই অবস্থা। এসব স্থাপনা থেকে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা আয় হলেও এর ৯০ শতাংশই আত্মসাৎ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, লুটপাটের পর সংস্থার যে আয় দেখানো হয়, তাও পকেটে রেখে দিচ্ছেন কয়েকজন ম্যানেজার। সংস্থার এমন জমা না দেয়া টাকার পরিমাণ সাড়ে ১১ কোটি টাকারও বেশি। বিআরটিসির এমন দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে। সম্প্রতি সরকারের কাছে সংস্থাটি এ প্রতিবেদন তুলে ধরে বিআরটিসি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৯টি সুপারিশ করেছে।


সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি বিআরটিসির কার্যালয়ে ডিপো ম্যানেজার ও সদর দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিআরটিসির ২১টি ডিপো এখন দুর্নীতির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। আর দুর্নীতির মূল হোতা হচ্ছেন ডিপোর ম্যানেজাররা।

গোয়েন্দা সংস্থাটির প্রতিবেদনে দুর্নীতি বন্ধ না করলে বিআরটিসি ধ্বংসের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আয়ের টাকা সিন্ডিকেটের পকেটে চলে যাওয়ার কারণে সংস্থাটিতে চলছে আর্থিক সংকট। রাজধানীর মিরপুর দ্বিতল বাস ডিপোর সাতজন ম্যানেজার ১ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও মতিঝিল বাস ডিপোর চারজন ম্যানেজার ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা কোষাগারে জমা দেননি। এরকমভাবে সারা দেশের ১৬টি ডিপোর ম্যানেজার ১১ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার ৯৫ টাকা তাদের পকেটে রেখে দিয়েছেন। এ কারণে বেশ কিছু ডিপোর কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফলে নানাভাবে দুর্নীতিতেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা। মিরপুর ডিপোতে গড়ে ৫ মাস, জোয়ার সাহারা ডিপোতে ৪ মাস, মতিঝিল ডিপোতে ৩ মাস, চট্টগ্রাম ডিপোতে ৫ মাস বেতন বকেয়া রয়েছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষও বিরাজ করছে। এ অসন্তোষ কাজে লাগিয়ে কুচক্রী মহল অশান্ত পরিস্থিতি তৈরির হুমকি প্রদান করে সংস্থাটিকে করায়ত্ত করে রেখেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ডিপোতে আগুনের নেপথ্যে শ্রমিক অসন্তোষ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে বিআরটিসির দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদক সংস্থার প্রধানকে চিঠি দিয়ে বেশি দামে ১ হাজার ১০০টি বাস ও ট্রাক কেনা সংক্রান্ত নথিপত্র, কয়েকজন ডিপো ম্যানেজার, চালক ও ঠিকাদারের তথ্য এবং সংস্থার অধীনে স্থাপনার ভাড়া আদায় সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বিআরটিসির দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন।

যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সত্যতা মিলেছে। অনুসন্ধানের তথ্য তুলে ধরে বিআরটিসি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের অভিযোগ সব মিথ্যা। দুর্নীতির দায়ে যাদের চাকরিচ্যুত করেছি তারাই এসব প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একটি গাড়ির অপারেটিং খরচ ৩৩ হাজার টাকা হলে, বিআরটিসির খরচ ৮৩ হাজার টাকা। ২৫০-৩০০ জন চালক শারীরিক অক্ষমতার কারণে গাড়ি চালাতে পারছে না। তাদের অফিসের অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, বেতনও দিতে হচ্ছে।

বিআরটিসির ঢাকার কয়েকটি ডিপো পরিদর্শন ও যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিন ধাপে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে- বাস-ট্রাক মেরামত, বাস পরিচালনায় জ্বালানি ও পথখরচের নামে অর্থ আত্মসাৎ এবং রুটভেদে প্রতিটি বাসে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অবৈধ লেনদেন। ‘আগে নিজস্ব, পরে রাজস্ব’ এই নীতিতে চলছে বিআরটিসির বাসের ঠিকাদার নিয়োগ। অর্থাৎ ম্যানেজাররা ‘নিজস্ব’ বা নিজের টাকা পাওয়ার পরই ঠিকাদারকে গাড়ি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে লিজ দেন। যে ঠিকাদার ডিপোর সংশ্লিষ্টদের টাকা দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তিনি গাড়ি পরিচালনার দায়িত্ব পান। এর বাইরে ম্যানেজার

ও অন্যান্য পদে বদলি এবং সংস্থার জমিতে স্থাপিত বেশ কিছু দোকান লিজ বা ভাড়ার ক্ষেত্রেও চলে অবৈধ লেনদেন। সংস্থাটিতে বর্তমানে ১ হাজার ৫৩৮টি বাস ও ১৪৬টি ট্রাক রয়েছে। এর মধ্যে সচল রয়েছে বাস ৯৭৮ ও ট্রাক ১১৬টি।

সংস্থার অনিয়ম প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে একজন ঠিকাদার বলেন, প্রতিটি ডিপোতে অপেক্ষাকৃত নতুন ও পুরনো বাস রয়েছে। কোন রুটে নতুন বাস চলবে, কোন রুটে পুরনো বাস চলবে তা নির্ধারণ করেন সংশ্লিষ্ট ডিপোর কর্মকর্তারা। ঠিকাদারদের মধ্যে যে বেশি টাকা দিচ্ছে, সে-ই নতুন গাড়ি পাচ্ছে। নাম গোপন রাখার শর্তে একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতির নমুনা তুলে ধরে তিনি বলেন, গুলিস্তান থেকে খুলনা পর্যন্ত মতিঝিল ডিপোর ১২-১৫টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চলে। প্রতিটি ট্রিপে (ঢাকা-খুলনা, খুলনা-ঢাকা) বিআরটিসি খাতে জমা (রাজস্ব) হয় ২১ হাজার টাকা। অপরদিকে একই রুটে কল্যাণপুর বাস ডিপোর বাসে জমা হতো ২৩ হাজার টাকা। একই রুটে প্রতি ট্রিপে মতিঝিল ডিপো কম নিচ্ছে ২ হাজার টাকা। এ হিসেবে প্রতিদিন ওই রুটেই প্রায় ৩০ হাজার টাকা বেহাত হচ্ছে। এ হিসাবে এক রুটেই বছরে দুর্নীতির অঙ্ক দাঁড়ায় কোটি টাকা।

সম্প্রতি দুই ডিপো মিলে গেছে। কল্যাণপুর ডিপোর ওই দুটি গাড়ি হাতবদল হয়ে বর্তমানে প্রতিটি ট্রিপ ২১ হাজার টাকা আদায় করছে। সূত্রটি বলছে, কল্যাণপুর ডিপো প্রতিটি গাড়িতে ২৩ হাজার টাকা পেলে মতিঝিল ডিপোরও একই হারে টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মতিঝিল ডিপোর ম্যানেজার মো. আশরাফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, খুলনা রুটে কত টাকা রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে তা আমার মনে নেই। অপরদিকে কল্যাণপুর ডিপোর ম্যানেজার মো. নূর-ই আলম বলেন, আমার ডিপোর দুটি বাসের প্রতিটিতে আগে ২৩ হাজার টাকা পেতাম। কিন্তু বাস স্বল্পতার কারণে মতিঝিল ডিপোর গাড়ি যারা চালাচ্ছে তাদের এ দুটি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে মতিঝিল ডিপোর হারে প্রতি ট্রিপে ২১ হাজার টাকা পাচ্ছি।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বিআরটিসি ঘিরে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের বহিরাগতদের মধ্যে আলী হোসেন মোল্লা, তার ছোট ভাই সোহেল মোল্লা, ভাগ্নে মনিরুজ্জামান, মো. হাবিবুর রহমান ফেরদাউস অন্যতম। এছাড়া বিআরটিসির চালক আবুল কাশেমের স্ত্রী ঝর্ণা, সংস্থার ভেতরের কর্মকর্তাদের মধ্যে বগুড়ার ডিপো ম্যানেজার মনিরুজ্জামান বাবু, চেয়ারম্যানের পিএস আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার নামও রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের কয়েকজনের সঙ্গে সংস্থার চেয়ারম্যানের সুসম্পর্কের কথা ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। যদিও চেয়ারম্যান তা অস্বীকার করেছেন। এ সিন্ডিকেটের কারণে সংস্থার স্বাভাবিক অর্থপ্রবাহ পরিবর্তন হয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহিরাগত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিপো ম্যানেজাররা লেনদেন করেন। বহিরাগত চালক ও কন্ডাক্টরদের দিয়ে গাড়ি পরিচালনায় অর্জিত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে তার সামান্য অংশ শ্রমিকদের দেয়া হয়। আর সিংহভাগ বহিরাগত সিন্ডিকেট লিডার, কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়। বিপুল সম্পদের মালিক আলী হোসেন মোল্লা প্রায়ই আমেরিকা থাকেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি সরকারের আমল থেকে আলী হোসেন মোল্লা বিআরটিসি নিয়ন্ত্রণ করেন। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের একজন প্রভাবশালীর প্রত্যক্ষ ছত্রছায়ায় রয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরটিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে মনিরুজ্জামান বাবুর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। চালকের স্ত্রী ঝর্ণার সহযোগিতায় বিআরটিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনে নারী সরবরাহ করা হয়। এ চক্রটি নারীদের সঙ্গে সংস্থার কর্মকর্তাদের অডিও-ভিডিও রেকর্ড সংগ্রহের পর তা ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহার করে। শুধু তাই নয়, শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের বদলি ও অন্যান্য সুবিধা পেতে ঝর্ণার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এছাড়া মনিরুজ্জামান বাবুর কাছে সংস্থার ২২ লাখ ২১ হাজার টাকা রয়েছে, যা তিনি জমা দেননি। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আমার বস। তার সঙ্গে অধীনস্থ কর্মকর্তা হিসেবে আমার সম্পর্ক ভালো। নারী সরবরাহসহ অন্যান্য অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি অন্যের ডিপোতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছি। সেখানে অনেক ব্যতিক্রমী ভালো পদক্ষেপ নেয়ায় আমার অনেক শত্রু রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করা হলে এ ডিপো ম্যানেজার বলেন, আমি জানি গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট দিয়েছে। মন্ত্রণালয় এটি তদন্ত করছে। বিআরটিসির ২২ লাখ ২১ হাজার টাকা তার কাছে নেই দাবি করে মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, এ টাকা ঠিকাদারদের কাছে বকেয়া রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে ঝর্ণার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার দুটি ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায় ।

বিভিন্ন স্থাপনার ভাড়া আত্মসাৎ : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিআরটিসির বেশ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ফুলবাড়িয়া, কল্যাণপুর, গুলিস্তান, মোহাম্মদপুর, চট্টগ্রামের নতুনপাড়া টার্মিনাল মার্কেট, নরসিংদীর বিআরটিসি মার্কেট, বগুড়ার বিআরটিসি মার্কেট অন্যতম। এছাড়া ঢাকার প্রায় ৩৫-৪০টি যাত্রীছাউনি সংলগ্ন দোকানকোঠা ভাড়া রয়েছে। এসব মার্কেট থেকে কোটি কোটি টাকা আয় হলেও ওই টাকার ৯০ শতাংশ একটি চক্র আত্মসাৎ করছে। রহস্যজনক কারণে দুই যুগ ধরে এসব স্থাপনার ভাড়া বাড়ানো হয়নি। বর্তমান চেয়ারম্যানের পিএস আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া এসব স্থাপনার ভাড়া উচ্চমূল্যে সংগ্রহ করেন। ওই টাকার অধিকাংশ চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন আত্মসাৎ করেন এবং অবশিষ্ট নামমাত্র টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এক সময় আমি এস্টেট বিভাগ দেখতাম। তখন এস্টেটের টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে সংস্থার ফান্ডে জমা হতো। এখানে টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১২ ও ২০১৫ সালে ভাড়া বাড়িয়েছি। ভাড়া না বাড়ানোর অভিযোগ সত্য নয়।

বেশি দামে বিআরটিসির ১১০০ বাস-ট্রাক কেনার প্রক্রিয়া : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্থার জন্য ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০টি বাস ও ৬০০টি ট্রাক কেনার প্রাক্কলন ও অন্যান্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গাড়ি কেনার আগে পরিকল্পনা ও প্রাক্কলন সময়ে একটি গ্রুপ অব কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ ও অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজারের নেতৃত্বে একটি মহল ওভারপ্রাইজিং করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে জানতে বিআরটিসিরি চেয়ারম্যান বলেন, ওভারপ্রাইজিং করার সুযোগ নেই। আমরা ভালোমানের বাস কেনার চেষ্টা করছি। টেন্ডারের মাধ্যমে এসব গাড়ি কেনা হবে।

বিআরটিসি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৯ সুপারিশ : প্রতিবেদনে বিআরটিসি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ৯টি সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বিআরটিসির শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করাসহ সংস্থাটিকে ঢেলে সাজানো। যথাযথ তদন্ত করে চেয়ারম্যানসহ অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন ও সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা এড়ানোর জন্য বকেয়া বেতন-ভাতা দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা নেয়া। বিআরটিসির বিভিন্ন স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে নতুনভাবে টেন্ডার দিয়ে বাজার মূল্যে ভাড়া দেয়ারও সুপারিশ করা হয়।

 

http://www.jugantor.com/first-page/2017/07/28/143430/