২৭ জুলাই ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৫

ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জমি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মধুমতি নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় মধুমতি নদীর ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে, মহম্মদপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে কাশীপুর, রায়পুর, রুইজানি ও ভোলানাথপুর গ্রাম। গত রোববার থেকে এ পর্যন্ত নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ২৫টি পরিবারের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মধুমতি নদীর অব্যাহত ভাঙনে বদলে যাচ্ছে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার মানচিত্র। এ পর্যন্ত উপজেলার ৪টি গ্রামের ৭-৮ কিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত রোববার থেকে মধুমতি নদীর ভাঙনে নতুন নতুন বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীতে পানি বাড়ার কারণে ভাঙন ভয়াল আকার ধারণ করায় নদী-তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

কাশীপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ডা. তিলাম হোসেন বলেন, নদীভাঙনের ফলে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। এ গ্রামের অসংখ্য ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা প্রতিনিয়ত নদীতে বিলীন হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে বারংবার অবহিত করা হলেও এ পর্যন্ত কেউ অসহায় মানুষের খোঁজ নিতে আসেনি। মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন যে কোনো সময় আঘাত হানতে পারে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ, কাশীপুর গোরস্তান, কাশীপুর মসজিদে।

অন্যদিকে গোপালনগর থেকে পাল্লা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নদীর মাঝ বরাবর জেগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কারণে স্রোতপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে প্রবল বেগে নদীতীরে ঢেউ আচড়ে পড়ায় নদীর ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উপজেলার নদী-তীরবর্তী গ্রামগুলো ক্রমেই ভাঙনের থাবায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে নদীপাড়েই ছাবড়া দিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে কয়েকটি পরিবার। কেউ তাদের খোঁজ-খবর না নেওয়ায় নদী-তীরবর্তী মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

ইউএনও চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, খবর পেয়েছি, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, নদীভাঙন রোধে তারা কাশীপুর এলাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ মিটার বাঁধ নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ করেছেন। বাকি কাজ শেষ করতে তারা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করবেন তারা।

এদিকে দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, বর্ষণসহ স্থানীয় নদনদীতে অস্বাভাবিক পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্র উপকূলীয় খুলনার দাকোপে নদীতে বিলীন হচ্ছে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ, বসতবাড়ি, কৃষিজমি, গাছপালা, সরকারি বেসরকারি স্থাপনা। গত এক মাসের ব্যবধানে পাউবোর পৃথক তিনটি পোল্ডারের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের এক-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন হয়েছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষকৃষ্ণ কুণ্ডু বলেন, উপজেলার ৩২ এবং ৩৩নং পোল্ডারের বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের দায়দায়িত্ব বিশ্বব্যাংক হাতে নেওয়ায় এখন ওই দুটি পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে পাউবো আগ্রহী নয়। তবে ৩১নং পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু কিছু স্থানে পাউবো কাজ করছে।

http://bangla.samakal.net/2017/07/27/311554