২৬ জুলাই ২০১৭, বুধবার, ১১:৪৬

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বান্দরবান

বান্দরবানের রুমায় পাহাড় ধসে নিখোঁজ রুমার স্বাস্থ্যকর্মী মুন্নি বড়ুয়ার লাশ বাঁশখালী নদীতে পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুন্নি বড়ুয়ার ছোট ভাই ছোটন বড়ুয়া। তবে বিকাল নাগাদ নিখোঁজ রুমা উপজেলা পোস্ট মাস্টার জবিউল হোসেন, কৃষিব্যাংক কর্মকর্তা গৌতম নন্দী এবং রুমার কারবারি মংশৈ মারমার কন্যা ১৮ বছর বয়সী ছাত্রী চিংমে সিং মারমার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই এলাকার নানাস্থানে পৃথকভাবে সেনাবাহিনী, দমকল বাহিনী, পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট সদস্য মিলে শতাধিক উদ্ধারকর্মী নিখোঁজদের উদ্ধারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া রুমা সড়কের পাহাড় ধসে পড়া অংশের মাটি সরাতে বৃষ্টিতে জীবনের ঝুঁকি 

নিয়েই সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। ভারি বর্ষণের কারণে উদ্ধার অভিযান চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান দমকল বাহিনীর সহকারী পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঝিরিতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার অভিযান দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সেনা রিজিয়নের জিএসও-২ মেজর মেহেদী হাসান জানান, রুমা পাহাড় ধসের পর পরই সেনা সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতায় নেমে পড়েন। নিখোঁজদের উদ্ধারে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন সেনা সদস্যরা। ব্যবহার করা হচ্ছে এক্সেবেটরসহ বিভিন্ন ভারি সরঞ্জাম। প্রায় ৪০-৫০ জনেরও বেশি সেনাসদস্য উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন, প্রয়োজনে সেখানে সেনা সদস্য আরো বাড়ানো হবে। বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হারুনুর রশিদ জানান, বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারকর্মীরা তাদের অভিযান শুরু করেছেন। মৃতদেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, টানা চারদিনের ভারি বর্ষণে বান্দরবান জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। বান্দরবান জেলা সদরের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ তিনদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে জেলা সদরের সঙ্গে লামা ও আলীকদম উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিবহন মালিক সমিতি পাহাড় ধসের আশংকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা সদর থেকে থানচি উপজেলা সদরে চলাচলকারী বাসসহ যানবাহন বন্ধ রেখেছে। জানা গেছে, বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের বাজালিয়া নামক স্থানে সড়কপথ কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়কের পাইনছড়া এলাকায় বেইলি সেতু ১০ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত তিনদিন ধরেই জেলা সদর পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন সারা দেশ থেকে। মঙ্গলবার সকালে চকরিয়া-লামা সড়কের মিরিজ্ঞা এলাকায় সড়কের উপর পাহাড় ধসে পড়ায় লামা ও আলীকদম উপজেলা সদরের সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে গত সোমবার সকাল থেকে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=75731&cat=6/