২৩ জুলাই ২০১৭, রবিবার, ১১:০৯

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক জবাবদিহি জোরদার এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সক্ষমতা বাড়াতে দেশের সব দল এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনায় যুক্ত হতে চায় যুক্তরাজ্য। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনায় এ কথা বলা হয়েছে।
বৈশ্বিক এই প্রতিবেদনে বলা হয়, যেকোনো দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক চর্চার বিকল্প নেই। ভিন্নমত প্রকাশের বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা না করে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে বিবেচনার জন্য সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা, উগ্রবাদী আক্রমণ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মতো ঘটনা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নিবর্তনমূলক গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি আচরণ নিয়ে উদ্বেগের নিরসন হয়নি। মৃত্যুদণ্ড এখনো বৈধ সাজা হিসেবে চালু আছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। মানবাধিকার নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে এমন ৩০টি দেশের তালিকায় এবারও রাখা হয়েছে বাংলাদেশকে। ৬৪ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে উদ্বেগের তালিকায় থাকা দেশগুলো সম্পর্কে আলাদা আলাদা করে পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাসহ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। ওই হামলার পর সরকার জঙ্গিবাদ প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’ (শূন্য সহনশীলতা) নীতি গ্রহণ করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে দ্রুত এগিয়ে চললেও, কিছু সূচকে বাংলাদেশ পিছে পড়ে আছে। ২০১৬ সালের বৈশ্বিক দাসত্ব সূচকে (জিএসআই) ১৬৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২১। মানুষের কর্ম ও জীবনমান বিবেচনায় নিয়ে নব্য দাসত্বের এই সূচক তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশ যে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় স্বাক্ষরকারী দেশ, সেটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্ক ও কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করার মতো পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারকে উৎসাহ দিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। স্বাধীন মতপ্রকাশে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকেও সমর্থন দিয়ে যাবে তারা।

 

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1262201/