রাজধানীর অনেক খালেরই এখন আর অস্তিত্ব নেই। যেগুলো এখনো টিকে আছে সেগুলোও দখল আর দূষণে মরতে বসেছে। মাণ্ডা-মুগদা এলাকার জিরানী খালও এর মধ্যে একটি। ছবি : শেখ হাসান
২৩ জুলাই ২০১৭, রবিবার, ১১:০৫

ঢাকা ডুবছে খাল দখলে

সরকারের পাঁচ সংস্থাচোখ বুজেই আছে

 

বৃষ্টি হলেই পথঘাট তলিয়ে বিতিকিচ্ছি হয়ে যায় রাজধানী; কাদাপানি-ময়লা-আবর্জনায় নাকানি-চুবানি খায় নগরবাসী—এসব কথা কতবার যে বলা হয়েছে গণমাধ্যমে, তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না; সেসব কথা যেন কানে পৌঁছে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। কানে তুলা দিয়ে, হাত গুটিয়ে বসে থাকে তারা। বিশেষজ্ঞরা যতই বলেন, ঢাকা শহরের বুকে শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খালগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত করে আর বেদখল হওয়া খালগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে না; তাঁদের এই একটি ফর্মুলাই আমলে নেয় না ওই সংস্থাগুলো। ঢাকার প্রাণ-প্রবাহ এই খালগুলো হয়ে আছে মালিকবিহীন মূল্যবান সম্পত্তির মতো। তাই যার যেভাবে খুশি, এগুলোর ওপর চালিয়ে যাচ্ছে দখল-উৎসব।
এভাবে দিন দিন ২০০ ফুট প্রস্থের খালগুলোও এখন পরিণত হয়েছে সরু ড্রেনে। বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনাও দেদার ফেলা হচ্ছে খালে। সরকারি কোষাগার থেকে খনন আর পরিষ্কারের নামে কোটি কোটি টাকা ওয়াসার মাধ্যমে খরচ দেখানো হলেও বাস্তবে এর সুফল মিলছে না। এ ছাড়া খালের মালিকানা নিয়েও সরকারি পাঁচটি সংস্থার রয়েছে সমন্বয়হীনতা। এরই মধ্যে খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাইছে ঢাকা ওয়াসা।
রাজধানীর ৪৬টি খালের মধ্যে ওয়াসার নথিতে ২০টি বিলীন ও ২৬টির অস্তিত্বের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, এ ২৬টি খালও বাস্তবে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।
খালের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের ডিএসসিসি এলাকায় ছয়টি খাল রয়েছে। এগুলো পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। খাল দখলকারী কিছু কিছু অবৈধ স্থাপনায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেখানে আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে অবশ্যই পুরনো খালগুলো দূষণ-দখলমুক্ত করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। ’
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘ওয়াসা শুধু ড্রেনেজের একটি মাস্টার প্ল্যান করে সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। এ জন্য দরকার সমন্বিত প্ল্যান। সিটি করপোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় সেগুলো খালে গিয়ে পড়ছে। তাই খালগুলোর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হলে ভালো হবে। আর ওয়াসা যে পর্যন্ত দায়িত্বে আছে তারাও যদি নিজেদের কাজটুকু সঠিকভাবে পালন করত তাহলে খালের অবস্থা এত করুণ হতো না। ’
আয়তন নথিতে এক, বাস্তবে আরেক : সরেজমিনে দেখা গেছে, কল্যাণপুর ‘চ’ খালও বেশ কিছু জায়গায় দখল হয়ে আছে। রামচন্দ্রপুর খালের ২০০ মিটার অংশেই ৩০ ফুট জায়গা ভরাট করে রাস্তা তৈরি করেছে সিটি করপোরেশন। এ খালের মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদসংলগ্ন স্থানে ৬০ ফুটের স্থলে ৩০ ফুট রয়েছে। খিলগাঁও-বাসাবো খালের খিলগাঁও ফ্লাইওভারসংলগ্ন ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের সামনেই আরেকটি ফলক। কিন্তু খিলগাঁও অংশ থেকে তিলপাপাড়া পর্যন্ত খালের কোনো চিহ্ন চোখে পড়ে না। খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কিছু দোকান। এটি খিলগাঁওয়ের ভেতর দিয়ে বাসাবো হয়ে মাণ্ডা খালে গিয়ে মিশেছে। ওয়াসার নথিপত্রে খালটির প্রস্থ স্থানভেদে ১৬ থেকে ৩২ ফুট। বাস্তবে সেটা কোথাও পাওয়া যায় না। তিলপাপাড়া থেকে আমানুল্লাহ সুপার মার্কেট পর্যন্ত খাল ভরাট করে কিছু স্থানে পাইপ ড্রেন তৈরি করা হয়েছে। উত্তরার দক্ষিণ আজমপুর থেকে শুরু হয়ে কসাইবাড়ী হয়ে মোল্লারটেক গিয়ে শেষ হওয়া কসাইবাড়ী খালটিকে সাধারণভাবে বোঝার উপায় নেই। ছোট একটি ড্রেনে পরিণত হয়েছে খালটি। এ খালটির দৈর্ঘ্য আট হাজার মিটার এবং প্রস্থ ১০ থেকে ১২ মিটার আছে। খালের শুরুর দিকে দক্ষিণ আজমপুরের জামতলা নামক স্থানে প্রস্থে চার মিটার থাকলেও মোল্লারটেকে গিয়ে দুই মিটার পাওয়া গেছে। চলতি মাসের ১৬ তারিখ ডিএনসিসির সমন্বয় সভায় ঢাকায় জলাবদ্ধতার কারণ এবং রাজধানীর খালগুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দিন। প্রতিবেদনে তিনি বলেন, মিরপুরের বাউনিয়া খাল মিরপুর এলাকার পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম। তবে মাটিকাটা সড়কের কালভার্টের কাছে খাল সাত ফুট হয়ে গেছে। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কল্যাণপুর ‘খ’ খাল কাগজে-কলমে ৪০ ফুট হলেও অনেক জায়গায় খালের কোনো অস্তিত্ব নেই।
এ ছাড়া সরকারি নথিতে ৬০ ফুট প্রশস্ত বাসাবো খাল এখন ৩০ ফুট, রামচন্দ্রপুর খাল ১০০ ফুটের স্থলে ৬০ ফুট, মহাখালী খাল ৬০ ফুটের স্থলে ৩০ ফুট, দ্বিগুণ খাল ২০০ ফুটের বদলে ১৭০ ফুট, আবদুল্লাহপুর খাল ১০০ ফুটের বদলে ৬৫ ফুট, কল্যাণপুর প্রধান খাল ১২০ ফুটের বদলে স্থানভেদে ৬০ থেকে ৭০ ফুট, কল্যাণপুর ‘ক’ খালের বিশিল অংশে এখন সুরু ড্রেন, রূপনগর খাল ৬০ ফুটের স্থলে ২৫ থেকে ৩০ ফুট, ইব্রাহিমপুর খালের কচুক্ষেতসংলগ্ন মাঝামাঝি স্থানে ৩০ ফুটের স্থলে রয়েছে ১৮ ফুট।
চরম উদাসীন ওয়াসা : রাজধানীর ৪৬ খালের মধ্যে ২৬টির অস্তিত্ব রয়েছে বলে দাবি ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু ওয়াসার খাতায় টিকে থাকা বেশ কয়েকটি খালও দখলের পথে। কোনো কোনো খাল এখন সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে। কল্যাণপুরে ওয়াসার মোট ছয়টি খাল রয়েছে। ‘এ’ খালের আগারগাঁও অংশে ভাঙ্গা মসজিদসংলগ্ন স্থানে আংশিক দখল হয়ে গেছে। ছোট ছোট একাধিক টিনের ঘর তৈরি করে এগুলো ভাড়া দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। টোলারবাগ পানির ট্যাংক-সংলগ্ন স্থান দিয়ে খালটি ক্রমে ছোট হয়ে গেছে। কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শাহআলী মাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের ভেতরে একাধিক পাকা বাড়ির আংশিক পড়েছে খালের ভেতরে। আবার দক্ষিণ বিশিল অংশে একটি কালভার্ট নির্মাণ করে সেখানে চার থেকে পাঁচ ফুট জায়গা রেখে বাকিটা দখল করা হয়েছে। মোহাম্মদপুরের কাঁটাসুর খালটি অনেকটা বেদখল হয়ে বর্তমানে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। রূপনগর খালটি কয়েক বছর আগেও ছিল বেশ বড়সড়। এখন একটি ড্রেনের মতো করে বাকিটা দখল করে সিটি করপোরেশনের রাস্তা হয়েছে। ইব্রাহিমপুর খালের দুই পাড়েই অবৈধ স্থাপনা তুলে দখল করা হয়েছে। ওয়াসার প্রতিবেদনে খালটির প্রস্থ ৯ থেকে ১৮ মিটার বলা হলেও বাস্তবে মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে শুরু হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে যাওয়া এ খালের বেশির ভাগেই তা নেই। খালের কিনার ঘেঁষে ৮৯/৩ ইব্রাহিমপুর হোল্ডিং নম্বরে রয়েছে একটি পাকা স্থাপনা।
রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী খালের অবস্থা আরো নাজুক। এ খালে অবৈধ দখল তুলনামূলক কম থাকলেও দূষণের ফলে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালটির মেরাদিয়া বাজার অংশে বিশাল ময়লার ভাগাড় রয়েছে। পুরো বনশ্রীর বাসাবাড়ির ময়লা ফেলা হচ্ছে খালের মধ্যে। গতকাল নন্দীপাড়া খালে গিয়েও দেখা যায় করুণ অবস্থা। বিশাল আকৃতির খালটি ময়লা আর দখলের কবলে মৃতপ্রায়। খালের মধ্যে খুঁটি পুঁতে বিপুলসংখ্যক দোকান বসানো হয়েছে। পরিষ্কার না করায় খালটিতে পানির প্রবাহ নেই। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন ও ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান জোরেশোরে এ খাল উদ্ধারে অভিযান শুরু করেও শেষে পিছু হটেন।
খিলগাঁও-বাসাবো খালের অস্তিত্ব বাসাবো অংশে চোখে পড়লেও খিলগাঁও অংশে হারিয়ে গেছে। খিলগাঁও লেভেলক্রসিং থেকে তালতলা মার্কেটের দিকে যেতে ঢাকা ওয়াসার পিলার থাকলেও সেখানে খালের চিত্র পাওয়া যাবে না। ভরাট করে মাটির নিচ দিয়ে পাইপ ড্রেন তৈরি করা হয়েছে।
খালের দায়িত্ব ‘বোঝা’ : রাজধানীর খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের বেশির ভাগ দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার হলেও কয়েকটি খালের মালিকানা সরকারের আরো তিনটি সংস্থার। আর ঢাকার খাল ও নদী নিয়ে আইনগতভাবেই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। তাই খাল নিয়ে সরকারের মোট পাঁচটি সংস্থা তৎপর থাকার কথা থাকলেও সবারই গাছাড়া ভাব। মূলত সমন্বয়ের অভাবেই রাজধানীর ৪৬টি খালের মধ্যে ২০টিই হারিয়ে গেছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের। বর্তমানে কাগজপত্রে টিকে থাকা বাকি ২৬টি খালও ধীরে ধীরে দখল হওয়ার পথে। রাজধানীর খাল যখন অস্তিত্ব সংকটে তখন তা রক্ষায় সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে গঠন করে দেওয়া হয় টাস্কফোর্স। সরকারের প্রভাবশালী একাধিক মন্ত্রীর সমন্বয়ে গঠিত এ টাস্কফোর্সও ব্যর্থ। তাই দখলদাররা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে।
জানা যায়, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড—এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান মূলত খালের দায়িত্বে রয়েছে। কিন্তু খাল রক্ষণাবেক্ষণ, পুনরুদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় সব কাজে সমন্বয়ের অভাবে ঢাকার খালগুলো একের পর এক দখল হয়ে যাচ্ছে। খাল দেখভালের জন্য ওয়াসার ড্রেনেজ (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) নামে একটি সার্কেল রয়েছে। এখানে একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, দুজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বড় কলেবরের জনবলও রয়েছে। তারা গত কয়েক বছরের মধ্যে কোটি কোটি টাকা খালের নামে বরাদ্দ নিয়ে খরচ দেখালেও বাস্তবে কোনো সুফল মেলেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসার এ সার্কেলের দায়িত্বে নিয়োজিত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো তথ্য দেওয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে এমডি তাকসিম এ খানের লিখিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ’
ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের মোবাইল ফোনে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এরপর প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে এসএমএস দিলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে গত ১৬ জুলাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সমন্বয় সভায় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে খাবার পানি সরবরাহের প্রতিষ্ঠান ড্রেনেজের দায়িত্ব পালন করে না। এটি সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে। তবে আমরা এখন খাল পরিষ্কারে কাজ করে যাচ্ছি। ’
খাল দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানও : রাজধানীর সব খাল শুধু ব্যক্তিই নয়, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও খাল ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া খালে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান। কিছু জায়গায় খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। একসময় খিলগাঁও এলাকার সি ব্লকে জলাশয় ছিল। এর সংযোগ ছিল খালের সঙ্গে। কিন্তু গত সরকারগুলো এ জলাশয় ভরাট করে প্রথমে টিঅ্যান্ডটির এক্সচেঞ্জ অফিস স্থাপন করে। এরপর কিছু অংশ আবাসিক প্লট তৈরি করে বরাদ্দ দেয়। একইভাবে তিলপাপাড়ার পেছনের খালের বড় অংশ ভরাট করে খেলার মাঠ এবং কিছু অংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রামচন্দ্রপুর খালের ২০০ মিটার অংশেই ৩০ ফুট জায়গা ভরাট করে রাস্তা তৈরি করেছে সিটি করপোরেশন। সেগুনবাগিচা খালের ওপর দিয়ে রাস্তা করেছে সিটি করপোরেশন। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্ব দোলাইরপাড়ে কুতুবখালী খালের একাংশ ভরাট করে দনিয়া রোড চওড়া করছে ডিএসসিসি। কুতুবখালী খালের প্রস্থ ছিল প্রায় ৫০ ফুট আর গভীরতা ছিল আট ফুট। বিভিন্ন সময় দখল হওয়ায় খালের পূর্ব দোলাইরপাড় অংশের প্রস্থ এখন ৩০ ফুটে ঠেকেছে। এ খালের দনিয়া রোডে ওয়াসার পানির পাম্প পর্যন্ত কুতুবখালী খালের ১২ থেকে ১৫ ফুট বাঁশ ও টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি অংশে পাইলিং করছে শ্রমিকরা।
খালের জন্য বরাদ্দ কম : ঢাকা শহরের খালগুলো পুনরুদ্ধার এবং রক্ষণাবেক্ষণ, পয়োনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এক হাজার ১০০ কোটি টাকার সমন্বিত প্রকল্প হাতে নিয়েছিল ওয়াসা। বিশ্বব্যাংকের এ টাকার বেশির ভাগই ব্যয় করা হয়েছে খালের পেছনে। এ বিপুল অর্থ ব্যয়ে খালের কী ধরনের কাজ হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় খাল-নদী জরিপের জন্য এর একটি মরফোলজি সার্কেল ও ছয়টি ডিজাইন সার্কেলের অধীনে একটি বড় ডিজাইন দপ্তর রয়েছে। ঢাকার খালগুলো পুনরুদ্ধারে এসব জরিপ ও ডিজাইন দপ্তরের মাধ্যমে প্রবাহপথের নকশা করার কথা থাকলেও তাতে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/07/23/522687