রোহিঙ্গা গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সতর্ক অবস্থান : ইন্টারনেট
২৩ জুলাই ২০১৭, রবিবার, ১০:৫৬

রাখাইনে আরো বেড়েছে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত বছর অক্টোবর থেকে এ বছর মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত চলা সেনা অভিযানের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিপন্নতা নতুন মোড় নিয়েছে। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং জি লি জানিয়েছেন, অভিযান পরবর্তী সময়ে নাগরিকত্বের আবেদনকারী রোহিঙ্গাদের ওপর অজ্ঞাত হামলা এবং তাদের মধ্যকার বিভাজন বেড়েছে। তুরস্কের আনাদোলু পত্রিকায় প্রকাশিত ইয়াং জি লির সাক্ষাৎকারভিত্তিক এক খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।

গত বছর অক্টোবরে ৯ সীমান্ত পুলিশ হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী পুলিশ একযোগে রোহিঙ্গা দমনে অভিযান শুরু করে। মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত চলা সেই সেনা অভিযানে শত শত রোহিঙ্গা নিহত হয়। জানুয়ারিতে রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনের পর জাতিসঙ্ঘ সে সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ আনে। ইয়াং জি লি বলেছেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে আমাদের সর্বশেষ পরিদর্শনের পর পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। আমরা এখনো অব্যাহতভাবে সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের রিপোর্ট পাচ্ছি।’
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের আলাদা কোনো জাতিগোষ্ঠীই মনে করে না। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত ওই জনগোষ্ঠীকে তারা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করে দায়িত্ব অস্বীকার করতে চায়। তবে রোহিঙ্গারা নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক বলেই জানে। নাগরিকত্বকে তারা অধিকার হিসেবেই দেখে। তবে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে গিয়েও তারা অজ্ঞাত হামলার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ইয়াং জি লি। একে মিয়ানমার সরকারের পক্ষের কাজ হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।
এরই মধ্যে গ্রাম প্রশাসকসহ অন্য মুসলিমরা আক্রান্ত হয়েছেন অজ্ঞাত ওই হামলাকারীদের দ্বারা। ‘এই পরিস্থিতি রাখাইনের বেসামরিক রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতিকে আরো করুণ করে তুলেছে। দুই দিককার সহিংসতার শিকার হচ্ছেন তারা’, বলেছেন জাতিসঙ্ঘের এই মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত। রাখাইন রাজ্যে অক্টোবরের সেই দমন অভিযানের পর নিপীড়নের শিকার প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হয়। পরে ইউএনএইচসিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের যথাযথ সহায়তা না দিলে তারা আবার নিপীড়িত হতে পারে।
নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকার অবশ্য রোহিঙ্গা নিপীড়নের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। একইসাথে জাতিসঙ্ঘের তদন্ত কমিটিকেও প্রবেশে বাধা দিয়েছে তারা। প্রবেশের অনুমতি মেলেনি সাংবাদিক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোরও। মংদাওয়ের বুথিদংয়ের দুই দিন ছিলেন সাংবাদিকেরা। এরপর অভিযুক্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সাংবাদিকদের অনুরোধে দেখানো হয় কিয়ার গং তং এলাকাও। তবে সময়ের অভাবের অজুহাত দেখিয়ে সব স্থানে নেয়া হয়নি তাদের।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/237964