১০ জুলাই ২০১৭, সোমবার, ১১:০৭

দেখা অদেখা

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন

সালাহউদ্দিন বাবর

সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে আন্তরিক, কার্যকর প্রয়াস থাকলে তা বাস্তবে রূপ নিতে বাধ্য। তাই অসাধ্য, অসম্ভব বলে কিছু নেই। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও আন্তরিক প্রয়াসই মূল বিষয়। লক্ষ্য সৎ হওয়া, তাতে কোনো খাদ না থাকাই জরুরি। তা না হলে অনিশ্চয়তা ও হতাশা সমাজকে গ্রাস করবে। দেশবাসী দীর্ঘ সময় ধরে কিছু বিষয় নিয়ে হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছে। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান। নির্বাচন হবে এ নিয়ে সংশয় নেই। প্রতি পাঁচ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচন হবে। তবে মাঝে মধ্যে অবশ্য কখনো কখনো ঠিক পাঁচ বছর বিরতিতে নির্বাচন হয়নি। সে যাই হোক, দেশ এখন একটি জাতীয় নির্বাচনের প্রান্তসীমায় এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সে নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়ার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, এটাই দেশের মানুষের জানার বিষয়। কারণ অতীতে গত কয়েক দফা নির্বাচন হয়েছে গুটিকতক দলের অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে। কয়েকটি বড় দলসহ নিবন্ধিত দুই-তৃতীয়াংশ দল সেসব নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাদের দাবি ছিল নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। দলীয় সরকারের পরিবর্তে নির্বাচন-সহায়ক সরকার গঠন, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অনুকূল অবস্থা তৈরি করা, নির্বাচনে পেশিশক্তি ও মাস্তানি বন্ধের স্বার্থে ভোটকেন্দ্রে সেনা মোতায়েন করা। সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বহু দলের পুরনো দাবি। এবারো নির্বাচনের আগে সেনা মোতায়েনের দাবি বিএনপিসহ বেশ কিছু দল অনেক আগে থেকেই জানিয়ে আসছে। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার অর্থ অনেক বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া। নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি বলতে অনেক কিছু বটে, তবে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা মৌলিক ব্যাপার। ভোটারেরা যাতে শান্তিপূর্ণ এবং নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে, ভোট ছিনতাই না হওয়া, নির্বাচনে মাস্তানদের দৌরাত্ম্য না থাকা, ভোটে সব দলের এজেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা ও ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করা। উল্লিখিত বিষয়গুলো বহাল থাকলেই নির্বাচনের পরিবেশ বজায় থাকা বোঝায়। এ জন্য ভূমিকা রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কার্যকর উপস্থিতি এবং তৎপরতা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নির্বাচনের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়, মন্দ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতা পক্ষপাতিত্বের কারণে নির্বাচনের মেজাজ এবং মূল চেতনাটি ভেস্তে গেছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের প্রভাব এবং তাদের কার্যক্রম রুখতে সমর্থ হয় না অথবা স্বেচ্ছায় তারা সরকারি দলের সমর্থকদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে তাদের অপকর্ম অবাধে চলতে দিয়ে থাকে। এ বিষয়গুলো আমাদের নির্বাচনী পরিবেশ ও নির্বাচনকে কলুষিত করে দেয়। ভোটদাতাদের অবাধে ভোট দেয়ার সুযোগ নষ্ট হয়। আর তাতে নির্বাচনের পুরো অর্থটাই বেকার হয়ে যায়। নির্বাচন যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন ভূমিকার কারণে ভণ্ডুল না হয়, তার জন্য প্রায় সব দল নির্বাচনে শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্বটি সেনাবাহিনীর হাতে দিতে দাবি জানিয়ে আসছে। অতীতের অভিজ্ঞতা হচ্ছেÑ যখনই সেনাবাহিনীকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব দিয়ে মোতায়েন করা হয়েছে, তারা নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণতার সাথে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসা অর্জন করেছে।

এবারো বিএনপিসহ অনেক দল নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করলেও এবার তাদের অবস্থান খানিকটা পরিবর্তন করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন মনে করলে সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সেনা মোতায়েন করা হবে। আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাবির ব্যাপারে সাংবাদিকেরা তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তার (খালেদা জিয়া) শাসনামলে অনেক নির্বাচন হয়েছে, সেসব নির্বাচনে তিনি যেভাবে সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছিলেন; আমরাও সেভাবে করব। এ দিকে নির্বাচন কমিশনের সচিব সম্প্রতি বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল চাইলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি ভাবা হবে। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছলে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি পজিটিভলি দেখবে ইসি। সাংবাদিকেরা এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে কমিশনে আলোচনা করতে হবে। এবার সেনা মোতায়েন হবে কি না, সব রাজনৈতিক দল যারা আছে তাদের সাথে আলোচনা করা ছাড়া কমিশন এ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। এ বিষয়ে যদি সব দলের সবাই ঐকমত্যে থাকে, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় নিয়ে আসবে। সেই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি পজিটিভলি চিন্তা করবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করবে ইসি। কেননা বিদ্যমান আইনানুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী নেই। সরাসরি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে না সেনাবাহিনী। ফলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হবে। এ দিকে বিএনপি নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ বলেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে। সেনা মোতায়েনে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

তবে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, নির্বাচনে কোনো না কোনোভাবে সেনাবাহিনী নিয়োগের ব্যাপারটি সবাই এবার চাইছে। অন্য বাহিনীর ব্যাপারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ থাকলেও সেনাবাহিনী সম্পর্কে এমন কোনো সন্দেহ-শোবা নেই, যা আমাদের এ বাহিনীর গৌরব ও সাফল্য। তাদের নিয়ে সব মহল আস্থাশীল এবং এ আস্থা তারা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সেনাসদস্যরা শুধু আস্থাশীলই নয়, তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে তথা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে বলে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়। তাদের প্রতি জাতির এ আস্থা আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য সম্পদ। সে যাই হোক, নির্বাচনে ভোটারেরা যাতে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার অবাধে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সব রকম অনুকূল পরিবেশ পায়, এটাই সবার কাম্য হওয়া উচিত। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের শান্তিশৃঙ্খলা এবং সমৃদ্ধির একটি সোপান সৃষ্টি করবে। এ জন্য সে নির্বাচন সব দিক থেকে ত্রুটিমুক্ত করার প্রয়াস নেয়া খুবই জরুরি। এ প্রসঙ্গে সবার দায়িত্বশীল এবং ইতিবাচক ভূমিকা দরকার। সুখের বিষয়, এ বিষয়টি সরকারি মহলও উপলব্ধি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রীদের দায়িত্বশীল বক্তব্য দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য কমিশন যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে সরকার তাই করবে। এখন সবাই কিন্তু বলটি নির্বাচন কমিশনের কোর্টে দিয়েছে। তা ছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সার্বিক ক্ষমতা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন তাদের ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই জাতি আশা করে, কমিশন সবার সমর্থন ও সংবিধানের শক্তি নিয়ে দেশে একটি প্রশংসনীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম হবে। কমিশনকে এখন একটি কথা স্মরণ রাখতে হবে, কমিশনের বিগত দিনের যারা কর্মকর্তা ছিলেন তাদের অক্ষমতা এবং পক্ষপাতিত্বের কারণে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ভাবমর্যাদা বিধ্বস্ত হয়েছে। জাতির এতটুকু আস্থা তারা অর্জন করতে পারেনি। সেই কমিশনের অধীনে যতগুলো জাতীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন করিয়েছে তার একটিও সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনের নামে হয়েছে প্রহসন।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা কাক্সিত মানে রাখার জন্য বিএনপি ও আরো বেশ কিছু দল সেনা মোতায়েনের দাবি করে আসছিল। তা এখন একটা পর্যায়ে এসেছে আরো কিছু পার হলে এ বিষয়ে আরো আলোচনা ও সমঝোতা হওয়ার পর এ ক্ষেত্রে সবাই ষোলআনা একমত হবে বলে আশা করা যায়। এখন আরো একটি বিষয় নিয়ে একমত হওয়া প্রয়োজন, অবাধ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য অঙ্গ আইনসভা তথা জাতীয় সংসদের কী হাল হয়ে থাকে তা দশম জাতীয় সংসদের কার্যক্রম ও ভূমিকা, যা দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। সংসদে যে বিরোধী দল রয়েছে, সেই দলের এমপিদের বক্তব্য-বিবৃতি যদি লক্ষ করা যায় তবে পরিস্থিতি সবার কাছে স্পষ্ট হবে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য খুরশীদ আরা হক বাজেট আলোচনায় বলেছিলেন, ‘আমরা কোনো ইলেকশন চাই না। প্রধানমন্ত্রী আছেন, থাকবেন। আরো পাঁচ-দশ বছর দেশ চালাবেন।’ সরকারের বিরোধী পক্ষ যদি সংসদে এমনভাবে তোষামোদি বক্তব্য দেয়, তবে সরকারি দলের সদস্যরা লজ্জায় আর কোথায় মুখ লুকাবেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে সংসদের হাল এই হয়ে থাকে। রাষ্ট্রের আইনসভায় বিরোধীদলীয় সদস্যদের মূল দায়িত্ব যেখানে ক্ষমতাসীনদের ভুলত্রুটি খুঁজে বের করে তার সমালোচনা করা, সেখানে এর পরিবর্তে চলছে তোষামোদি। এই পরিস্থিতিতে দেশের হাল কী হবে? তাই আগামীতে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ও একটি কার্যকর বিরোধী দল, যারা সরকারের ভুল ধরিয়ে দেয়ার মতো ভূমিকা রাখবে, তেমন আকাক্সা পূরণে এমন একটি আদর্শ নির্বাচন অপরিহার্য।

একটি অর্থবহ নির্বাচনে জনগণের অংশ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য একটি হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা জরুরি। নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করতে সময় নেবে বেশ। নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা দরকার এ জন্য যে, প্রতি পাঁচ বছর পরপর সাধারণ নির্বাচন হয়। ফলে পাঁচ বছর পর নতুন ভোটার হওয়ার জন্য বহু তরুণ-তরুণীর বয়সসীমা উত্তীর্ণ হয়ে যায়। ভোট দেয়ার জন্য শুধু তালিকায় নাম থাকা জরুরি নয়, সেই সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হবে কি নাÑ এই প্রশ্নের সুরাহা হতে হবে। যদি জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হয়, তবে এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের জটিলতা দেখা দেবে। এখন যারা পরিচয়পত্র পেয়েছেন তাদের সবাই এক ধরনের পরিচয়পত্রের অধিকারী নয়, তাদের মধ্যে কেউ স্মার্টকার্ড পেয়েছেন এবং কারো কাছে পুরনো কার্ড রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোন কার্ড বৈধ হবে? তা ছাড়া গ্রামগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ এখনো কোনো কার্ডই পাননি। কার্ড ছাড়া ভোট নেয়া না হলে তারা কিভাবে ভোট দেবেন। এ দিকে আবার পরিচয়পত্র দেয়া বন্ধ হয়েছে। বিষয়টি সব দিক থেকেই জটিল। আগে ভোটার তালিকার বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। এর আগে যে ভোটার তালিকা হয়েছে তাতে প্রচুর ভুলত্রুটি ছিল। অনেক নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত হননি, আর মৃতব্যক্তিদের নাম সে তালিকায় ছিল। জানা গেছে, ইসি আগামী ২৫ জুলাই থেকে নতুন ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করবে ময়মনসিংহ থেকে।

নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে প্রধান দুই দলের মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে এ প্রশ্নটির সুরাহা জরুরি। এখানে সব দলের আন্তরিকতা খুবই প্রয়োজন। সবাই যদি একটি ফর্মুলার জন্য কাজ করে, তবে অবশ্যই একটা পথ বেরিয়ে আসবে। দেশে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধানবিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাদের যদি সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়, তবে তারা অবশ্যই একটা সুষ্ঠু ফর্মুলা দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর একমত হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে সুশীলসমাজের মত পরিষ্কার হয়েছে। তারা একটি ভালো নির্বাচন চান। সুশাসনের জন্য নাগরিক’র (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার একটি জাতীয় দৈনিকের সাথে আলাপকালে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য এবং সর্বোপরি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের জন্য বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। দলীয় সরকার নিরপেক্ষ আচরণ করে না। নির্বাচন কমিশনকে সেই সরকার সহায়তা দেয় না।

যে কারণে রাজনৈতিক সমঝোতায় যাওয়ার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানে জনগণের সম্মতির শাসন। এর মাধ্যমেই গ্রহণযোগ্য, সর্বোপরি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে। কারণ এ ছাড়া গণতান্ত্রিকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ ধরনের নির্বাচন করাই সাংবিধানিক অঙ্গীকার।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/234391