৭ জুলাই ২০১৭, শুক্রবার, ৫:৪৯

জলজট যানজটে পদে পদে দুর্ভোগ রাজধানীতে

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকালে মেয়র পদপ্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি ছিল যানজটমুক্ত, জলাবদ্ধতামুক্ত, স্মার্ট, মানবিক, আধুনিক, গ্রিন ও নিরাপদ ঢাকা উপহার দেওয়ার। নির্বাচনের পর বেশ কিছু ক্ষেত্রে সফলতাও দেখিয়েছেন দুই মেয়র। কিন্তু গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ঢাকার অর্ধশতাধিক রাস্তা তলিয়ে গিয়ে নগরবাসীর জন্য ভয়াবহ দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। কোথাও কোথাও বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এমনকি অফিসেও ঢুকে পড়েছে পানি। উন্নয়নকাজের নামে খুঁড়ে রাখা হয়েছে বেশির ভাগ ব্যস্ততম সড়ক। সিটি করপো-রেশনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না ঠিকাদাররা। এসব কারণে জলজট আর যানজটে স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানীর অনেক সড়ক। জলমগ্ন সড়কে ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুই মেয়রকে গত বছর পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার পর ২৬ সেবা সংস্থার সমন্বয়কের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। দু-একটি সভা হওয়া ছাড়া সেখানেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। খাল উদ্ধারকাজে কিছুটা এগিয়ে গেলেও দুই মেয়র এখন আর কিছু বলতে নারাজ। ড্রেনেজ অর্থাৎ পানি নিষ্কাশনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসাও নিজেদের বদনাম ঘোচাতে ওই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে মরিয়া। পানি নিষ্কাশনকাজে বিপুল অর্থ ব্যয় করেও সুফল মেলেনি।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পর মতিঝিল, টিকাটুলী অভয়দাস লেন, বঙ্গবাজার, পল্টন, রাজারবাগ, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা, আজিমপুর, শনির আখড়া, বাসাবো, পূর্ব জুরাইন, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড, আদালতপাড়া, চকবাজার রোড, শিক্ষা বোর্ড, খাজে দেওয়ান, শহীদ মিনার রোড, নাজিরাবাজার, বংশাল, নবাবপুর রোড, নর্থ সাউথ রোড পানিতে তলিয়ে যায়। এসব এলাকায় বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে পড়ায় মানুষের ভোগান্তি আরো বাড়ে। অনেকে নিজ বাসস্থান আর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পানি সেচে সরানোর চেষ্টা করেন। মিরপুর, শ্যামলী, কালশী, বাড্ডা, খিলক্ষেত, রায়েরবাজার, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, দক্ষিণ বনশ্রীসহ আরো অনেক এলাকায় দেখা যায় জলাবদ্ধতা। অফিসপাড়া হিসেবে পরিচিত মতিঝিল এলাকার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি পানিতে তলিয়ে যায়।

যেকোনো মাত্রার বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার রাস্তা তলিয়ে যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে মানুষ পড়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে। উন্নয়নকাজের নামে সড়কের উল্লেখযোগ্য অংশ খুঁড়ে রাখায় এমনিতেই যান চলাচল ব্যাহত হয়। বৃষ্টির পর রাস্তার বেশির ভাগ অংশ পানির নিচে থাকায় ব্যস্ত সড়কগুলোতে যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করে ।
নিয়ম মানে না ঠিকাদার : রাজধানীতে উন্নয়নকাজ করতে হলে সিটি করপোরেশন থেকে লিখিত অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদন দেওয়ার সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে না। সিটি করপোরেশনের একাধিক প্রকৌশলী জানান, ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়ার সময় নিরাপত্তা বলয়, ট্রাফিক ডাইভারশন, প্রকল্পের নাম, সময়, ব্যয়—সব সাইনবোর্ডে প্রদর্শন করার কথা। এ ছাড়া রাতে কাজ করতে হলে অবশ্যই সতর্কতামূলক বাতি দিতে হবে। প্রায় সব ঠিকাদারই সবচেয়ে বেশি অনিয়ম করে নির্মাণসামগ্রী রাস্তায় রেখে। খোঁড়াখুঁড়ির সঙ্গে সঙ্গে মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এরপর ওই গর্ত বালু দিয়ে সম্পূর্ণ ভরাট করে ছয় ফুট পর পর কম্প্রেসার দিতে হয়। কিন্তু ঠিকাদাররা খুঁড়ে ওঠানো মাটি পাশে রেখে তা দিয়ে ভরাট করে। ফলে জনগণের চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

ডিএসসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন জানান, খিলগাঁও এলাকায় রাস্তায় কাজ করার জন্য ৪০ দিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় রাস্তা কেটে রাখা হয়েছে। এতে ভয়াবহ ভোগান্তি হচ্ছে। আশপাশ এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
খাল উদ্ধারের উদ্যোগ থমকে : ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মিরপুরের একটি খাল পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ওই কাজ আর হয়নি। একই অবস্থা ডিএসসিসিতেও। ডিএসসিসির মেয়র নগর ভবনে সমন্বয় সভা করে মুগদা খাল উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে তিনি ওয়াসার এমডি এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে নিজে উপস্থিত হয়ে খালের ওপর থাকা অবৈধ দোকানপাট ভেঙে দেন। মেয়র এ কাজ করার পর জানা যায়, খালের ওপর থাকা দোকানগুলো ঢাকা জেলা পরিষদ থেকে ইজারা নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি নিয়ে দেওয়ানি মামলাও হয়। এরপর আর ডিএসসিসির মেয়রকে খাল নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

দুই মেয়রের সমন্বয়েও কাজে আসছে না : রাজধানীর নাগরিকদের জন্য সেবা নিশ্চিত করার কাজ করছে প্রায় অর্ধশত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দুই মেয়র অনেকটা অসহায় বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা পাওয়া দুই মেয়রকে ২৬টি সেবা সংস্থার সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিপত্র জারি করে ঢাকার দুই মেয়রকে নাগরিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার ওই সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও তেমন সুফল মেলেনি। দুই-একটি সভা করা ছাড়া কাজ হয়নি তেমন।

জানা যায়, সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই মেয়রের বৈঠক হয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন (ডিপিডিসি) কম্পানি লিমিটেড, ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), ফায়ার সার্ভিস, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার, বিটিসিএল, বিআরটিএ, স্থাপত্য অধিদপ্তর, তিতাস গ্যাসসহ ২৬টি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে। এরপর আর ওই সব সংস্থার শীর্ষ বা দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি বৈঠকে আসেন না বলে জানা যায়। সূত্র মতে, দুই মেয়রও এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেননি।

ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : এসব বিষয়ে কথা বলতে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকনের কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায় তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শহরের মধ্যে উন্নয়নকাজ করতে গেলে কিছুটা ভোগান্তি হয়। আর অতিমাত্রায় বৃষ্টি হলে তা আরো বেড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে কাজ করতে। ’ জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিনগর এলাকায় কাজ করে জলাবদ্ধতা অনেকটা দূর করেছি। পুরান ঢাকায়ও ড্রেনেজের কাজ করা হবে। মূলত পানি নিষ্কাশনের বড় কাজটি ঢাকা ওয়াসারই করার কথা। ’

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম বলেন, উন্নয়নকাজে কিছুটা সময় নিতে হয় টেকনিক্যাল কারণে। এখন অনেক সড়কে ড্রেনেজের কাজ চলছে। সেখানে বালু ফিলিং করার জন্য কিছুটা সময় দিতে হচ্ছে। আবার ঢালাইয়ের কাজে কম করে হলেও ২৮ দিন লাগে। জলাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন করে কিছু এলাকায় ড্রেনেজ লাইন বসানো শুরু করেছি। আগে এসব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা ছিল না। সবগুলো কাজ শেষ হলে ডিএনসিসি এলাকায় জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে। ’

পানির নিচে ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল : বৃষ্টির পর পানির নিচে থাকা খোলা ম্যানহোলে হরহামেশেই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলের কারণে রাতের ঢাকায় রাস্তাগুলো হয়ে ওঠে আরো বিপজ্জনক। এবার বর্ষায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। এরই মধ্যে বিজয়নগর এলাকায় খোলা ম্যানহোলে পড়ে এক ব্যক্তি মারা যান। ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে প্রায় ১৫ হাজার ম্যানহোল রয়েছে। এসবের বেশির ভাগই ঢাকা ওয়াসার। এ ছাড়া রয়েছে ডিএসসিসি, ডিএনসিসি, বিটিসিএল, তিতাস গ্যাস কম্পানি এবং কয়েকটি বেসরকারি ফোন কম্পানির ম্যানহোল। কর্তৃপক্ষের দাবি, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একবার চুরি হলে কর্তৃপক্ষ আর ঢাকনা লাগাতে আগ্রহ দেখায় না।
তিন বছর ধরে ড্রেনেজের দায়িত্ব ছাড়তে মরিয়া ওয়াসা : জলাবদ্ধতা নগরবাসীর কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে ঢাকা ওয়াসা। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান ২০১৪ সালে চিঠিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে এক চিঠিতে বলেন, ‘‘ঢাকা ওয়াসা ড্রেনেজ সার্কেলের আওতাভুক্ত সব কাজ ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরে প্রস্তুত আছে। এরই আলোকে প্রয়োজনে ঢাকা ওয়াসা ‘ইকুইপমেন্ট’ এবং ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’-এর পাশাপাশি বিদ্যমান জনবল এক বছরের জন্য লিয়েনে প্রেরণ করবে। তাই ঢাকা মহানগরীর জলজট যাতে স্থায়ীভাবে দূর হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য একটি একক সংস্থা ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণ-এর নিকট হস্তান্তরের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা দরকার। ’’

অথচ ওই কাজের দায়িত্ব নিয়েই ঢাকা ওয়াসার জন্ম। পানি নিষ্কাশনের কাজ করার জন্য একটি আলাদা বিভাগ রয়েছে ঢাকা ওয়াসার। সেগুনবাগিচায় থাকা এ বিভাগে প্রায় অর্ধশত প্রকৌশলীসহ কর্মচারীদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে।
খুঁড়ে রাখা বেহাল সড়কে ভয়াবহ দুর্ভোগ : রামপুরা ব্রিজ থেকে মেরাদিয়া হাট পর্যন্ত প্রধান সড়কটির কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়কে রামপুরা ব্রিজ থেকে নামতেই এক পাশের অংশ এতটাই নাজুক যে বর্তমানে যানবাহন চলছে না। আর বনশ্রী পুরো প্রকল্প এলাকার ‘এ’ থেকে ‘এম’ ব্লক পর্যন্ত বেশ কয়েকটি রাস্তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ‘বি’ ব্লক ও ‘সি’ ব্লকে মূল সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। ‘ডি’, ‘ই’, ‘এফ’, ‘জি’ ব্লকে মূল সড়কেরও একই অবস্থা। ‘ডি’ ব্লকের প্রধান সড়কটি ভেঙে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ‘সি’ ব্লকের কয়েকটি রোডের অবস্থাও নাজুক। ‘এ’ ব্লকের ১ নম্বর রোড ও বনশ্রীর পুরাতন ৫ নম্বর রোডটি চলাচলের অনুপযোগী। রামপুরা টেলিভিশন ভবন থেকে বনশ্রী আবাসিক এলাকায় যাতায়াতের রাস্তাটিও প্রায় অচল।

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত প্রগতি সরণিতে দুর্ভোগ চরমে। তিন বছর ধরে একের পর এক উন্নয়নকাজের নামে চলমান কার্যক্রমে নাভিশ্বাস উঠেছে এ রাস্তায় চলাচলকারীদের। ড্রেন পরিষ্কার, ফুটপাত নির্মাণের কারণে দীর্ঘদিন এ সড়কটি প্রায় অচল ছিল। আবার দুই মাস ধরে নতুন করে পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ কারণে তিন লেনের সড়কটির এক লেনও ঠিকমতো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া রাস্তার কয়েকটি স্থান ভাঙা থাকায় যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ২০ মিনিটের রাস্তা দুই ঘণ্টায়ও পার হওয়া যায় না। প্রগতি সরণির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেট থেকে নদ্দা সংযোগ সড়ক পর্যন্ত রাস্তার প্রায় অর্ধেক অংশ কেটে রাখা হয়েছে। আবার ড্রেনের বিভিন্ন অংশে স্লাব উঠে থাকায় পাঁচ-সাত ফুট রাস্তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে পুরো রাস্তার তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে কোনো রকমে যানবাহন চলছে। উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারসংলগ্ন জৈনপুরী রেস্টুরেন্টের সামনের রাস্তা ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে তিন বছর ধরে। এ সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ হলেই উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজার থেকে উভয় পাশে এক থেকে দেড় কিলোমিটার যানজট লেগে যায়।

বছরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে রাজধানীর রোকেয়া সরণিতেও। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগ নিত্যদিনের। মেট্রো রেলের কাজ অনেকাংশে শেষ হয়ে গেলেও রাস্তা মেরামত না করায় অর্ধেক রাস্তায় চলাচল করা দুষ্কর। এরই মধ্যে গ্যাসের লাইনসহ অন্যান্য সেবা সংস্থা নতুন করে কাজ শুরু করেছে। গ্যাসলাইন বসানোর জন্য আগারগাঁওয়ে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে শেওড়াপাড়ার দিকে রোকেয়া সরণির অর্ধেকের বেশি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়িতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশন থেকে ১১ নম্বর সেকশনের প্রধান সড়কটিও। মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের শাহআলীবাগ, দক্ষিণ বিশিল, আহম্মদনগর ও কলওয়ালাপাড়া এলাকার গলির রাস্তাগুলো ভেঙে গেছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এসব রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/07/07/516283