৬ জুলাই ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১২:৪৬

মৌলভীবাজারে বন্যায় ২০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

পানিতে তলিয়ে গেছে বিদ্যালয় সড়ক, মাঠ, অফিসকক্ষ, শ্রেণিকক্ষ। তাই বন্ধ রয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। রমজান মাসের ছুটির পর পাঠদান কার্যক্রম শুরুর দিকে বন্যাকবলিত হয় বিদ্যালয়গুলো। এখন ওই এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে যেমন পানি তেমনি বানের পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর বাড়িও। বন্যার কারণে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বাড়িতেও পড়ালেখা
চালিয়ে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। বন্যার পানি দ্রুতগতিতে না কমায় এ সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। বিশেষ করে এ বছরের পিএসসি, জেএসসি, জেডিসি, দাখিল ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের সিলেবাস অনুযায়ী কোর্স শেষ হবে কি না এনিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তায়। তাই চলমান বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল নিয়েও তাদের ভাবনার শেষ নেই। তাদের মতো ফলাফল বির্পযয়ের দুশ্চিন্তা বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সদস্য ও অভিভাবকদের। প্রায় ২ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও বন্যার পানি না কমে তা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়ায় তাদের এ দুশ্চিন্তা। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের দাবি বন্যা কাটিয়ে উঠলে বিদ্যালয়গুলো খোলার পর বাড়তি পাঠদানের মাধ্যমে এ ক্ষতি পোষিয়ে উঠা। এ বছর উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারি বর্ষণে জেলার হাওর ও নদীগুলোর পানি উপচে পড়ে দেখা দিয়েছে বন্যা। নদী ভাঙন আর উত্তাল হাওর রাক্ষসে হয়ে তাদের সবই গিলে খেয়েছে। দফায় দফায় বন্যায় সবই হারিয়ে তারা একেবারেই নিঃস্ব। এ বছর জেলার হাওর ও নদীগুলোতে চৈত্রের অকাল বন্যার পর এ নিয়ে ৩য় বারের মতো দেখা দিয়েছে বন্যা। গেল দু’বারের বন্যা স্থায়ী না হলেও চলমান এ বন্যা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। সকালে পানি কমে স্থানীয়দের আশান্বিত করলেও বৃষ্টির কারণে আবার রাতের দিকে পানি বেড়ে গিয়ে হতাশ করছে তাদের। জেলার (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫টি (কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, রাজনগর ও মৌলভীবাজার) উপজেলায় মোট ২০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হওয়ায় বন্ধ রয়েছে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় পাঠদান কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত রয়েছেন প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। জেলা (প্রাথমিক) শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল আলিম মানবজমিনকে জানান, গতকাল বিকাল পর্যন্ত বন্যায় মৌলভীবাজারের হাকালুকি ও কাউয়াদিঘি হাওরের তীরবর্তী ৫টি উপজেলার ১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বড়লেখায় ৭০টি, কুলাউড়ায় ৪৪টি, জুড়ীতে ২০টি রাজনগরে ১৪টি ও সদর উপজেলায় ৪টি বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বড়লেখা, জুড়ী, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার ২২টি স্কুলে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=72745&cat=3