৬ জুলাই ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১২:৩২

বন্যার আরও অবনতি : অপ্রতুল ত্রাণ

বানে ভাসা মানুষের কষ্টের সীমা নেই

সিলেট-মৌলভীবাজারে খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষ * নেত্রকোনা-সুনামগঞ্জে ওএমএসের চাল বিক্রি বন্ধ * ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ * প্রবল বর্ষণে ভৈরবে রেললাইনে ধস

সিলেট ও মৌলভীবাজারসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বানভাসি মানুষের মাঝে খাবারের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা খুবই অপ্রতুল। অনাহার-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে ওএমএসের চাল বিক্রিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি ও ফসলহারা কৃষকের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। চরম অভাব-অনটনে দিন কাটছে তাদের। বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়। ভৈরবে রেললাইনের মাটি ধসে যাওয়ায় এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক (ত্রাণ) মো. ইফতেখারুল ইসলাম জানান, সিলেট বিভাগের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য এ পর্যন্ত এক হাজার ১শ’ টন চাল এবং নগদ ১২ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ চালের ৭০০ টন সিলেট, ২০০ টন মৌলভীবাজার এবং ১০০ টন করে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায় দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিলেট জেলার জন্য ১০ লাখ ও মৌলভীবাজার জেলার জন্য দুই লাখ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশের জন্য বিশেষ থোক বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে ৫ হাজার ৫৫৪ টন চাল ও এক কোটি ৯ লাখ টাকা।

যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সিলেট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, গোলাপগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ : বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের তেরা মিয়ার স্ত্রী সাজু বেগম ত্রাণ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভোট আইলে হখলেউ লাম্বা মাত মাতইন, আর মাইনষরে লাখ লাখ টেকা দেইন। অতো দিন ধরি পানির মাঝে আছি আর অখন আইছইন ফটো তুলবার লাগি। ফটো তুললে কিতা পেট ভরবোনি।’ একই ইউনিয়নের রাধাকোনা গ্রামের পানিবন্দি হাছনা বেগম বলেন, এক মাস ধরে পানিবন্দি আছি। ঘরে খাওয়ার কিছুই নাই। পানির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের মিনারা বেগম বলেন, ‘আমরা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছি না।’

ওসমানীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বন্যাকবলিত দেড় লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষের জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৮ টন চাল ও নগদ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টন চাল ও নগদ ৩৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ খাদ্য সংকটে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটালেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ৮টি ইউনিয়নে মাত্র ১৭শ’ জন বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণের চাল ও টাকা বিতরণ করা হয়।

তাজপুর ইউপির নটপুর গ্রামের ভূমিহীন বিধবা সামেলা বিবি (১৪০) বলেন, ‘স্বামী নেই এক ছেলে ছিল সেও আমাকে ছেড়ে গেছে। অন্যের বাড়িতে থাকি। সেখানেও পানি উঠে গেছে। কারও কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সাহায্য পাইনি।’

হাকালুকি হাওরের তীরবর্তী গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কালিকৃষ্ণপুর গ্রাম। বন্যাকবলিত এ গ্রামের মানুষ বুধবার পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পাননি। এ গ্রামের বাসিন্দা সাহেরা বেগমের অভিযোগ, বন্যায় বাড়িঘর ডুবে মানবেতর জীবনযাপন করছি অথচ কোনো ত্রাণ পাইনি। একই গ্রামের ইদ্রিস মিয়া বলেন, বন্যার্তদের ত্রাণ দেয়ার কথা শুনছি কিন্তু আমরা তো কিছুই পেলাম না।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মাইকিং করে ডেকে নেয়ার পরও ত্রাণ দেয়া হয়নি। ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া মঙ্গলবার ফরিদপুর স্কুলে ত্রাণ দেন, তা আমরা পাইনি। অনেক মানুষ ত্রাণ না পেয়ে ফিরে গেছেন।

মৌলভীবাজার, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা : হাকালুকি হাওরপারের বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়ার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে। অধিকাংশ লোক পাচ্ছেন না সরকারি ত্রাণসামগ্রী। আর যা বিতরণ করা হচ্ছে তাতেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রতিনিধিরা তাদের পছন্দের লোকদের মধ্যে তা বিতরণ করছেন। কিছু লোক একাধিকবার পেলেও অধিকাংশ লোক একবারও পাচ্ছে না। এ নিয়ে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আবার নৌকা না থাকায় পানিবন্দি অনেক লোক বাড়ি থেকে বের হয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কেন্দ্রে যেতে পারছেন না।

ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি : ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। আর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বার বিএনপির। ত্রাণ চাইতে গেলে তারা আমাদের উল্টো ধমক দেন। কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের বন্যাকবলিত কাড়েরা গ্রামের ত্রাণবঞ্চিত যগেশ দাস ও প্রণতি দাস এমন অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, মেম্বার-চেয়ারম্যানদের পছন্দের লোকজনই কেবল পাচ্ছে ত্রাণ।

অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও। ২ জুলাই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসে। এরপর জয়চণ্ডী ইউনিয়নের পুশাইনগর বাজারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। সেখানে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। এসব মানুষের মাঝে বিএনপি সমর্থিতদের ত্রাণ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

হাকালুকি হাওরপাড়ে ‘ঢেউ’ আতঙ্ক : ‘ঘরের মেঝেতে ২ ফুট পানি। কোনো মতে খাটের ওপর স্ত্রীসহ দিনযাপন করছিলেন। কিন্তু হাওরের বিশাল ঢেউ ঘরের বেড়া আর ভিটার মাটি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। মনে হয় ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটতে হবে।’ হাকালুকি হাওরতীরের জুড়ী উপজেলার জাফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও গ্রামের মাজু মিয়া (৫০) এভাবেই জানলেন নিজের আতঙ্কের কথা।

বেলাগাঁও গ্রামের মহিউদ্দিন, শুকুর মিয়া, তৈমুছ আলী, ফিরোজ মিয়া জানান, তাদেরও একই অবস্থা। বন্যায় যতটা না দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাকালুকি হাওরের এই উত্তাল ঢেউয়ে। বিশেষ করে হাওরের দক্ষিণ তীরের কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নে এই উত্তাল ঢেউ মানুষের বাড়িঘর তছনছ করে দিচ্ছে। ইউনিয়নের বড়দল গ্রামের সাইফুর রহমান, ভুকশিমইল গ্রামের জাবদ আহমদ, সেজু মিয়া, জেবুল আহমদ, শেখ ইমন, কামাল আহমদ, কাড়েরা গ্রামের জামাল মিয়া জানান, বন্যায় ফসল গেল। রাস্তাঘাট গেল। এবার ঢেউয়ের কবল থেকে বাড়িঘর মনে হয় আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ঢেউয়ের কবল থেকে রক্ষার জন্য মানুষ কচুরিপানা দিয়ে বাড়িঘর রক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে হাওরতীরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষাণ¥াসিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

নেত্রকোনা : পহেলা জুলাই থেকে খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম (ওএমএস) বন্ধ থাকায় আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের শত শত কৃষক পরিবারে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ওএমএস ডিলারের দোকানে ভিড় করেন কৃষকরা। চাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যান। মদন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, জুন পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রমের বরাদ্দ ছিল। নতুন করে বরাদ্দ না আসায় এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ওএমএস ডিলার নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ঈদুল ফিতরের পর চাল উত্তোলনের চিঠি না আসায় আমরা ডিও করতে পারছি না। প্রতিদিন শত শত ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন চাল নিতে আমাদের দোকানে ভিড় করছেন। আমরা তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বিদায় করছি।

সুনামগঞ্জ : হাওরের ফসলহারা কৃষক ও হতদরিদ্রদের মাঝে ওএমএসের চাল বিক্রি আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ফসলহারা কৃষক পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছে। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ সরকারি খাদ্যগুদামের ওসি এলএসডি অসীম কুমার তালুকদার বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা মোতাবেক ৩০ জুন থেকে ওএমএসের চাল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। কেন বন্ধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন।

জামালগঞ্জ উপজেলার পাকনার হাওরপারের কৃষক তাজউদ্দিন বলেন, ফসল হারানোর পর লাজ-লজ্জা ভুলে বাঁচার তাগিদে লাইনে এসে ওএমএসের চাল কিনতাম। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, ফসলহারা কৃষকদের অবস্থা খুবই নাজুক। এ অবস্থায় ওএমএস বন্ধ থাকলে মানুষের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

ভৈরব : বুধবার সকাল ৬টার দিকে প্রবল বর্ষণে ভৈরব রেলস্টেশনের অদূরে সিগন্যাল পয়েন্ট সংলগ্ন ২৯ নম্বর সেতুর কাছে রেললাইনের মাটি ধসে গেছে। এতে তিতাস ট্রেন প্রায় ১ ঘণ্টা আটকা ছিল। পরে রেলওয়ের কর্মচারীরা ধসে যাওয়া মাটি ভরাট করে দিলে সকাল ৭টার দিকে ট্রেন চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়। ভৈরব রেলস্টেশন মাস্টার অমৃত লাল দাস বলেন, ওই সময় তিতাস ছাড়া অন্য কোনো ট্রেন না থাকায় চলাচলে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।

চাটমোহর (পাবনা) : চাটমোহরে তিন দিন ধরে টানা বর্ষণের কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) : ধোবাউড়ায় বেতগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানির নিচে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত বিদ্যালয়টি এখন নেতাই নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে। এখনই রক্ষার উদ্যোগ না নিলে যে কোনো সময় নদীর স্রোতে ভেসে যেতে পারে বিদ্যালয় ভবনটি।

বরিশাল : বুধবার সকাল থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সাধারণ লোকজনের কর্মজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নগরীর ছিন্নমূল মানুষ ও খেটে খাওয়া মানুষ। এদিকে মৌসুমি এ লঘুচাপের কারণে বরিশাল নদীবন্দরে ১নং সংকেত দেয়া হয়েছে।

বান্দরবান : জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা শহরে ১০টি এবং লামা উপজেলা সদরে ২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে লামায় ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারিভাবে খোলা ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত ৭০৩ পরিবারের মাঝে খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক এবং বান্দরবান পৌর মেয়র ইসলাম বেবী জানান, প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ আশ্রয় কেন্দ্রে পরিবারগুলোর মাঝে খিচুড়ি বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) : চন্দনাইশে ৪ দিনের অবিরাম বর্ষণে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কৃষকের আউশ-আমনের বীজতলা ও রোপণ করা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

কাউখালী (পিরোজপুর) : তিন দিন ধরে টানা বর্ষণে উপজেলার নিন্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের রাস্তাঘাটে হাঁটুপানি। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারেনি। দিনমজুররা কাজ না পাচ্ছেন না। ফলে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

বগুড়া : সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের রৌহাদহ, চন্দনবাইশা ইউনিয়নের শেখপাড়া, চরঘুঘুমারি, কুতুবপুর ইউনিয়নের নিচ কর্ণিবাড়ি, ধলিরকান্দি ও বয়রাকান্দি গ্রামে নতুন করে বন্যার পানি ঢুকেছে। এতে প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন জানান, বুধবার সকালে যমুনার পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কক্সবাজার, টেকনাফ ও চকরিয়া : প্রবল বর্ষণে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণ ও বৈরী আবহাওয়ার ফলে কক্সবাজারের আকাশে এসেও অবতরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট। এদিকে বুধবার চকরিয়ায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মাতামুহুরি নদীর চিরিঙ্গা ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে ৫টি বসতবাড়ি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এলাকার প্রায় ৩ লাখ মানুষ তিন দিন ধরে পানিবন্দি।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের প্রধান প্রধান নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে দ্রুতগতিতে। পানি বাড়ার ফলে এরই মধ্যে দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে পাট, আউশ, সবজিসহ কিছু ফসল। এ ছাড়া ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে শতাধিক পরিবার।

http://www.jugantor.com/first-page/2017/07/06/137099