৫ জুলাই ২০১৭, বুধবার, ১২:২২

আতপ চাল কেনাতে জোর সরকারের

আতপ চাল কেনায় জোর দিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। এখনো পর্যন্ত দরপত্রের মাধ্যমে এক লাখ টন ও সরকার টু সরকার পর্যায়ে আড়াই লাখ টন চাল কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে সাড়ে তিন লাখ টন চাল কেনার কার্যাদেশ দিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে আড়াই লাখ টনই আতপ চাল। বাকি এক লাখ টন সিদ্ধ চাল কেনা হচ্ছে। এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান বলেন, চাল কিনতে বেশি সময় দেয়া যাবে না। আতপ চাল কিছুটা সহজলভ্য। এ জন্য
আতপ চাল কেনায় জোর দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্যোগপ্রবণ সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ ভাত হিসেবে আতপ চালকে পছন্দ করে। এসব চিন্তা করেও আতপ চাল কেনা হচ্ছে। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে তিন লাখ টন চাল গুদামে মজুত হওয়ার পাইপ লাইনে রয়েছে। এরই মধ্যে ৫০ হাজার টন চাল ও ৫০ হাজার টন গম কেনার
দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ মাসেই চাল ও গম কেনার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকার টু সরকার (জিটুিজ) পদ্ধতিতে ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন আতপ ও ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল রয়েছে। আতপ চাল কিনতে ৭১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও সিদ্ধ চাল কিনতে ১৯৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা লাগছে। এর আগে জি টু জি ভিত্তিতে চাল আমদানি করতে গত ২৮শে মে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের দূতের মাধ্যমে ভিয়েতনাম সরকারের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর ভিত্তিতে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত নয় সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে জি টু জি পদ্ধতিতে চাল আমদানির চুক্তিনামার শর্ত এবং মূল্য নিয়ে আলোচনা হয় ও নেগোসিয়েশন হয়। আলোচনা ও নেগোসিয়েশন শেষে দুই লাখ টন আতপ চাল প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে এবং ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল ৪৭০ ডলার দরে আমদানির সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম এগ্রিড মিনিটস অফ দ্য মিটিং স্বাক্ষর করে। এরপর গত ১৪ই জুন বিষয়টি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দেয়। অনুমোদনের ভিত্তিতে ভিয়েতনাম থেকে চাল আসছে। ভিয়েতনাম থেকে চাল কেনার সিদ্ধান্তের আগেই ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি আতপ ও ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। দরপত্রের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৩৫.৫১ টাকায় সিদ্ধ চাল ও ৩৩.৭৩ টাকায় আতপ চাল কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কিনতে লাগছে ১৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার পাঁচ শ’ টাকা এবং ৫০ হাজার টন আতপ চাল কিনতে লাগছে ১৬৮ কোটি ৬৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক লাখ টন চাল কিনতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা লাগছে। উল্লেখ্য, গত ২৫শে মে’র খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী চালের মজুত দুই লাখ ২৪ হাজার টন ও গমের মজুত দুই লাখ ৭৫ হাজার টন। সব মিলিয়ে চার লাখ ৯৯ হাজার টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে মজুত রয়েছে।