৩ জুলাই ২০১৭, সোমবার, ১২:৫২

৬ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৮৫ : গুম ৫৭ জন : অধিকার

গত ছয় মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৮৫ জন। গুম হয়েছেন ৫৭ জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল রোববার অধিকার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অধিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, গত ছয় মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৮৫ জন। এর মধ্যে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৭৯ জন। গুলিতে নিহত হয়েছেন একজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন চারজন। পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে একজনকে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৭ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিলে ১০ জন, মে মাসে ৯ জন এবং জুনে নিহত হয়েছেন ১৩ জন।
জানুয়ারি মাসে গুম হয়েছেন ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে একজন, মার্চে ২১ জন, এপ্রিলে দুইজন, মে মাসে ২০ জন এবং জুনে গুম হয়েছেন সাতজন। প্রতিবেদনে অধিকার উল্লেখ করেছে, এই সময়ে কারাগারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২২টি। গত ছয় মাসে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন ১০ জন, আহত হয়েছেন ২৪ জন, অপহৃত হয়েছেন ১৪ জন। গত ছয় মাসে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ সাংবাদিক, লাঞ্ছিত হয়েছেন দু’জন এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৯ জন।
গত ছয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৪৭ জন। আহত হয়েছেন দুই হাজার ৪৬৫ জন। এ সময়ে ৩৭১ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২৪ জন। এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৩০ জন। যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১২৮ জন। এ সময়ে গণপিটুনীতে নিহত হয়েছেন ২১ জন মানুষ।
অধিকার বলেছে, গুম রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের একটি হাতিয়ার যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গুম হওয়া ব্যক্তিরা প্রায়ই নির্যাতনের শিকার হন এবং গুমের পর অনেককেই হত্যা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর অনেকেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ভিকটিমদের পরিবারগুলোর দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তারা গুম হয়েছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে আটক ব্যক্তিকে জনসম্মুখে হাজির করছে অথবা কোনো থানায় নিয়ে হস্তান্তর করছে বা গুম হওয়া ব্যক্তিটির লাশ পাওয়া গেছে।
অধিকার বলেছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার কাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করার কারণে এইসব বাহিনীর সদস্যরা দায়মুক্তি ভোগ করছে। এর ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি, তুলে নিয়ে আসা ও তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
অধিকার রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। গুম এবং হত্যার ব্যাপারে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছে।


http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/232545