৩ জুলাই ২০১৭, সোমবার, ১২:৫১

বড় নদীগুলোতে পানি বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা

বড় সবগুলো নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির এ প্রবণতা আরো ৪-৫ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ দিকে বাংলাদেশের আকাশে মওসুমি বায়ু বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের বর্তমান ধারার খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। এ ছাড়া দেশের বাইরে ভারতের পূর্বতাঞ্চলে মওসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বর্ষণ হচ্ছে। সেখানকার পানিও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে পলি পড়ে ভরাট হওয়া নদীর দু’কূল ছাপিয়ে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ফলে তাপমাত্রাও হ্রাস পাবে সারা দেশেই। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারী বর্ষণের কারণে তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগেও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলোর পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
ইতোমধ্যে সিলেট অঞ্চলের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর বাইরে নীলফামারী জেলার ডিমলায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। কুশিয়ারা নদী ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি অমলশীদে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার এবং একটু ভেতরে শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাটে সুরমা ৫৯ সেন্টিমিটার, শেরপুর-সিলেট সীমান্তে কুশিয়ারা ২৪ সেন্টিমিটার, ডালিয়ায় তিস্তা ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা, সুরমা ও কুশিয়ারা ছাড়া আপাতত অন্য কোনো নদী বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মার মতো বড় নদীতে পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আরো দুই দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীতে পানি বাড়তে থাকবে। ঠিক একদিন পর গঙ্গা-পদ্মা নদীতে ভারতীয় পানি প্রবেশ করতে থাকবে। ফলে আগামী দিনগুলোতে নদীগুলোর নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানিও বাড়বে। সুরমা ও কুশিয়ারা ইতোমধ্যে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এ দুই নদীতে গতকাল রোববার পর্যন্ত তেমন পানি না বাড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর এ দুই নদীতেও পানি বাড়বে। এ দুই নদীর মিলিত স্রোত মেঘনা নাম ধারণ করে চাঁদপুরে পদ্মার সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মনিটর করে এমন ৯০টি স্টেশনের মধ্যে ৪৫টি স্টেশনে গতকাল পানি বেড়েছে। পানি কমেছে ৩২টি স্টেশনে। গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বেশ উপরের দিকে। চিলমারীতে ১০৯ মিলিমিটার, রংপুরে ৯৭ মিলিমিটার, কুড়িগ্রামে ৬১ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লোরেরগড়ে বৃষ্টি হয়েছে ৭২ মিলিমিটার।


http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/232544