৩০ জুন ২০১৭, শুক্রবার, ১১:৩৫

জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী

দেশের ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত নাজুক

দেশের ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে, যা সমগ্র অর্থনীতিকে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, এ জন্য যা যা পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, তা নিতে হচ্ছে, যাতে অর্থনীতি ঝুঁকিতে না পড়ে। আর ব্যাংকের লালবাতি জ্বললে আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। সরকার ব্যবসা করলে ভালো করে না, এ জন্যই সরকারকে ব্যবসা করার কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থ বিভাগ খাতে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় নির্বাহে রাষ্ট্রপতিকে অনধিক ৫৩ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা মঞ্জুরের প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন সাতজন সংসদ সদস্য। তাদের আপত্তির জবাবে বক্তব্য দেয়ার সময় উল্লিখিত মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

অনেক নাটকীয়তার পর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সংসদ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্য অর্থবছরের সব ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারকে সংযুক্ত তহবিল থেকে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২১৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ দিয়েছে। এই অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দিয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল ২০১৭ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আগামীকাল ১ জুলাই থেকে নতুন এ বাজেট কার্যকর হবে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের চতুর্থ বাজেট এটি। আর অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের টানা নবম বাজেট।

তবে বাজেট প্রস্তাব করার পর ভ্যাট আইন এবং আবগারি শুল্ক নিয়ে বিতর্কের অবসান হলেও জটিলতা অনেক বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ বাজেটে ভালো দিক থাকলেও মন্দ দিক অনেক বেশি। বিশেষ করে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের শেষ সময়ের নাটকীয়তা আর সিদ্ধান্তহীনতায় পুরো বাজেটের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে ভ্যাট ছাড়াও আয়কর আদায় বেড়ে যাবে। জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ে উল্লম্ফন হবে এমন আশার কথাও শুনিয়েছিলেন এনবিআরের নীতিনির্ধারকরা। এ হিসাব মাথায় নিয়েই অর্থমন্ত্রী আয়-ব্যয়ের প্রাক্কলন করেন। কিন্তু এখন পুরনো ভ্যাট আইন বিদ্যমান থাকায় আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে এমন আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। কারণ রাজস্ব আদায় স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। প্রাক্কলিত রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি বেড়ে যাবে অস্বাভাবিক হারে। আর একই হারে ব্যয় না কমালে বাজেট ঘাটতিও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাবে। অথচ বাজেটের লক্ষ্যপূরণে ঘাটতির এ বাড়তি অর্থ কোথা থেকে আসবে তা স্পষ্ট করেননি অর্থমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে আগামী অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী মুহিত সংসদে এ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। ৮৪ বছর বয়সী মুহিত এ বাজেটকে নিজের ‘সর্বশ্রেষ্ঠ বাজেট’ বললেও এবারই সবচেয়ে বেশি সমালোচনা সইতে হয়েছে তাকে, বিশেষ করে ভ্যাট আইন ও ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক ইস্যুতে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যদের বাইরে নিজ দল আওয়ামী লীগ, এমনকি মন্ত্রিসভার সহকর্মীরাও মুহিতের সমালোচনা করেছেন। দীর্ঘ আলোচনার পর ব্যাংক আমানতের আবগারি শুল্কের প্রস্তাবে বুধবার সংশোধনী আনা হয়। সেইসঙ্গে সব ক্ষেত্রে সমান ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের প্রস্তাব দু’বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। এ দুটি বিষয়ের সঙ্গে আরও কিছু বিষয় সংশোধন করে বুধবার সংসদে অর্থবিল পাস হয়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পাস হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত স্পিকারের অনুমতি নিয়ে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যদের সবাইকে বাজেট-উত্তর নৈশভোজে যোগ দেয়ার নিমন্ত্রণ জানান।

এর আগে জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নেতৃত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয় সকাল ১০টায়। এরপর বাজেটের ওপর আলোচনায় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা ৫৯টি ছাঁটাই প্রস্তাব ও ৩২৫টি দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে আলোচনার জন্য ৭টি দাবি গৃহীত হয়। দাবিগুলো হল অর্থ বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের। এসব মঞ্জুরি দাবির ওপর বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সদস্যরা তাদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন। যদিও আলোচনা শেষে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

সংসদে পাস হওয়া ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২১৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দের নির্দিষ্টকরণ বিলটিই মূলত গ্রস বাজেট। বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও অন্যান্য খাতে বাজেটে সরকারের অর্থ বরাদ্দের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এই অর্থ কখনও ব্যয় হয় না। যা বাজেটের আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে হিসাব মেলানো হয়। এই বাধ্যবাধকতার কারণে এবারের বাজেটেও ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪২ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা ব্যয় হবে না। অর্থমন্ত্রী গত ১ জুন জাতীয় সংসদে যে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করেছেন, সেটাই ব্যয় হবে। সেটাই আগামী অর্থবছরের নিট বাজেট।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার এ বাজেটের মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৩ কোটি টাকা; যার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা যাবে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)। আর অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। এই অনুন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে ৫৩ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধেই যাবে, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের ২২ শতাংশ। বিশাল এ ব্যয়ের প্রায় ৭২ শতাংশ অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করেছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে কর হিসেবে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী।

ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত স্পর্শকাতর -অর্থমন্ত্রী : অর্থ বিভাগ খাতে ৫৩ হাজার ৮৩৩ কোটি ৮০ লাখ ৭১ হাজার টাকা দাবির বিপরীতে ৭ জন সংসদ সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাবে ব্যাংকিং খাত নিয়ে সমালোচনা করেন। জাতীয় পার্টির এমপি নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, আমাদের ব্যাংকের অবস্থা সংকটাপন্ন। বেশিরভাগ ব্যাংক পরিচালক নিজেদের মধ্যে ঋণ ভাগ করে নিচ্ছে। মালিক ও পরিচালকরা টাকা গিলে খাচ্ছে। স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে। অর্থই অনর্থের মূল। এখন পারিবারিকভাবে পরিচালক হতে পারে। সরকারি ব্যাংক জনগণের টাকা দিয়ে পুষবেন। আবার বেসরকারি ব্যাংকও একই দিকে যাচ্ছে। ব্যাংক কমিশন করেন। এসব বিষয়ে জোরালো ও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এই যে বেসরকারি ব্যাংকের সব ডিরেক্টর পারিবারিক, স্বতন্ত্র ডিরেক্টর নেই, লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক এখন লুটপাটের জায়গা হয়েছে। সরকারি ব্যাংক তো হয়েছেই। ব্যাংক আর ব্যাংক থাকবে না। ব্যাংকগুলো মুদি দোকান হয়ে যাবে।’ ফখরুল ইমাম বলেন, ‘ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়, বাতাসের বেগ দেখে মেঘ চেনা যায়। আর যারা ব্যাংক লুট করেছে, অর্থমন্ত্রী তাদের চিনবেন না, এটা হয় না।’ রাজধানীর ইসলামপুরে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে কীভাবে পাঁচ হাজার টাকা পাওয়া যায়, তা তদন্ত করে দেখতে তিনি অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানান।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব অভিযোগ এসেছে তাতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ খাতে সুশাসন দুর্লভ। ব্যাংকের পরিচালকদের অবশ্যই দায়-দায়িত্ব আছে। এ নিয়ে আইন তৈরি করা হয়েছে। এটা সংসদীয় কমিটি বিবেচনা করছে। কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর সরকারের অভিমত জানানো হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে খামাখা ভর্তুকি দিচ্ছি বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। এটা ঠিক নয়। কারণ ব্যাংকিং হচ্ছে খুবই স্পর্শকাতর খাত। ব্যাংকিং খাতের কোনো ধরনের বিপর্যয় সারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এ ছাড়া সুশাসন শব্দটির সীমা ব্যাপক। ৮ বছরে সরকার ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের জন্য ন্যায়নিষ্ঠভাবে কাজ করেছে। এরই মধ্যে এর সুফল আপনারা দেখতে পেয়েছেন। ব্যাংকিং খাতে ৫৮টি ব্যাংক কাজ করছে। আশা করি, আমাদের দেশেও ব্যাংকিং খাত অনেক অগ্রসর হবে।

গঠনমূলক সমালোচকরা আমার বন্ধু -সেতুমন্ত্রী : সড়ক বিভাগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের বিরোধিতা করে বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, শুধু রাস্তা নির্মাণ করলেই হবে না, জনগণ যাতে নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যানজট নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। সড়ক নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই সড়ক নির্মাণের মান বৃদ্ধি করতে হবে।

জবাবে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গঠনমূলক সমালোচনা যারা করেন, তারা আমার বন্ধু। চাটুকার-মোসাহেবরা আমার শত্রু। কারণ তারা বলবে সব ঠিক আছে। কারোর মনে করা উচিত নয়, আমরা সব ভালো করছি। আমাদেরও ভুল হতে পারে, ভুল হয়। তিনি বলেন, বিএনপি বাজেটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে। ভাবটা এমন- ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলন করবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর গঠনমূলক পদক্ষেপের কারণে পাস হওয়া বাজেট নিয়ে এখন সারা দেশেই আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। মন্ত্রী বলেন, তিন বছরের মধ্যে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কম হয়েছে। সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণে কিছু সমস্যা আছে, শতভাগ দুর্নীতি দূর করতে পারিনি। স্বীকার করছি, যানজট আছে। এবারের ঈদে এক কোটি মানুষ গ্রামেগঞ্জে গেছেন। গতি কম ছিল, কিন্তু যানজট ছিল না। মন্ত্রী-এমপি-ভিআইপিরা উল্টোপথে গেলেই যানজট হয়। জনগণকে আইন মানতে বলার আগে আমাদের নিজেদের আইন মানতে হবে। আমাদের মনমানসিকতার পরিবর্তন না হলে যানজট দূর হবে না। পদ্মা সেতুর কাজ ৪৬ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চালানোর ব্যাপারে কাউকে উৎসাহিত করা উচিত নয়, এতে প্রাণহানির ঘটনা বেশি হচ্ছে।

দেশের চিকিৎসকদের ওপর বিশ্বাস রাখুন -স্বাস্থ্যমন্ত্রী : স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাব দিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার চিকিৎসক দিলেও তারা এলাকায় থাকেন না। অনেক স্থানেই আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। অনেক জেলায় সিসিইউ, আইসিইউ নেই। বাজেট অপ্রতুলতার কারণে তৃণমূলে অ্যাম্বুলেন্স নেই। জননিরাপত্তা কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে জনসংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। সব উন্নয়ন বৃথা যাবে যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা না যায়। এটি সর্ববৃহৎ সেবা খাত, তাই এ খাতে বাজেট আরও বাড়াতে হবে।

জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, চিকিৎসকদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের চিকিৎসার ওপর বিশ্বাস করেন বলেই দেশে চিকিৎসা নেন। অথচ সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ বিদেশে চিকিৎসা নেন- এটা তার বলা ঠিক নয়। বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি চান, সেটা অর্থমন্ত্রীকে বলুন। বাংলাদেশে অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সার্জন রয়েছেন। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও কাজ করে যাচ্ছি বলেই বিশ্বের অনেক দেশ থেকে স্বাস্থ্যসেবায় অনেক দূর এগিয়ে আছি।

প্রত্যেক গ্রামকে যোগাযোগের আওতায় আনা হবে -স্থানীয় সরকারমন্ত্রী : স্থানীয় সরকার বিভাগ খাতে বরাদ্দের বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাব এনে বিরোধী সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন, দেশের অনেক স্থানেই রাস্তাঘাট ধ্বংসের পথে। দক্ষতার অভাবে অনেক রাস্তা নির্মাণের পরই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আবার দীর্ঘদিনেও ঠিকাদাররা কাজ শেষ করছে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থানীয় সরকারের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় না। দেশ ডিজিটাল হলেও স্থানীয় সরকার বিভাগ এখনও এনালগে চলছে। ঠিকাদাররা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কাজ নিয়ে সঠিকভাবে করছে না, কাজ না করেই বিল নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তিই নষ্ট হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। সারা দেশেই সুষম উন্নয়ন করতে হবে। জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকার উন্নয়নমুখী বিভাগ। নগর ও গ্রামীণ এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় এ বিভাগের মাধ্যমে। ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৬২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেক গ্রামকে আমরা যোগাযোগের আওতায় আনছি। ব্যাপকভাবে গ্রামীণ পর্যায়ে অর্থ সঞ্চালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সমস্যা রাস্তার নয়, সমস্যা ট্রাফিকের। ধারণক্ষমতার বাইরে লোড পড়লেই রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমেই সারা দেশকে উন্নয়ন-সমৃদ্ধির পথে নেয়া যাবে।

অসাধু ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়েছে -খাদ্যমন্ত্রী : খাদ্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের বিরোধিতা করে বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং রফতানির দেশ হিসেবেও পরিচিত। ১০ টাকা কেজি করে চাল বিক্রির রেকর্ড আমাদের রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে কী হল- মোটা চালের দাম ৫০ টাকা, এটা কেন হল? মনিটরিংয়ের সুব্যবস্থা নেই কেন? সরকার কৃষকের কাছ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করছে, তা সঠিকভাবে হচ্ছে না। কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। প্রথমেই সরকার আমদানি কর কমিয়ে দিলে জনগণকে এমন দুর্ভোগে পড়তে হতো না। ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিতে পারত না। এতে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে অনেক টাকা চলে গেছে। তাই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।

জবাবে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি চালের দাম বৃদ্ধির কারণেই আমার প্রতি এমন বিষোদ্গার। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিদেশে রফতানি করার সক্ষমতা অর্জন করেছি, এটাও ঠিক। আসলে হাওরাঞ্চল থেকে বোরো ফসল আসেনি। কিন্তু আগাম বন্যার কারণে সব বোরো ধান ধ্বংস হয়ে গেছে। অকাল বন্যা ও অতিবৃষ্টির সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের চালের মজুদ একটু কম আছে, এটা ঠিক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চাল আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ৪ লাখ টন চাল আমদানির জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও চাল আমদানির চিন্তাভাবনা সরকারের রয়েছে। কৃষক এবার উৎপাদিত মূল্য পেয়েছেন। খাদ্য আমদানি প্রসঙ্গে তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, এবার যে চাল ও গম সংগ্রহ করা হচ্ছে, তার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ থাকবে না। এবার সাড়ে ১২ প্রোটিনের গম আমদানি করা হচ্ছে। এর বাইরে কোনো গম আনা হবে না।

সরকারের কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই -বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী : বিদ্যুৎ খাতে বাজেট বরাদ্দের বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাব এনে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কথা বলা হয়েছে। লোকসান ও ভর্তুকির কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যাবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অর্ধেকের নিচে নেমে এলেও সরকার ৬-৭ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। অথচ দেশের অধিকাংশ এলাকায় জনগণ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, লোডশেডিং হচ্ছে।

জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকারের অভিধানে অসম্ভব বলে কোনো কথা নেই। আমরা ১৪৬ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১৮ সালের মধ্যে আমরা শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করব। অতীতে ১২-১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। ৪০ বছরে মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের মাত্র ৭ বছরে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এ সময়ে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছি।

তিনি বলেন, অতীতে বিএনপি সরকার দুর্নীতির কারণে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। সে কারণে দলটি ‘খাম্বা সরকার’ টাইটেল পেয়েছে। সেই অবস্থা থেকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। শতভাগ প্রিপেইড মিটার আমরা ব্যবস্থা করছি। এত অল্প সময়ের মধ্যে আলোকিত বাংলাদেশ সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমের কারণে।

শিক্ষার গুণগতমান বেড়েছে -শিক্ষামন্ত্রী : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের বিরোধিতা করে বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেছেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে এসএসসি পরীক্ষার ওপর জোর দেয়া উচিত। এমপিওভুক্ত না করায় সংসদ সদস্যরা প্রায়ই নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। উন্নয়নের মূল বাধা হচ্ছে ঠিকাদার। এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করলে দুর্নীতি অনেক কমবে। সামনে নির্বাচন। স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাই নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তাই এমপিওভুক্ত করা উচিত।

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। সংসদে এইচএম এরশাদ বলেছেন, আমরা নাকি গরু-ছাগলদের পাস করাচ্ছি! তার মতো একজন ব্যক্তির এমন কথা বলা উচিত হয়নি। এতে করে শিক্ষার্থীদের মানসিকতা নষ্ট হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার মান অবশ্যই বৃদ্ধি পেয়েছে। মান কমে যাচ্ছে, এটা বলা যেন অনেকের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষায় মানসম্মত শিক্ষক তৈরি করতেও আমরা ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

খাতওয়ারি বরাদ্দ : বাজেটে খাতওয়ারি বরাদ্দের মধ্যে অর্থ বিভাগের ব্যয় ২ লাখ ৬ হাজার ৫৩০ কোটি ৮৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। ব্যয়ের দিক থেকে সবচেয়ে কম রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে। এ খাতে ব্যয় ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। অনুমোদিত ব্যয় পর্যায়ক্রমে হচ্ছে প্রতিরক্ষায় ২৫ হাজার ৭৪০ কোটি ৭৫ লাখ ৮ হাজার টাকা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগে ২৪ হাজার ৬৭৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। অন্য খাতের ব্যয়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ খাতে ৩১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খাতে ১ হাজার ৪৫৭ কোটি ৬৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ৯৫ কোটি ৫ লাখ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ১ হাজার ৭০ কোটি ৮০ লাখ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৪৮ কোটি ৪১ লাখ, সরকারি কর্মকমিশন খাতে ৭৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। অর্থ বিভাগ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কার্যালয় খাতে ১৯৬ কোটি ৫ লাখ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ২ হাজার ২০৬ কোটি ৩ লাখ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ২ হাজার ৫৪০ কোটি ৬৩ লাখ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ খাতে ১০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। পাশাপাশি পরিকল্পনা বিভাগে ১ হাজার ৩৩২ কোটি ৫৭ লাখ, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে ১০০ কোটি ৫৩ লাখ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৫১৮ কোটি ৭ লাখ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ৬১১ কোটি ৮৯ লাখ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ১৮৯ কোটি ৩০ লাখ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ৩০ কোটি ৪১ লাখ, আইন ও বিচার বিভাগে ১ হাজার ৪২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ধরা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ১৮ হাজার ২৮৭ কোটি ৮৮ লাখ, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে ২১ কোটি ৮৭ লাখ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২২ হাজার ২৩ কোটি ২৮ লাখ ১৯ হাজার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ২৩ হাজার ১৪৭ কোটি ৯৫ লাখ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় খাতে ১১ হাজার ৩৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ১৬ হাজার ২০৩ কোটি ৩৬ লাখ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৯৭৩ কোটি ৬৮ লাখ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ৪ হাজার ৮৩৩ কোটি ৭৩ লাখ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৮৫ লাখ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় খাতে ২৬২ কোটি ৮৭ লাখ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় খাতে ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৮৪ লাখ, তথ্য মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ১৪৫ কোটি ৯৯ লাখ এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪১৭ কোটি ৭৭ হাজার টাকা। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬৫৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৩৮৭ কোটি ১৫ লাখ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ১ হাজার ৮৮৪ কোটি ৯০ লাখ, শিল্প মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৮২৪ কোটি ৯০ লাখ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে ৮৯৫ কোটি ২৮ লাখ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে ২ হাজার ২২৪ কোটি ৩৩ লাখ, কৃষি মন্ত্রণালয়ে ১৩ হাজার ৬০৪ কোটি ১৬ লাখ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৯২৯ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ১২০ কোটি ৫৬ লাখ, ভূমি মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৫৪ লাখ ৫৪ হাজার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার ৯২৬ কোটি ৪৪ লাখ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ১৪ হাজার ৪০২ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ৮৫৩ কোটি ১২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ১৯ হাজার ৬৯৭ কোটি ২১ লাখ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১৬ হাজার ১৩৫ কোটি ৯ লাখ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৭৩২ কোটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ৬৮৬ কোটি ৮৬ লাখ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৫২২ কোটি ৯৪ লাখ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ১৫০ কোটি ১৮ লাখ ৬১ হাজার, বিদ্যুৎ বিভাগ ১৮ হাজার ৮৯৪ কোটি ৪২ লাখ, সুপ্রিমকোর্ট ১৬৫ কোটি ১৬ লাখ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ৬৮৭ কোটি ৫৯ লাখ, দুর্নীতি দমন কমিশন খাতে ১০১ কোটি ৭১ লাখ এবং সেতু বিভাগে ৮ হাজার ৪২৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ৯৩ লাখ, সুরক্ষা সেবা খাতে ২ হাজার ৮৮২ কোটি ৯৭ লাখ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ খাতে বরাদ্দ ৪ হাজার ৪৭৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।


http://www.jugantor.com/first-page/2017/06/30/135605/