শনিবার রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিহতদের পাশে স্বজনদের আহাজারি- যুগান্তর
২৫ জুন ২০১৭, রবিবার, ১২:২৯

ঈদের আগে সড়কে মৃত্যুর মিছিল

সারা দেশে নিহত ৩৫

ঈদে বাড়ি আসার সময় লাল জামা আনতে বলেছিল সাত বছরের মেয়ে সাথী। মেয়ের কথামতো টুকটুকে লাল জামা ব্যাগে ভরে বাড়ির পথ ধরেন বাবা সাদ্দাম হোসেন। গাড়ির টিকিট পাচ্ছিলেন না, তাই শুক্রবার রাতে গাজীপুর থেকে সহকর্মী শ্রমিকদের সঙ্গে একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকে চড়েই রওনা দেন লালমনিরহাটে। বাড়ি ফিরে মেয়ের হাতে নতুন জামা তুলে দিয়ে তার হাসিমুখ দেখার প্রহর গুনছিলেন বাবা। কিন্তু তার সে স্বাদ অপূর্ণই থেকে গেল।

শনিবার ভোরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পীরগঞ্জে সিমেন্ট বোঝাই সেই ট্রাক উল্টে নিহত হন সাদ্দাম হোসেনসহ ১৭ জন। এর মধ্যে এক শিশু ছাড়া সাবাই পোশাক শ্রমিক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের চার সদস্য।

এছাড়া ১০ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে রংপুর মেডিকেলে। চালকের সহকারীর বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুধু রংপুরের ওই দুর্ঘটনাই নয়, শনিবার গাজীপুর, কুমিল্লা ও ভালুকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগের ঠিক আগে সড়কে প্রাণ হারালেন ৩৫ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে যে ধরনের হাইওয়ে রয়েছে তাতে হাইওয়ের মানদণ্ড রক্ষা করা হয়নি। এখানে সত্যিকারের ওয়ানওয়ে রুট নেই। এছাড়া গাড়ি ক্রসিংয়ের ক্ষেত্রে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকা দরকার দেশের সড়কগুলোতে সেই ব্যবস্থা নেই। তার ওপর অধিকাংশ সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র দোকানপাট, বাজার ইত্যাদি। এসব কারণেই সড়কে এত দুর্ঘটনা ঘটছে।

এদিকে রংপুরের পীরগঞ্জে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ট্রাক উল্টে পোশাক শ্রমিকের নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। শনিবার এক শোকবার্তায় তিনি বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নিহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ঈদের প্রাক্কালে সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সরকারের অব্যবস্থাপনা ও চরম উদাসীনতার কারণেই ঈদে ঘরমুখী মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে এবং সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা সরকারের চরম ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ।

যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

রংপুর ও পীরগঞ্জ : দুর্ঘটনায় আহত পোশাক শ্রমিকরা জানান, বাসের টিকিট না পেয়ে গাজীপুর থেকে একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকে বাড়ি ফিরছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও রংপুরের পীরগঞ্জের ৫৫ পোশাক শ্রমিক। ২০ হাজার টাকায় ওই ট্রাকচালক তাদের ট্রাকে তুলে নেয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পোশাক শ্রমিকদের অনেকে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

ট্রাকের কেবিনে থাকা পোশাক শ্রমিক জামিনা বেগম জানান, ট্রাকচালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল এবং তার চোখেমুখে ছিল ঘুম। ফলে সে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছিল না। যাত্রীরা চালককে গাড়ি ধীরে চালাতে বারবার অনুরোধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি সে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে চালক ট্রাকের কেবিনে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় চালকের আসনে বসে ট্রাকচালকের সহকারী। সেও একইভাবে টালমাটাল অবস্থায় ট্রাকটি চালিয়ে যাচ্ছিল।

শনিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে ট্রাকটি পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এসে ২০ যাত্রীকে নামিয়ে দেয়। পীরগঞ্জ থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে কলাবাগান পৌঁছলে চালকের সহকারী ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। বিকট শব্দে গাড়ি সড়কের পাশের খাদে উল্টে পড়ে। এ সময় ট্রাক ও সিমেন্টের বস্তার চাপায় পড়ে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান। পরে আহতদের মধ্য থেকে পীরগঞ্জ হাসপাতালে ৫ জন ও রংপুর মেডিকেলে ১ জন মারা যান। দুর্ঘটনার সময় আহতদের আর্তচিৎকারে এলাকায় মর্মস্পর্শী দৃশ্যের অবতারণা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, এমন বিপদের সময়ও স্থানীয়রা উদ্ধারের নামে ব্যাপক লুটপাট চালায়। তারা মৃতদের শরীর হাতিয়ে টাকা পয়সাসহ মালামাল নিয়ে যায়। এমনকি ভয় দেখিয়ে আহত ও অন্য নারী শ্রমিকদের কাছ থেকে তাদের সোনার গহনা গলা ও কান থেকে খুলে নিয়ে যায়। এই নির্মম ঘটনার বর্ণনা দেয় ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ঝর্না খাতুন ও তার মা জামিনা বেগম।

নিহতরা হলেন- লালমনিরহাট কালীগঞ্জের ঘোংগাগাছের দেলোয়ার হোসেন (২৮), কালীগঞ্জের লতাবর গ্রামের আপন দু’ভাই সাদ্দাম হোসেন (২০) ও আলমগীর হোসেন (২৫), কালীগঞ্জের মুনিরুজ্জান মিয়া (২৫), কালীগঞ্জের উত্তর বত্রিশ হাজারী গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৩০), মজনু মিয়া (২৫), সুবর্ণা খাতুন (৯), কোহিনুর হক (৪০), আদিতমারী আজিজুর রহমান (২২), মহিশ খোচার রবিউল ইসলাম (২২), মহিশখোঁচার রবিউল ইসলাম (২২), বালাপাড়ার মহসিন হোসেন (২০), ময়মনসিংহের ভালুকার জসিম উদ্দিন (৪৫), চাঁপার হাটের নুরুন্নবী মিয়া (২৭), ঝিনাইদহের শৈলকুপার আনিসুজ্জামান মিয়া (৪০) ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর নাসিমা আকতার (২৫)। একজনের নাম জানা যায়নি।

পরে রংপুর থেকে পুলিশের র‌্যাকার গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে উল্টে যাওয়া ট্রাকটি উঠিয়ে সেখান থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। নিহতদের মধ্যে ১১ জনের লাশ বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে এবং ৬ জনের লাশ পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে বলে হাইওয়ে পুলিশের এএসপি ধীরেন্দ্র চন্দ্র মাহাপাত্র জানিয়েছেন।

লাশ নিতে আসা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের ঘোংগাগাছ গ্রামের সহির উদ্দিন জানান, তার পরিবারের ৪ জন মারা গেছেন। তারা হলেন- আপন দু’ভাই সাদ্দাম হোসেন ও আলমগীর হোসেন, তার দু’ভাতিজা মনিরুজ্জামান ও দেলোয়ার হোসেন।

পীরগঞ্জ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, নিহতদের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। তা না হলে সরাসরি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থার অবনতি হলে তাদের পীরগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে ৭ জনের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন জমিলা বেগম (৫৫), ময়না বেগম (৩০), মমিনুল ইসলাম (৩৫), খলিল (২৫), দুলাল (৩০) ও মতিন (২৫)। তাদের সবার বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট ও চাঁপারহাট গ্রামে।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রংপুর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি এ সময় নিহতদের জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেন। তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন নিহতদের লাশ নিয়ে যেন পরিবারের লোকজন কোনো ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকে নজর দিতে। লালমনিরহাট জেলা কালীগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমল কুমার ঘোষ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। নিহতদের লাশ যেন ঠিকমতো বাড়িতে নেয়া যায় সে বিষয়ে তিনি তদারকি করেন। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়া ওই ট্রাকটির (রংপুর-ট-১১-০৩২৮) রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে বিআরটিএ।

শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হল না : নিহতদের মধ্যে জসিম উদ্দিন লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ও আনিসুজ্জামান মিয়া কালীগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঈদ উৎসব পালন করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা তাদের স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে দিল না।

স্বামীর লাশ নিয়ে স্ত্রীদের বিলাপ : পোশাক শ্রমিক মুক্তা বেগম (২২), শরিফা বেগম (২১), আফরোজা বেগম (২৩) এ রকম আরও কয়েকজন অল্প বয়স্ক নারী বড়দরগার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির মাঠে স্বামীর লাশের পাশে বিলাপ করছিলেন। তাদের বিলাপ আর আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। তারা সবাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে বাড়ি ফিরছিলেন।

জামিনা সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় : জামিনা বেগম (২৭) স্বামী ঝন্টু মিয়া (৩৫), দুই মেয়ে সুবর্ণা বেগম (৮) ও ঝর্না আকতার (১০)। এ পরিবারটি ঈদের ছুটিতে দাদা-দাদির সঙ্গে ঈদ উৎসব করতে যাচ্ছিল। এক সপ্তাহ আগে দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে জামিনা গিয়েছিল স্বামীর কর্মস্থল গাজীপুরে। এরপর একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। দুর্ঘটনায় ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মারা যায় তার নয় বছরের মেয়ে সুবর্ণা। সন্তানের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে মা জামিনা পাগলপ্রায়। বারবার সন্তানের লাশ জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন তিনি।

গাজীপুর ও কালিয়াকৈর : কালিয়াকৈরে ট্রাক-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারীসহ চারজন নিহত এবং অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম আজাহারুল ইসলাম (৩২)। অন্যরা হলেন অজ্ঞাত পরিচয় নারী (৩০), অজ্ঞাত পরিচয় পুরুষ (৪০) ও অজ্ঞাত পরিচয় যুবক (২৫)। আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুমিল্লা : শনিবার বিকালে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে লাকসামের ফুলুয়া নামক স্থানে কাভার্ড ভ্যান ও সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- বরুড়া উপজেলার কাকৈরতলা গ্রামের খাদিজা আক্তার (৩৫), একই এলাকার মৃত হাজী রহিম আলীর ছেলে মাওলানা মামনুল হক তালুকদার (৬৫) এবং চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার উচিতগাঁও গ্রামের হাজী ইব্রাহিম খলিলের ছেলে কাউসার (২৬)।

ভালুকা (ময়মনসিংহ) : ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা থানার সামনে সিডোস্টারগামী লেগুনা গাড়ির ধাক্কায় রাজৈ ইউনিয়নের ঢুলিভিটা গ্রামের আবদুল মজিদের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৬৫) মারা যান। অপরদিকে ভালুকা-মশাখালী সড়কের চন্দরআঁটি নামক স্থানে সিএনজি অটো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেলে গফরগাঁও উপজেলার সতেরবাড়ি গ্রামের মহর আলীর মেয়ে মাখসোদা খাতুন (২৪) নিহত হন।

বগুড়া : শাজাহানপুর উপজেলার পুরাতন থানা এলাকার পাশে মহাসড়কে শনিবার দুপুরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় জাকারিয়া (১৪) নামে নবম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। পুলিশ চালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার ও কাভার্ড ভ্যান জব্দ করেছে। নিহতের চাচা থানায় মামলা করেছেন।

পুঠিয়া (রাজশাহী) : শনিবার সকালে পুঠিয়ায় আম বোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষে বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ফিরোজ আহমদ নামের এক শ্রমিক মারা গেছেন। নিহত ফিরোজ চারঘাট উপজেলার জয়পুর পূর্বপাড়া গ্রামের ইনসার আলীর ছেলে। এ ঘটনায় দু’ট্রাকের হেলপারসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) : ভোররাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়ায় যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকের সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। তার নাম মো. মিঠু মিয়া (৩৫)। বাড়ি বগুড়া জেলায়। এ দুর্ঘটনায় আরও ২০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।

কাউখালী (পিরোজপুর) : চিরাপাড়া বেকুটিয়া সড়কের উত্তর নিলতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন সুবিদপুর গ্রামের সামছুল হক তালুকদার (৭৫)।

গাইবান্ধা : শনিবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বোয়ালিয়া চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় দুটি যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে বাস ড্রাইভার রানা মিয়া (২৮) নিহত হন। এ সময় ১০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। নিহত বাস ড্রাইভার রানা মিয়া গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হামিদপুর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বিজয়নগরে গাড়িচাপায় উসমান মিয়া (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইসলামপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত উসমান উপজেলার আলীনগর গ্রামের আবদুল আহাদেও ছেলে।

কক্সবাজার : বিকালে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের খরুলিয়া দরগাহ গেট এলাকায় দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় সাইকেল আরোহী এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার নাম মুহাম্মদ ওসমান (১৫)। সে সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মোহসেনিয়াপাড়ার সুরুত আলমের ছেলে।

শাহজাদপুর : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পাথালিয়াপাড়া সড়কে গার্মেন্ট কর্মী তারা মিয়া শুক্রবার সন্ধ্যায় কৈজুরী বাজার থেকে ইফতার কিনে বাড়ি ফেরার পথে গম বোঝাই ভটভটির চাপায় প্রাণ হারান।

ভেড়ামারা : শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের আমলা ইউনিয়নের কচুবাড়িয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবদুস সাত্তার নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মিরপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গাংনী থেকে ছাগলভর্তি একটি নসিমন খুলে উল্টে গেলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

চট্টগ্রাম : শনিবার সকালে নগরীর টাইগারপাস এলাকায় একটি বাস যাত্রীসহ সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে একই পরিবারের ৫ জন আহত হন। আহতরা হলেন- ফেরদৌস শামীম (২৯), তার মা হোসনে আরা (৪৫), স্ত্রী রূপমা (২৩) এবং ছেলে মেহেদী (২) ও মেয়ে সাইমা (৫)। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তারা ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যেতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাচ্ছিলেন।

http://www.jugantor.com/online/national/2017/06/25/50422/