২৩ জুন ২০১৭, শুক্রবার, ১১:০৫

দলীয় সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচন কেন নয়?

সুশাসন

|| ইকতেদার আহমেদ ||

বাংলাদেশ অভ্যুদয়-পরবর্তী সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা বহাল থাকার সময় ১৯৭৩ সালে দলীয় সরকারের অধীন প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে বিজয়ী হয়ে ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। এ নির্বাচনটি সংবিধান প্রণয়ন-পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত হয় এবং সে সময় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল। সে নির্বাচনটিতে মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামী দলীয় পরিচয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়নি। এর ফলে এ দু’টি দলের সামগ্রিক ভোট তৎকালীন বিরোধী দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) পক্ষে যায়। ওই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সমাপ্ত হওয়ার পর ফলাফল ঘোষণার কাজ শুরু হলে দেখা যায়, ১০০-এর কাছাকাছি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে জাসদের প্রার্থীরা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ এবং আওয়ামী লীগের অনেক ডাকসাইটে প্রার্থী যেমন খন্দকার মোশতাক আহমদ ধরাশায়ী হন। সদ্য স্বাধীন দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবগঠিত দল জাসদের কাছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসন হারানো তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আওয়ামী লীগের জন্য বিব্রতকর ও গ্লানিময় ছিল। আর তাই ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জাসদের অনেক নিশ্চিত বিজয়ী প্রার্থীকে পরাজয়ের ভাগ্যবরণে বাধ্য করা হয়।
সদ্য স্বাধীন দেশে প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগ তার ভূমিধস বিজয়কে কাজে লাগিয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করে। এ ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন-পরবর্তী সময়ে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দুঃখজনক ও মর্মান্তিকভাবে দু’কন্যা ছাড়া বঙ্গবন্ধু সপরিবারের সবাই নিহত হলে প্রথমত বঙ্গবন্ধুর সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় আসনে এবং এরপর বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদে বহাল থাকার সময় ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সে নির্বাচনে প্রায় দু-তৃতীয়াংশ আসনে তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি বিজয়ী হয়। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল। সে নির্বাচনটি দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত না হলে আওয়ামী লীগের আসন সংখ্যা যে আরো বাড়ত এ প্রশ্নে কোনো বিতর্ক নেই।
সামরিক বাহিনীর বিভ্রান্ত কিছু সদস্যদের হাতে জিয়াউর রহমান দুঃখজনকভাবে শহীদ হওয়ার পর তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি এক বছরের মাথায় সেনাপ্রধান এরশাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারায়। এরশাদ রাষ্ট্রপতি থাকার সময় রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার অধীন দু’টি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় নির্বাচন তৎকালীন দেশের প্রধান দু’টি বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বর্জনের কথা বলে এলেও হঠাৎ আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে এরশাদের অধীন আওয়ামী লীগ প্রথম নির্বাচনটিতে অংশ নেয়। সে নির্বাচনটিতে ফলাফল ঘোষণা শুরু হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে এমন চিত্র ফুটে উঠলে ফলাফল ঘোষণার মাঝপথে এ দায়িত্বটি নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনকে দেয়া হয় এবং এরশাদের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা মোতাবেক যে ফলাফল প্রস্তুত করা হয়। তাতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের আসনসংখ্যা এক শ’র ঊর্র্ধ্বে নয়। অপর দিকে, এরশাদের দল জাতীয় পার্টির আসনসংখ্যা অপ্রত্যাশিতভাবে দু-তৃতীয়াংশেরও অধিক। এরশাদ ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে সে সময়কার এরশাদের অত্যন্ত আস্থাভাজন আসম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাসদ ছাড়া অপর কোনো বিরোধী দল অংশ নেয়নি। এ নির্বাচনটিতেও এরশাদের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী তার দল ও জাসদের মধ্যে আসন বণ্টন করা হয়। চতুর্থ সংসদে তথাকথিত বিপ্লবী রব যিনি সংসদকে শূকরের খোঁয়াড় বলে গালি দিতেন, তিনি লজ্জাশরমের কোনো ধরনের বালাই না করে গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেন।
ক্ষমতাসীন সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত উপরোল্লিখিত চারটি সংসদের কোনোটিই সংবিধান নির্ধারিত মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি। এ চারটি নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত না হলে অথবা প্রকৃত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীন অনুষ্ঠিত হলে ফলাফল যে ভিন্নতর হতো এ বিষয়ে তৎকালীন বিরোধী দলগুলোসহ দেশবাসীর মধ্যে কোনো বিতর্ক নেই।
তিন জোটের রূপরেখায় পরিচালিত আন্দোলনের মুখে সেনাবাহিনী এরশাদের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তাকে রাষ্ট্রপতি পদ ছেড়ে দেয়াসহ সংসদ ভেঙে দিতে হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। সে নির্বাচনটির ফলাফল এ দেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বপ্রথম জনমতের প্রকৃত প্রতিফলনে নির্ধারিত হয়। যাই হোক, বিজীত দল এ ফলাফলকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি। পঞ্চম সংসদে দেশের বড় দু’টি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং অপর ক্ষুদ্র দল জামায়াতে ইসলামীর সম্মিলিত প্রয়াসে ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার হতে পুনঃসংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করা হয়, যা অদ্যাবধি অব্যাহত আছে।
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী পঞ্চম সংসদ থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে পদত্যাগ করলে নির্ধারিত মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই সে সংসদ ভেঙে দেয়া হয়। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনটি ভোটারবিহীন ও একতরফা ছিল। সে সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন পরিচালিত আন্দোলনে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ষষ্ঠ সংসদের মাধ্যমে বিরোধী দলের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএনপি যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিল তাতে এ দেশের জনগণ অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছিল যে, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দেশ ও জাতিকে আর কখনো নৈরাজ্যকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে না। কিন্তু এ ব্যবস্থার অধীন অনুষ্ঠিত প্রথম দু’টি নির্বাচন পরবর্তী যখন নিজ মতাদর্শের লোককে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার মানসে সংবিধান সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে দেয়া হয়, তখন ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত সংসদের মেয়াদ অবসানের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রশ্নে জটিলতা দেখা দেয়। সে সময় দু’টি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। এর কোনোটিই সাংবিধানিক বিধানাবলি অনুসরণ করে সঠিকভাবে গঠন করা হয়নি।
নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মতো ভূমিধস বিজয় হয়েছিল। অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হলেও এ দু’টি নির্বাচনে এক দলের ভূমিধস বিজয় অপর দল মেনে নিতে পারেনি। উভয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা বিজীত দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। বিএনপি যেমন সংসদে একতরফাভাবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিল পাস করে অনুরূপ আওয়ামী লীগ নবম সংসদে একতরফাভাবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসাধন করে। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসাধন করে। দলীয় সরকার ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় এটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংসদ সদস্যের তিনটি উপনির্বাচন এবং পাঁচটি পৌরসভা নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করে তাদের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে এ বিষয়ে বিএনপির আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হয়। কিন্তু আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী লীগ দশম সংসদ নির্বাচন একতরফা ও ভোটারবিহীনভাবে অনুষ্ঠিত করে। এ নির্বাচনটি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে অধিক ত্রুটিপূর্ণ ও কলুষিত ছিল। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে যে মাত্রায় প্রাণ ও সম্পদের হানি হয়েছিল এ নির্বাচনটির আগে ও পরে উভয়টি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনকে অতিক্রম করেছিল।
দশম সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, বিভাজিত ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ২৩৫টি পৌরসভা নির্বাচন ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপিতে ভরপুর ছিল। দশম সংসদ নির্বাচনসহ এ তিনটি নির্বাচনে দলীয় সরকারের আকাক্সা অনুযায়ী বিজয় নির্ধারণ করা হয়।
আমাদের নির্বাচন কমিশন নামক সাংবিধানিক যে প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে এটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের ঠাঁই হয়েছে এরা সবাই ব্যক্তিত্বহীন এবং নীতি ও নৈতিকতা বিবর্জিত। ক্ষমতাসীন দল ব্যতীত দেশের অপর কারো কাছে এদের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা নেই। এ নির্বাচন কমিশনটি যে নিরপেক্ষ নয় এবং এটি যে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অক্ষম; এমন বক্তব্য সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার স্বামী ড. শফিক আহম্মেদ সিদ্দিকের গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রকাশ পেয়েছে।
আমাদের দেশে অতীতে বাংলাদেশ অভ্যুদয় পরবর্তী যে তিনটি দল রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করেছে এদের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচন থেকে বিতর্কাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। এখন যেরূপ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় বিএনপি তাদের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নিতে অনাগ্রহী অনুরূপ এটি শতভাগ নিশ্চিত যে বিএনপি বা অপর কোনো দল ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হবে না।
স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি তা ভারত ও পাকিস্তানের জন্য ঈর্ষার বিষয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সরকার পরিবর্তনের ব্যবস্থা করা গেলে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান হবে ভারত ও পাকিস্তানের আগে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ভারতের সেভেন সিস্টার্সসহ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কেন্দ্রের প্রতি আস্থার হানি ঘটাবে এ বিশ্বাসে ভারত সবসময় চায় এ দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দলটি যেন তাদের অনুগামী হয়।
বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র ব্যাহত হওয়ার কারণে মুক্তি তথা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিলেও আজ দুঃখজনকভাবে এটি সত্যি যে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র দলীয় সরকারের আকাক্সার কাছে বন্দী। এ দেশের কোনো দলীয় সরকারই জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারেনি। আর আগামীতে যে পারবে না এ বিষয়ে দেশবাসীর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। আর তাই আমাদের স্থায়ীভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমন একটি ব্যবস্থার উদ্ভাবন করতে হবে যাতে যে কোনো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় কোনো ধরনের সহিংস পরিস্থিতি অহেতুক দেশের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পতে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান,
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/230773