১১ জুন ২০১৭, রবিবার, ১১:২৭

কলেজ পেয়েও ভর্তি নিশ্চিত করেনি দুই লাখ শিক্ষার্থী

দ্বিতীয় তালিকার ফল প্রকাশ ১৩ জুন * আজ মধ্যরাত পর্যন্ত আবেদন করা যাবে

আবেদন করেও ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তি নিশ্চিত করেনি। অথচ ভর্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে বোর্ডে ১৮৫ টাকা পাঠিয়ে আগাম রেজিস্ট্রেশনের জন্য দু’দিন সময় বাড়িয়েও দেয়া হয়েছিল। তবে এসব প্রার্থীকে দ্বিতীয় দফায় আবেদন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। দ্বিতীয় দফার তালিকার জন্য আবেদনের সময় ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ জুন।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা মনে করছেন, চার ধরনের শিক্ষার্থী কলেজ পেয়েও ভর্তির আসন নিশ্চিত করেনি। তারা হচ্ছে, তালিকায়প্রাপ্ত কলেজ যাদের পছন্দ হয়নি। অথবা যারা প্রাপ্ত কলেজে ভর্তির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বোর্ডে আগাম রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিশ্চিতের তথ্য জানে না। আবেদনের ফল প্রকাশের তথ্য হয়তো গ্রামগঞ্জে থাকা শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছায়নি বা অর্থের অভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি।
এসব শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি দ্বিতীয় দফার আবেদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার চিন্তাভাবনা করছে। এর আগে সিদ্ধান্ত ছিল, যারা ভর্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশন করবে না, তাদের দ্বিতীয় দফায় আবেদন করতে হবে। তবে এখন কেউ চাইলে আবেদন নাও করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে যে একবার কলেজ পেয়েছে, তার মনোনয়ন বাতিল করা হবে না।
এমন চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে প্রথম তালিকায় ঠাঁই পাওয়া ওইসব শিক্ষার্থী দ্বিতীয় তালিকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন (নিশ্চিত) করতে পারবে। তবে কেউ যদি নতুন করে কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে চায়, সে সুযোগও উন্মুক্ত আছে। পাশাপাশি যারা এর আগে আবেদন করেনি, তাদের আবেদনের সুযোগ খোলা থাকছে। এছাড়া যেসব শিক্ষার্থী কলেজ পেয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছে কিন্তু মাইগ্রেশন করতে চায়, তাদেরও মাইগ্রেশনের আবেদন করতে হবে।
৫ জুন কলেজে ভর্তির প্রথম বাছাই তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৮ জন কলেজ পেয়েছে। এসব প্রার্থীর পরদিন থেকে ৮ জুনের মধ্যে নিজ নিজ বোর্ডে ১৮৫ টাকা করে ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার কথা ছিল। রেজিস্ট্রেশন বা ভর্তি নিশ্চিত না দিলে সিলেকশন বাতিল করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের হার কম দেখে সময় দু’দিন বাড়িয়ে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করা হয়। এদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১০ লাখ ৪০ হাজার ৫শ’ শিক্ষার্থী বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিয়েছে। ঢাকা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মনজুরুল কবীর যুগান্তরকে জানান, টেলিটকের মাধ্যমে বোর্ডগুলো রেজিস্ট্রেশন ফি নিচ্ছে। টেলিটক থেকে তথ্য পেতে সামান্য বিলম্ব হচ্ছে। তবে যেহেতু দুপুর ১২টায় রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, তাই বুয়েটের কেন্দ্রীয় সার্ভারে আর বেশি তথ্য যুক্ত হওয়া বাকি থাকারও কথা নয়। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২ লাখ ৯ হাজার ৩৪৮ জন রেজিস্ট্রেশন করেনি।
এদিকে প্রথম তালিকার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় তালিকার জন্য আবেদন নেয়ার কাজও চলছে। প্রথম তালিকায় কলেজ পেয়ে যারা ভর্তি হয়েছে, ৯ ও ১০ জুন মাইগ্রেশনের জন্য ভর্তির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করার কথা ছিল তাদের। পাশাপাশি এর আগে যারা ভর্তির আবেদন করেনি, তাদের আবেদনের কথা ছিল। শনিবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার আবেদন নেয়ার কথা থাকলেও ২৪ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। ১৩ জুন দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হবে। এতে ঠাঁইপ্রাপ্তদের ১৪ ও ১৫ জুনের মধ্যে ভর্তি নিশ্চিত সম্পন্ন করতে হবে।
দ্বিতীয় তালিকায় মনোনীতদের ভর্তি নিশ্চিতের পর তৃতীয় পর্যায়ে আবেদনের সুযোগ থাকছে ১৬ ও ১৭ জুন। ১৮ জুন সর্বশেষ বা তৃতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চিত সম্পন্ন করতে হবে ১৯ জুনের মধ্যে। ২০ থেকে ২২ জুন প্রথম দফায় এবং ২৮ থেকে ২৯ জুন দ্বিতীয় দফায় ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করবে কলেজগুলো। ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই।
ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. সালেহীন জানান, ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ভর্তির ওয়েবসাইটে (http:/ww/w.xiclassadmission.gov.bd/) দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইট অনুসরণ করলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যায় পড়বে না।
৯ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত প্রথম দফায় অনলাইন ও মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে আবেদন নেয়া হয়। এতে সারা দেশে ১৩ লাখ ১০ হাজার ৯৪৭ শিক্ষার্থী আবেদন করেছিল। ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ৬১ হাজার ৯৯ জন ভর্তির জন্য কোনো কলেজে সুপারিশ পায়নি।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/06/11/131602/