২৯ মে ২০১৭, সোমবার, ১১:২৯

রমজানেও রাজধানীতে পানির সঙ্কট কাটেনি

রাজধানীতে গরমের সাথে তীব্র পানিসঙ্কট অব্যাহত রয়েছে। রমজান মাস শুরু হলেও পানিসঙ্কট কাটাতে ওয়াসার তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। ফলে ইফতার ও সেহেরির পাশাপাশি গোসল, রান্নাসহ প্রয়োজনীয় কাজে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকে পানিসঙ্কট কাটাতে ওয়াসার গাড়িতে সরবরাহ করা পানি কেনার চেষ্টা করলে তাতেও দীর্ঘ সিরিয়ালে পড়তে হচ্ছে। ওয়াসার পাম্প থেকে পানি আনতেও রোজা রেখে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

ঢাকা ওয়াসার জনতথ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে রাজধানীতে ওয়াসার প্রায় চার লাখ গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ২৩০ থেকে ২৩৫ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন হয়। তবে গত কয়েক দিন বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং হওয়ায় পানি উৎপাদন কমে গেছে। এ ছাড়া তীব্র গরমের কারণে পানির চাহিদাও বেড়ে গেছে। এ কারণে অনেক জায়গায় পানিসঙ্কট দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর মীরহাজিরবাগ, ধোলাইপাড়, যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মানিকনগর, বাসাবো, খিলগাঁও, মহাখালী, মীরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই পানিসঙ্কট চলছে। রমজানের শুরুতে আরো কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নতুন করে পানিসঙ্কট। মগবাজার, তেজগাঁও, সেগুনবাগিচা, বাড্ডাসহ বেশ কিছু এলাকায় এ পানিসঙ্কট দেখা দিয়েছে। রমজানের শুরুতেই এভাবে পানিসঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
বাসাবোর বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই বাসাবো এলাকায় পানিসঙ্কট চলছে। মাঝে মধ্যে খুব কম পরিমাণ পানি আসে যা দিয়ে রান্নাও করা যায় না। এখন রমজান শুরু হয়ছে কিন্তু পানিসঙ্কট কাটেনি। এ কারণে সেহেরি ও ইফতারির সময় সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া গোসল, রান্নাসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। বাজার থেকে বোতলজাত পানি বেশি দামে কিনে খেতে হচ্ছে।

মগবাজার মধুবাগের গৃহবধূ হাসনাহেনা বলেন, কয়েক দিন ধরে ওয়াসার লাইনে পানি ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। রমজান শুরু হয়েছে তাও শান্তি নেই। পানির অভাবে ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছি না। গোসল-খাওয়াতো দূরের কথা।
বাসায় পানি না থাকায় অনেকে ওয়াসার পাম্পে ভিড় জমাচ্ছেন। গতকাল বাসাবো কদমতলা সংসদ পানির পাম্পে দেখা যায়, পানি নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন। রোজা রেখে রোদ-বৃষ্টিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এমন কি রাত ১টার সময়ও এ পাম্পে পানি নিতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ওয়াসার জনতথ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানি উৎপাদনে বিঘœ ঘটছে। এ কারণে প্রয়োজনমতো পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তা ছাড়া গরমের কারণে পানির ব্যবহারও বেড়ে গেছে। মানুষ দুই-তিনবার করে গোসল করছে। এ কারণে সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/223875