২৮ মে ২০১৭, রবিবার, ৯:২০

কনটেইনার জাহাজজট

দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও মিলছে না বার্থিং শিডিউল

অনুকূল আবহাওয়া এবং আন্দোলনহীন পরিবেশেও কনটেইনার জাহাজ জটের কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। জটের সূচনা দু’মাস আগে হলেও বর্তমানে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্দরের বহির্নোঙরে এবং বার্থিংয়ের অপেক্ষায় আছে ২০টি জাহাজ। শিডিউলের জন্য দিনের পর দিন অলস বসে থাকতে হচ্ছে সাগরে। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ে খালাস করা যাচ্ছে না কনটেইনার, আবার জাহাজেও তোলা যাচ্ছে না রফতানি পণ্য। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প।


বন্দর সূত্র জানায়, শনিবার পর্যন্ত ১০টি কনটেইনারবাহী জাহাজ শিডিউলের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছিল। এ ছাড়া বার্থিং (জেটিতে ভেড়া) শিডিউল পাওয়া জাহাজ ছিল ১০টি। এ ছাড়াও বহির্নোঙরে ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি জাহাজ। মাল্টার পতাকাবাহী কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ ‘নর্ডভায়োলেট’ অপেক্ষায় আছে ১৯ মে থেকে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাহাজটি বহির্নোঙরে আসার অনুমতি পায়নি। এভাবে আরও তিনটি বড় কনটেইনারবাহী জাহাজ বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ।

বিভিন্ন শিপিং কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, আগে কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ সরাসরি ভিড়ে যেতে পারত জেটিতে। শিডিউল পেতে খুব একটা অপেক্ষা করতে হতো না। কিন্তু দু’মাস ধরে কনটেইনারবাহী জাহাজ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছলেও জেটিতে ভেড়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। শিডিউল পেতে সময় লাগছে।

তারা আরও জানান, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ছাড়া বিশেষায়িত এসব জাহাজ থেকে অন্য টার্মিনালে পণ্য খালাস করা যায় না। আবার এনসিটিতে শিডিউল মিলছে না। শিপিং কোম্পানির নির্বাহীরা আশঙ্কা করছেন, রমজান মাসে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আহসানুল হক চৌধুরী জানান, প্রতিটি কনটেইনার জাহাজকে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ থাকতে হচ্ছে জেটিতে ভেড়ার জন্য। আবার ভেড়ার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কনটেইনার খালাস করে নির্ধারিত সংখ্যক রফতানি পণ্যভর্তি কনটেইনার এবং খালি কনটেইনার বোঝাই করতে পারছে না জাহাজগুলো। জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস এবং উঠানোর জন্য যেসব যন্ত্রপাতির দরকার সেগুলো পর্যাপ্ত নেই এনসিটিতে। কোনো একটি আরটিজি (রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন) বিকল হয়ে পড়লে বিকল্প ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত আরটিজি না থাকায় বিকল আরটিজি সচল না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকে। তাতে উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। একই যন্ত্রপাতি দিয়ে কনটেইনার খালাস এবং ডেলিভারি দিতে হচ্ছে। জট যেমন বাড়ছে তেমনি সামগ্রিক অপারেশন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এখন যে অবস্থা তাতে রমজানে সংকট ভয়াবহ রূপ নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) গোলাম সারোয়ার শনিবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, ‘রমজানের আগে এমন পরিস্থিতি থাকে। এগুলো খুব বেশি সমস্যা না। কারণ, স্বাভাবিক সময়ে পাঁচ থেকে ৭টা কনটেইনার জাহাজ থাকে আর এখন ১০টি জাহাজ আছে।’ দুই তিনটা জাহাজ বেশি থাকাটাকে জট বলা যায় না বলে তিনি দাবি করেন।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/05/28/128025/