২৮ মে ২০১৭, রবিবার, ৯:১৯

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর হুশিয়ারি

পথে পথে চাঁদাবাজির অভিযোগ

১০০ টাকায় দু’দিনের কাঁচাবাজার

রমজানে পথে পথে পণ্যবাহী ট্রাকে চলছে চাঁদাবাজি। ট্রাক আটকে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এমন অভিযোগ করে রমজানে তা বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
শনিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে রমজান উপলক্ষে পরিমিত ক্রয় ক্যাম্পেইন প্রোগ্রাম-২০১৭ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন ব্যবসায়ী নেতারা। প্রোগ্রামটির আয়োজক বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি। সহায়তা করেছে কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র আড়তদার কাঁচামাল মালিক সমিতি।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, পরিচালক শমী কায়সার, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনসহ ব্যবসায়ী নেতারা।
রমজানে সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছয় সদস্যের পরিবারের জন্য ৭টি পণ্যের সমন্বয়ে একটি প্যাকেজের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। শসা, বেগুন, লেবু, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা, গাজর ও পেঁয়াজের সমন্বয়ে প্যাকেজ মূল্য ১০০ টাকা। আপাতত এ প্যাকেজ কারওয়ান বাজারে বিক্রি হবে। পরে অন্যত্র ছড়িয়ে দেয়া হবে। তবে শনিবার ৩৫০টি প্যাকেট বিক্রি করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথিসহ সবাইকে প্যাকেট ক্রয় করতে দেখা গেছে। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রতি প্যাকেটে খরচ ৯০ টাকা।
তিনি রমজানে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু ব্যবসায়ী নন, ক্রেতা-বিক্রেতা সবার দোষ আছে। তিনি সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
কারওয়ান বাজারের ক্ষুদ্র আড়তদার কাঁচামাল মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুক পথে পথে চাঁদাবাজি নিয়ে সরব বক্তৃতা করেন। বলেন, রমজান আসার আগেই চাঁদাবাজি বেড়েছে। কাঁচামালবাহী ট্রাক আটকে চাঁদা আদায় করায় পণ্য নষ্ট হচ্ছে। রমজানে পণ্যবাহী ট্রাক অবাধে প্রবেশের দাবি জানিয়ে বলেন, হয়রানি বন্ধ করতে হবে। পরে এর জবাব দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চাঁদাবাজি হবে না। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। তিনি বলেন, চাঁদাবাজিতে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। এতে যদি কোনো মন্ত্রীপুত্রের নাম আসে, তাকেও না। মন্ত্রী বলেন, সারা দেশ থেকে ঢাকায় কাঁচা পণ্যবাহী ট্রাক নির্বিঘেœ আসতে পারবে। কোনো বাধার সৃষ্টি হবে না। কারওয়ান বাজারের স্থানীয় চাঁদাবাজদের সতর্ক করে তিনি বলেন, আগেও বলেছি, এখন শেষবারের মতো বলছি- রমজানে কারওয়ান বাজারে কোনো চাঁদাবাজি হবে না।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অপচয় থেকে দূরে থাকার তাগিদ দিয়ে বলেন, রমজান হচ্ছে সংযমের মাস। তিনি বলেন, ১০০ টাকায় দু’দিনের কাঁচাবাজার- এটা বাংলাদেশেই সম্ভব। এ ধরনের উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন, পবিত্র রমজানকে খাদ্য উৎসবের মাস হিসেবে নেয়া যাবে না। খাদ্যেও সংযম থাকা দরকার। ঢাকার সব বাজারে ‘১০০ টাকার প্যাকেজ’ চালু করা যেতে পারে।
কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বলেন, বিশ্বের সব দেশে বিশেষ দিনে পণ্যের দাম কমানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বাড়ানো হয়। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাজার করা যাবে না। শমী কায়সার বলেন, রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করতে হবে।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/05/28/128026/