২৮ মে ২০১৭, রবিবার, ৯:১১

লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা ইফতার-সেহরিতে

বিদ্যুতের উৎপাদন কিছুটা বাড়লেও রমজানে বিশেষ করে ইফতার ও সেহরির সময়ে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনে এখনও ঘাটতি রয়েছে।


বিভিন্ন স্থানে মাঝারি বৃষ্টিতে গত কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহ থেকে কিছুটা পরিত্রাণ মিলেছে। প্রকৃতির এ ছোঁয়া লেগেছে বিদ্যুতেও। সপ্তাহখানেক ধরে চলা দেশব্যাপী বিদ্যুতের লোডশেডিং বেশ কমেছে। তবে এর পরও আজ থেকে শুরু হওয়া রমজানে ভোগান্তি থেকেই যাবে।


বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, রমজানে বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তবে বিতরণজনিত সমস্যায় কিছুটা ভোগান্তি থেকে যাবে। বিশেষ করে ইফতার, সেহরি ও তারাবির সময় বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে মার্কেটগুলোতে সন্ধ্যার পর কেনাকাটার চাপ বাড়বে। ফলে এ সময় চাহিদা বেড়ে লাইনগুলো ওভারলোডেড হয়ে বিদ্যুৎবিভ্রাট ঘটাবে।


কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে দেশে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ তিন হাজার মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু এবং তাপমাত্রা কমায় লোডশেডিং কমেছে। কয়েকদিনের চেয়ে শুক্রবার রাত থেকে লোডশেডিং একটু কম। গত ২০ মে বিকেল ৪টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট। গতকাল শনিবার একই সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে আট হাজার ৩০০ মেগাওয়াট।


গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ সচিব বিভিন্ন কোম্পানি ও সংস্থার প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে রমজানে গ্রামে ও শহরে বিদ্যুৎ বেশি দিতে বলা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, রমজানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মেগাওয়াট ধরা হয়েছে। যদিও চাহিদা থাকবে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি ১২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চাইলেও পেট্রোবাংলা ১১০ কোটি ঘনফুট দিতে পারবে বলে জানিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পূর্ণ ক্ষমতায় চালানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর ১ হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) আবুল বাশার জানান, সংরক্ষণ ও মেরামতের জন্য বন্ধ থাকা প্রায় সবক'টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। বর্তমানে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে শুধু সামিট গ্রুপের বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে।


পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিতরণের দায়িত্বে থাকা একজন প্রকৌশলী জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির কারণে তাদের চাহিদা কমে গেছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ক'দিন আগেও যেখানে পিকআওয়ারে তাদের চাহিদা ছিল চার হাজার ৯০০ মেগাওয়াট, সেখানে শুক্রবার সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। তিনি বলেন, রমজানে তাপমাত্রা খুব বেশি না বাড়লে ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ হাজার মেগাওয়াট থাকলে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। এর পরও বিতরণজনিত দুর্বলতায় অনেক এলাকায় বিদ্যুৎবিভ্রাট হতে পারে বলে জানান ওই প্রকৌশলী।


পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন জানিয়েছেন, তারা শুক্রবার থেকেই চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। জানতে চাইলে বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কাউস সমকালকে বলেন, তাদের ১০ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতি রয়েছে।

http://bangla.samakal.net/2017/05/28/296341#sthash.iyFc4R3V.dpuf