১৯ মে ২০১৭, শুক্রবার, ১০:৩৮

খেলাপী ঋণ বৃদ্ধি হুমকিতে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলো

রাষ্ট্রয়াত্ত এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের মূলধনের অবস্থা খুবই খারাপ এবং ক্রমশ তা কমছে। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত বিগত বছরের তুলনায় কমছে। আবার সর্বশেষ হিসাবে, সঞ্চিতি ঘাটতি রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এ কারণে মূলধন ঘাটতি আরও বেড়ে যাবে। এ ঘাটতি মোকাবেলা ব্যাংকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন এ খাতের বিষেজ্ঞরা। একই সাথে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধিতে হুমকিতে পড়েছে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলো। তিন বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘ ট্রেজারি অপারেশনস অব ব্যাংকস-২০১৬’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ মন্তব্য করেন।
বিআইবিএম এর মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএম এর পরিচালক ড. শাহ মো. আহসান হাবীব, এনআরবি ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হোসেন, দি সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনুদ্দিনসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মেহেদি জামান, ব্যাংক এশিয়ার ট্রেজারি বিভাগের প্রধান আরিকুল আরিফিন প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সালে খেলাপী ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণ। পুনঃতফসিল নীতিমালায় ছাড় দেয়ার কারণে খেলাপি ঋণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। এছাড়া আরো কিছু কারণে ব্যাংকিং খাতের জন্য খেলাপি ঋণ হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। ২০১৩ সালে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। এভাবে খেলাপী ঋণ বাড়াকে ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতের বর্তমান দৈন্য দশার মূল কারণ। এ খেলাপী ঋণের কারণেই সুদের হার এখনো সাধারণের নাগালের বাইরে। একই সঙ্গে ভাল ঋণ গ্রহীতারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাংকগুলোকে খেলাপী ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ তদারকি করতে হবে।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক বলেন, খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতে সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ অবস্থার উত্তরণ না হলে পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্য চরম খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের ঋণের কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংকগুলো ভালো গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদ নিচ্ছে।
ড. তৌফিক বলেন, ব্যাংকগুলোতে টাকা অলস পড়ে রয়েছে। অথচ বিনিয়োগ করার মত ভাল কোন গ্রাহক পাচ্ছে না। ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হলো বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ইমেজ সংকট কাটিয়ে উঠতে ইতিবাচক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমিয়ে আনতে হবে।
এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের আরো সতর্ক হতে হবে। সব ব্যাংকের প্রধানদের ট্রেজারি ব্যাপস্থাপনায় বিশেষ নজর না দিলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাত নিয়ে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলায় যা এ খাতের জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকারকে বছরের প্রথমেই যদি একটি নকশা তৈরি করে তাহলে ব্যাংকের জন্য সুফল বয়ে আসবে।
তিনি আরও বলেন,সরকারি ব্যাংকগুলোর এই সংকট নতুন কিছু নয়। এই সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। এখনই যদি সংকটের সমাধান না করা যায় তাহলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই জন্য ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। যেকোনভাবে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণ। পুনঃতফসিল নীতিমালায় ছাড় দেওয়ার কারণে খেলাপি ঋণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। এছাড়া আরো কিছু কারণে ব্যাংকিং খাতের জন্য খেলাপি ঋণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৩ সালে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়াকে ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের বর্তমান দৈন্যদশার মূল কারণ। এ খেলাপি ঋণের কারণেই সুদের হার এখনো সাধারণের নাগালের বাইরে। একই সঙ্গে ভাল ঋণ গ্রহীতারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ তদারকি করতে হবে।
বক্তারা বলেন,সরকারি ব্যাংকগুলোতে মূলধন ঘাটতি বাড়ছে। এই ঘাটতি মেটাতে অর্থমন্ত্রণালয়ে মূলধন চেয়েছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা মত মূলধন পাচ্ছে না। আর একারণেই তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো মূলধন ঘাটতি পূরণ করা।
বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেখানে ব্যাচেল-৩ বাস্তবায়নের পথে সেখানে সরকারি ব্যাংকগুলো তাদের মূলধন ঘাটতিই পূরণ করতে পারছে না। তারা কিভাবে ব্যাচেল-৩ বাস্তবায়ন করবে। তাই মূলধন ঘাটতি পূরণ নিয়ে এসব ব্যাংক ব্যস্ত রয়েছে। একই সাথে তারা প্রতিনিয়ত অর্থমন্ত্রণালয়ে দৌড়যাপ চালাচ্ছে। মূলধন ঘাটতির ঝুকি মোকাবেলায় সরকারের সহায়তাই তাদের ভরসা।

 

http://www.dailysangram.com/post/284417-