১৮ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৮:০৮

চৌহালীতে নির্মাণাধীন বাঁধে ফের ধস

ভাঙন এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক

চৌহালীতে নির্মাণাধীন বাঁধে ফের ধস নেমেছে। ভাঙ্গন এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। কবে থামবে এ ভাঙ্গন তাও কেউ বলতে পারে না। যমুনার ভাঙ্গন যেন চিরাচরিত প্রথায় পরিনত হয়েছে। প্রায় ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধে দু’সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো ধসে গেছে প্রায় ৫০ মিটার এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ৬নং প্যাকেজের চৌহালী সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রসা রোড এলাকায় জিওব্যাগ ও সিসি বøক নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
টাঙ্গাইল পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বাধটির প্রায় ৫০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। তবে, বালু ভর্তি জিওব্যাগ নিক্ষেপ করে ধস ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
জানা যায়, ২০১৫ সালের নভেম্বরে যমুনার পূর্ব তীর সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর এলাকার ৭ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বাঁধটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০৭কোটি টাকা।
সোমবার রাতে হঠাৎ করে নির্মাণাধীন ওই বাধটির চৌহালী সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা রোড এলাকায় ধস দেখা দেয়। এর আগে ২ মে একই বাধের জাজুরিয়া খগেণের ঘাট এলাকায় প্রায় ৭৫ মিটার এলাকা ধসে যায়। ওই সময় পাউবো কর্তৃক বালুভর্তি জিওব্যাগ নিক্ষেপ করে সাময়িকভাবে ধস ঠেকানো হয়।
পাউবো’র অবহেলা ও ঠিকাদারদের নিম্নমানের কাজের কারণে বারবার বাধে ধস নামছে এমন অভিযোগ করে চৌহালী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ চৌধুরী সঞ্জু জানান, বর্ষার আগেই যেভাবে ধস নামছে, বর্ষার সময় কি হবে তা মনে পড়লেই শরীল কেপে ওঠে।
এদিকে, নির্মাণাধীন চৌহালী উপজেলা নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, ধসে যাওয়া এলাকার তলদেশ থেকে মাটি সরে গর্তের সৃষ্টি হয়ে বাধের স্লোপে বিছানো সিসি ব্লক ও নিচের জিওব্যাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ধসে যাওয়া স্থানে মেরামত কাজ চলছে। এতে বাঁধ নির্মাণে কোন প্রভাব পড়বেনা।
তবে, এলাকাবাসি তার এ কথা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই যদি বারবার এমন ধসের সৃষ্টি হয় তাহলে ভরা বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদী যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে যখন ফুলে ফেঁপে ওঠবে তখন পানির প্রচন্ড চাপ ও ঘুর্ণাবর্তের ফলে যেকোন স্থানে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। একারণেই যমুনা ভাঙন এলাকার মানুষেরা নানা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

https://www.dailyinqilab.com/article/79936/