১৭ মে ২০১৭, বুধবার, ১০:১৮

গড়ে ১২ জন খুন হচ্ছে দিনে

দেশজুড়ে প্রতিদিনই ঘটছে খুনের ঘটনা। তা-ও একটি-দু’টি নয়। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১২টি খুনের ঘটনা ঘটছে। খুন হয়েছেন যারা তাদের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তি, ছাত্র, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, গৃহবধূসহ বিভিন্ন পেশা ও বয়সের মানুষ রয়েছেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উগ্রবাদীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্যকে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাভারের নামা গেণ্ডা ঘাসমহল এলাকায় ট্রাকচালক একরাম আলীকে পিটিয়ে হত্যা করে তার স্ত্রী আলেয়া ও শ্বশুর আলী হোসেন। তিনি সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের নিকরাইল এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
গত ১৩ মে রাতে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা দণি হাটি গ্রামে নুরজাহান (৫০) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করে তার প্রতিবেশী কামরুল ও ইদ্রিস। হাজেরা ওই গ্রামের হাসিম মিয়ার স্ত্রী। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।
গত ১১ মে রাতে খাগড়াছড়ির নুনছড়ি এলাকায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে পিটিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হয় চিরঞ্জিত ত্রিপুরা ও তার ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে। এই ঘটনায় চিরঞ্জিতের স্ত্রী ভবে লক্ষ্মী ত্রিপুরা ও পুত্রবধূ বিজলী ত্রিপুরা গুরুতর আহত হন। স্থানীয় ইউপি সদস্য কালি বন্ধু ত্রিপুরা ও তার ছেলেরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
গত ১২ মে বগুড়া শহরের মাটিডালী হাজীপাড়া এলাকায় মাসুক ফেরদৌস (১৬) নামের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়। সে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমদাদুল হক ইমদাদের ছেলে।
একই দিন বরগুনার সদর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে সুস্মিতা জাহান ইলোরা নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ইলোরা সদর ইউনিয়নের দণি হেউলিবুনিয়া গ্রামের মো: মিজানুর রহমান হিরুর স্ত্রী। যৌতুক চেয়ে ইলোরাকে হিরু নিয়মিত মারধর করতেন বলে অভিযোগ করেছে তাদের মেয়ে নাবা (১৫)।
১২ মে কুমিল্লায় বারো বছর বয়সী মো: সাগর নামে এক শিশুশ্রমিককে অপর এক শ্রমিক পিটিয়ে হত্যা করে। চান্দিনা উপজেলার দারোরা বাজার এলাকায় একটি বেকারিতে ওই ঘটনা ঘটে।
গত ৬ মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে মো: সোহেল (২২) নামে এক যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
গত ৭ মে পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা গ্রামে সাকিব হাওলাদার নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী এবং পিরোজপুর ফাজিল মাদরাসার ছাত্র।
গত ৯ মে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় যৌতুকের পরিবর্তে ব্যবহৃত স্বর্ণালঙ্কার চেয়ে না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে তার স্বামী। নিহতের নাম তসলিমা আকতার (২০)। তিনি উপজেলার বড় মহেশখালী ফকিরা ঘোনা এলাকার আবু ছৈয়দের মেয়ে।
গত ১৩ মে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মাহামুদা আক্তার মুন্নি (২২) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় স্বামী সাইফুল আল মামুনকে (৩৫) আটক করে পুলিশ।
গত ৫ মে গাজীপুরের শ্রীপুরে যৌতুকের জন্য বড় ভাইয়ের সামনে নববধূ নুরুন্নাহারকে (২০) পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। শুক্রবার বিকেলে শ্রীপুর পৌর এলাকার দণি ভাংনাহাটি গ্রামের বাবুলের বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে।
গত ৯ মে সম্পত্তির হিসাব চাইতে গিয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভাইয়ের লাঠির আঘাতে অন্তঃসত্ত্বা বোনের মৃত্যু হয়। নিহতের নাম নিলুফা ইয়াসমিন ওরফে ফারজানা (১৯)।
গত ৬ মে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে যুবলীগ নেতা আমির হোসেন রাজনকে (৩৫) দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে। ৮ মে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মো: গোলাম মোস্তাফা (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এভাবেই দেশজুড়ে চলছে একের পর এক খুনের ঘটনা। অনেক ঘটনায় দুর্বৃত্তরা ধরা পড়লেও কোনো কোনো ঘটনায় খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/220620