১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:০১

উদ্বেগ উৎকন্ঠা সীমান্তজুড়ে

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ, গুলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এতে করে বিস্তীর্ণ সীমান্তজুড়ে বিরাজ করছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। এর ফলে টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের শীলখালী ও বলিবাজার এলাকার লোকজনের অবস্থান বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে এসব এলাকার শত শত মিয়ানমার নাগরিক টেকনাফ ও উখিয়া সংলগ্ন নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার অপেক্ষা করছে। এভাবে নাফনদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকতে যাওয়া রোহিঙ্গা নাগরিক বোঝাই ৪ থেকে ৬টি নৌকা মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

উখিয়া পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। শুনেছি বলিবাজার থেকে কিছু রোহিঙ্গা নাফ নদীতে ডিঙি নৌকা নিয়ে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছিল। এর আগেও ২৩ জন রোহিঙ্গা অস্ত্র নিয়ে অনুপ্রবেশের সময় স্থানীয়দের সঙ্গে দিয়ে আমি তাদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি।

টেকনাফ হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রিন্সিপ্যাল নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, আমাদের এলাকা দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছিল। তারা কয়েকবার প্রবেশের চেষ্টাও করে। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছেন। টেকনাফ উপজেলার নাফ নদী জিরো লাইন দিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে শতাধিক রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাকে প্রতিহত করেছেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা। নাফনদীর বিভিন্ন পয়েন্টের জিরোলাইন থেকে রোহিঙ্গা বোঝাই বেশ কয়েকটি নৌকাকে প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড।

উখিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে রহমতের বিল গ্রামে অনুপ্রবেশ চেষ্টা করে মিয়ানমারের অস্ত্রধারী কিছু উগ্রপন্থী। তখন তাদেরকে ধাওয়া করে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ২৩ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। এরপর থেকে তাঁরা বিজিবির জিম্মায় ছিলেন। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিজিবির এক সদস্য বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ১০ ফেব্রুয়ারি তাদের আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বলেন, আমরা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। আদালত কতদিন মঞ্জুর করে তা দেখার বিষয়।

কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহাজাহান এলাহী নূরী বলেন, অভিযুক্ত ২৩ জনকে গত শনিবার উখিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহামিদা সাত্তারের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সেদিন তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর জন্য আদেশ দেন। একইসাথে রিমান্ড শুনানীর জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করা হয়।

মিয়ানমারে বিরাজিত যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। এতে করে সীমান্তজুড়ে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা।

https://dailyinqilab.com/national/article/638327