১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ২:৫১

বাংলাদেশ-মিয়ানমার পুরো সীমান্তে উত্তেজনা

- মিয়ানমার থেকে ভেসে আসছে লাশ
- ১০০ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক
- বসতবাড়ির পাশে পড়ছে গোলা
- এখনো রোহিঙ্গা নির্যাতন করছে মিয়ানমার বাহিনী
- এবার অন্য নাগরিকরাও আসতে চাইছে বাংলাদেশে

মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের বিরূপ প্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশেও পড়েছে। মিয়ানমার থেকে কয়েক দিন ধরেই গুলি ও মর্টার শেল বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে পড়ায় এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গ্রুপগুলো মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা সব ক’টি ঘাঁটি দখলে নিয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার বাহিনীর সাথে বিরোধী গ্রুপগুলোর প্রচণ্ড সঙ্ঘাত অব্যাহত থাকায় সীমান্তের সর্বত্রই উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ দিকে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি চৌকিগুলোতে অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছে।
আরাকান আর্মি ও বার্মিজ সামরিক জান্তার মধ্যে সংঘর্ষে প্রতিদিনই ঘটছে প্রাণহানি। প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের সেনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জন পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে গুরুতর আহতদের জন্য। ২০১৭ সালে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্যাতনে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এপার পালিয়ে আসাদের মধ্যে থাকতে পারে রাখাইনে গণহত্যায় অংশ নেয়ায় কেউ কেউ। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান রাজ্যের তুমব্রু সীমান্ত থেকে শুরু হয়েছিল জান্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সঙ্ঘাত। সেটি ক্রমে বিস্তৃতি হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, উখিয়ার থাইংখালী, রহমতেরবিল একই সাথে অপর অংশে ঢেকিবুনিয়া এরপর টেকনাফের হোয়াইক্যং এবং খারাংখালী পর্যন্ত। ক্রমান্বয়ে সঙ্ঘাত টেকনাফ সীমান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। যে কারণে উপকূলরক্ষী কোস্টগার্ডকে সব সময় সতর্ক অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। এটি উত্তরে তুমব্রু থেকে শুরু হয়ে বর্তমানে হোয়াইক্যং হয়ে টেকনাফের দিকে চলমান রয়েছে। ক্রমান্বয়েই দক্ষিণের নাফ নদীর দিকে বিস্তৃতি লাভ করছে। এই সঙ্ঘাতের ফলে যেন কোনো ধরনের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে জন্য কোস্টগার্ড আগের তুলনায় অধিক সতর্ক বলে জানা গেছে। কোস্টগার্ডের সদস্য সংখ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি জলযান থেকে শুরু করে নজরদারি বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। নাফ নদী হয়ে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত উপকূলরক্ষী কোস্টগার্ডের ৫টি মটারশেল ২টি হাই স্পিডবোট এবং একটি যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন রয়েছে বলে কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা জানান।

কোস্টগার্ড পূর্বাঞ্চল অপারেশন অফিসার লে. কমান্ডার আশরাফ বিন ইদ্রিস নাফ নদীতে টহলে থাকা অবস্থায় জানান, এ পর্যন্ত ১০০ জন রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তের উত্তর অংশ থেকে আরাকান আর্মি আস্তে আস্তে দক্ষিণের মংডু, বুচিডং এবং রশিডংয়ের দিকে এগোচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এতে নাফ নদী পার হয়ে রোহিঙ্গাসহ অন্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে টেকনাফের উনছিপ্রাং সীমান্তে ভোরে থেমে থেমে গুলির শব্দ শুনতে পায় স্থানীয়রা। দু-এক দিন পরে মিয়ানমার জান্তা বাহিনী বড় ধরনের একটা হামলা করতে পারে সে ধরনের খবর এখানে আসছে। এরপর কখন কী হয় তা বলা যাবে না। এ জন্য সীমান্তবাসী এখনো আতঙ্কে আছে। বাংলাদেশে আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের ফেরাবার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এটি কখন নাগাদ হবে তা প্রশাসন নিশ্চিত করে বলছেন না। কখনো বলা হচ্ছে টেকনাফের ঘাঁটি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আবার কখনো বলছে উখিয়ার ইনানীর নৌবাহিনীর ঘাঁটি দিয়ে সমুদ্রপথে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। চলমান এমন পরিস্থিতিতে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তবাসীর চলাচল ও কৃষিকাজ হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।

সীমান্তের বেশির ভাগ জায়গা থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য বিতাড়িত হলেও বিভিন্ন জায়গায় এখনো গোলাগুলি চলছে। সীমান্তে বসবাস করা মানুষরা জানিয়েছেন, সেসব গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে এসব গুলি কেন করা হচ্ছে, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

তুমব্রু থেকে শুরু করে হোয়াইখ্যাং সীমান্ত পর্যন্ত মিয়ানমারের অংশে দেশটির সীমান্তরক্ষী বিজেপির সব ঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এরইমধ্যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার আঞ্চলিক কমান্ডারসহ ৩৩০ বিজেপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
কিন্তু তারপরও শনিবার সকালে হোয়াইখ্যাং সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে এলাকাবাসীর। গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে এসেও ঘরের দেয়ালে আঘাত করে। হোয়াইক্যং উত্তর পাড়া হোছেন আলীর মুদির দোকানে, হাইওয়ে রোডের পাশে হোয়াইক্যং মাঝেরপাড়া আবছারের বাড়িতে, উত্তরপাড়া ধলু মিয়ার বাড়িতে গুলি এসে পড়ে।

ভোর ৫টার দিকে শুরু হয় গোলাগুলি। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক চলে। এ সময় ফজর নামাজ শেষে কুরআন তেলওয়াত করছিল হোয়াইক্যং মাঝেরপাড়ার হাজী মোহাম্মদ আবছার। হঠাৎ করেই পরপর দুই গুলি এসে পড়ে তার ঘরে। গুলি সামান্য পাশ দিয়েই চলে গিয়ে দেয়ালে ঠেকে। অল্পের জন্য রক্ষা পান হাজী আবছার।

মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীদের বক্তব্য জানতে দোভাষী হিসেবে কাজ করা সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানালেন, বাংলাদেশে আসা সীমান্ত রক্ষীরা স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন তাদের সব ঘাঁটিগুলো দখল হয়ে গেছে। প্রাণভয়ে তারা যে যেভাবে পেরেছে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

মিয়ানমার সঙ্ঘাত নিয়ে কী ভাবছে রোহিঙ্গারা : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তাবাহিনী এবং সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এই চলমান সঙ্ঘাতের খবর রাখেন অনেক আগেই বাংলাদেশের টেকনাফ-উখিয়ার ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। কারণ অনেকেরই আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতরা রয়ে গেছেন মিয়ানমারে।

জান্তা সরকারের নির্যাতন আর গণহত্যার মুখে দেশত্যাগী রোহিঙ্গারা এই পরিস্থিতিকে কিভাবে দেখছেন? এবার কি তারা সসম্মানে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে পারবেন?

গতকাল রোহিঙ্গা নেতা ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মংডু, বুধিডং, হোমালি, হাওয়ার বিল, হারি বিলসহ রাখাইনের অনেক এলাকায় রোহিঙ্গারা ঘর থেকে বের হলেই নির্যাতন চালাচ্ছে উগ্রপন্থী মগ, মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

সাধারণ রোহিঙ্গারা বলেন, মিয়ানমারে এখনো যে সব রোহিঙ্গা আছেন তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তাদের পানি, খাদ্য, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট লাইন, গ্যাস সরবরাহসহ সব সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে লুট করা হচ্ছে এবং তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ঢুকতে চাইছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। এজন্য বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থানও নিয়েছে অনেকে। তবে এপারে বাধার জন্য প্রবেশ করতে পারছে না।

এদিকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি প্রধান নবি হোসাইন মিয়ানমারের ঢেঁকুবনিয়া ক্যাম্প দখলের দাবি করে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। ৫ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় এমন দাবি করে গ্রুপটি।

রোহিঙ্গারা আরো বলেন, তারা আরাকান আর্মিকেও বিশ্বাস করেন না। কারণ আরাকান আর্মির বেশির ভাগ সদস্যই রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। অভিযোগ আছে, রাখাইনরাই রোহিঙ্গাদের বেশি নির্যাতন করেছিল। তাদের ভিটেমাটি দখলে নিয়েছিল।

তবে মিয়ানমার জান্তা সরকারের এমন করুণ পরিস্থিতি ও সেনাদের জীবন বাঁচাতে ধাপে ধাপে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়াকে রোহিঙ্গারা প্রকৃতির প্রতিশোধ হিসেবেই মানছেন।

মিয়ানমারের সরকারবিরোধী জোট রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার যে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, সেটির লিখিত দলিল চান রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন বলেন, খুশিতে নয়, গণহত্যার শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসেছি। আমরা এক মুহূর্ত এখানে থাকতে চাই না। আমরা এমন জীবন চাই না। নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু আমাদের অবস্থান হচ্ছে সেফটি, সিকিউরিটি, ডিগনিটি (নিরাপত্তা এবং আত্মমর্যাদা) এই তিনটা বিষয় নিয়ে প্রত্যাবাসন হোক সেটা আমরা চাই। আমাদের দাবিগুলো পূরণে মিয়ানমার যাতে বাধ্য হয়, সে জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন দ্রুত দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে যেসব রোহিঙ্গা আছেন তারা যেন দেশ ছেড়ে না আসে সে আহ্বান জানাচ্ছি।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, এবার শুধু রোহিঙ্গা নয়, মিয়ানমারের অন্য নাগরিকরাও বাংলাদেশে আসতে চাইছে। আর তাদেরকে বাংলাদেশে আনতে সক্রিয় হয়ে উঠছে মানবপাচার চক্র।

উখিয়া উপজেলার বালুখালী সীমান্ত খালে আরো ৩ লাশ উদ্ধার : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বালুখালী খালে আরো তিনটি লাশ ভেসে এসেছে। এর মধ্যে উখিয়া থানা পুলিশ গতকাল বেলা ২টার দিকে একটি লাশ উদ্ধার করেছে। উদ্ধার এই লাশের মাথায় হেলমেট ও হাতে গ্লাভস পরা রয়েছে।

এ ছাড়া বালুখালী খালের একেবারে উপরের দিকে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি এলাকায় আরো দু’টি লাশ দেখতে পেয়েছে স্থায়ীরা। লাশ দু’টি খালের ঝোপের মধ্যে ময়লা আবর্জনায় পড়ে রয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে লাশ দু’টি দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, লাশগুলো মিয়ানমারের বিদ্রোহী কোনো গোষ্ঠীর সদস্যের হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেনি পুলিশ।
উখিয়া থানার ওসি মো: শামীম হোসেন বলেন, নাফ নদীর সাথে সংযোগ থাকা বালুখালী খালে জোয়ারের পানিতে লাশ ভেসে আসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে পুলিশ একটি লাশ উদ্ধার করে। লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তবে অন্য দুটি লাশের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানাননি। পুলিশ জানায়, উদ্ধার লাশের মাথায় হেলমেট, হাতে গ্লাভস রয়েছে। লাশটি ফুলে গেছে। পুলিশ ধারণা করছে, কয়েক দিন আগে নিহত হয়েছে।

বিজিবির চৌকিগুলোতে অত্যাধুনিক অ্যান্টিট্যাংক মিসাইল এম মোতায়েন : সীমান্ত নিরাপত্তায় টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি বান্দরবান সীমান্তের বিজিবির নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে আরকে থ্রি কর্সার এটিজিএম মোতায়েন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক সংঘর্ষ গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর অত্যাধুনিক এই অস্ত্রটি মোতায়েন করা হয়। নবনিযুক্ত বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো: আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় চৌকিগুলোতে এই অস্ত্রটি দেখেছেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিজিবির ঘুমধুম সীমান্ত চৌকিসহ আরো বেশ কয়েকটি চৌকিতে এটিজিএম মোতায়েন করা হয়েছে। এটিজিএম হলো ইউক্রেনের তৈরি হালকা বহনযোগ্য অ্যান্টিট্যাংক মিসাইল সিস্টেম। এটি দিয়ে স্থির ও চলমান সাঁজোয়া যান এমনকি হেলিকপ্টারেও আক্রমণ করা যায়। ২০০০ সালে ইউক্রেনে এই অস্ত্রটি তৈরি হয়। সীমান্তে অত্যাধুনিক এই অস্ত্রটি মোতায়েনে সীমান্ত সুরক্ষা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি বিজিবির আধুনিকায়নে আরো এক ধাপ উন্নতি হলো। সম্প্রতি বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ে।

এতে দু’জন নিহত ও চারজন আহত হয়। সীমান্তের ওপারে হেলিকপ্টার থেকেও ব্যাপক গুলি ও বোমাবর্ষণ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে বিজিবি কড়া প্রতিবাদও জানায়। এদিকে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে গতকাল রোববার সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা সীমান্ত থেকে পাওয়া ২টি রকেট লাঞ্চার নিষ্ক্রিয় করেছেন। বিকট শব্দে এগুলো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এসময় সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অন্যদিকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের উচ্চবিদ্যালয়ে অবস্থান করা মিয়ানমারের বিজিপির ১৫৮ সদস্যদের এখনো সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির পরই বাংলাদেশ অবস্থানকারী মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের সে দেশে জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/813464