৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ২:৩১

সুফল পৌঁছানোই চ্যালেঞ্জ

রোজার আগে কমল চার পণ্যের শুল্ক
আর মাত্র এক মাস পাঁচ দিন পর শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। আসন্ন রোজা উপলক্ষ্যে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রমজাননির্ভর চার পণ্য-চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের আমদানি শুল্ক ও কর কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ সিদ্ধান্ত সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর করা হয়েছে। ফলে যেসব পণ্য বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে সেগুলো কম শুল্কে ছাড় করানো যাবে। ফলে দ্রুতই কম শুল্কে আমদানি করা পণ্য বাজারে চলে আসবে। এতে বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তবে আসন্ন রোজায় বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্যের জোগান নিশ্চিত করা এবং শুল্ক কমানোর সুফল ভোক্তার কাছে পৌঁছানোই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পণ্যের দামে কী প্রভাব পড়বে তা নির্ভর করবে সরকারের বাজার তদারকির ওপর। কারণ আগেও বিভিন্ন সময় শুল্ক কমানোর পরও দেখা গেছে বাজারে পণ্যের দাম কমেনি। ভোক্তার জন্য দেওয়া শুল্ক ছাড়ের সুবিধা চলে গেছে ব্যবসায়ীদের পকেটে। নানা সময়ে সরকারের দেওয়া সুবিধাগুলো নিয়ে কারসাজি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এবারও যাতে আগের মতো না হয় সেজন্য বাজার তদারকি কঠোর করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তারা বলেন, শুল্ক কমানোর সুফল নিশ্চিত করতে অসাধু সিন্ডিকেট শক্ত হাতে দমন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের বলেন, শুল্ক কমায় আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভোজ্যতেল ও চিনির নতুন দাম নির্ধারণ হবে। উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেসব মালামাল বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে সেগুলো দ্রুত খালাস করে বাজারজাত করতে হবে। যাতে শুল্ক কমানোর সুবিধা সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে যায়।
তেল-চিনির মূল্য নির্ধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তেল এবং চিনির মূল্য ট্যারিফ কমিশন নির্ধারণ করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমদানিকারক এবং উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বসে যৌক্তিক পর্যায়ে নতুন শুল্কের প্রভাব অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হবে। আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে সেই দামেই পণ্য বিক্রি হবে।

আহসানুল ইসলাম টিটু আরও বলেন, শুল্ক কমানোর সুবিধা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে এনবিআরের সঙ্গে কথা বলে উৎপাদন পর্যায়ে এর প্রভাব বিবেচনা করে পণ্যের নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে। ব্যবসায়ীরা কমে পণ্য নিয়ে আসছেন, সেগুলো কবে বাজারে যাচ্ছে, সে হিসাব করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন শুল্কের প্রভাব অনুযায়ী নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে।

আসন্ন রোজায় পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রোজানির্ভর চারটি পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। এগুলো প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকেই কার্যকর করা হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই যেসব পণ্য বন্দর দিয়ে খালাস হবে ওইসব পণ্যে কম শুল্ক দিতে হবে। এর মধ্যে অপরিশোধিত চিনির আমদানির শুল্ক টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে প্রতি টনে শুল্ক কমেছে ৫০০ টাকা। পরিশোধিত চিনির টনপ্রতি শুল্ক ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কম শুল্কে চিনি আমদানির সুযোগ পাবেন আমদানিকারকরা। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পরিশোধিত-অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ভ্যাটের হার কমেছে ৫ শতাংশ। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি পর্যায়ে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানিতে আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংরক্ষণমূলক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে চাল আমদানিতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এখন থেকে চাল আমদানিতে শুল্ক দিতে হবে ৫ শতাংশ। তবে চাল আমদানির আগে প্রতি এলসির বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত হ্রাসকৃত শুল্কে চাল আমদানি করা যাবে।

এছাড়া সব ধরনের খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শুল্ক কমেছে ১০ শতাংশ। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত কম শুল্কে খেজুর আমদানি করা যাবে।

সূত্র জানায়, শুল্ক কমানোর ফলে এসব পণ্য আমদানিতে খরচ কমবে। ফলে বাজারে এসব পণ্যের দামও কমবে। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকেই কার্যকর করার ফলে কম শুল্কে আমদানি করা পণ্য দ্রুত বাজারে চলে আসবে। এতে বাজারে এর প্রভাবও পড়বে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে পণ্যের নতুন দম নির্ধারণ করবে। ওই দামেই রোজায় পণ্য বিক্রি করতে হবে। যাতে ভোক্তার কাছে শুল্ক কমানোর সুফল পৌঁছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা শুধু মুখে বললে হবে না। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আগে সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে নিত্যপণ্য দিতে হবে। পণ্যের দামে লাগাম টানতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো ঠিকমতো নেওয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ যে খুব কষ্টে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ ও নিম্নআয়ের মানুষ বেশি কষ্টে আছে। তাই বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজিয়ে পণ্যমূল্য সহনীয় করতে হবে। গোলাম রহমান আরও বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার জন্য একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বছরের পর বছর ভোক্তারা ঠকছেন। সংস্থাগুলো জানে কে বা কারা পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি করছে। একাধিকবার তারা সেটা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু অসাধুদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না। পাশাপাশি যতবার পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে তার সুফল ভোক্তা পায়নি। তাই এবার শুল্ক কমানোর পর পণ্য যাতে রোজার আগে বাজারে আসে তার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হয় এবারও ভোক্তার কোনো সুফল হবে না। বাড়তি দরেই পণ্য কিনতে বাধ্য হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে, বাজারে তা কার্যকর করতে সারা দেশে অভিযান চালানো হচ্ছে। সরকার যতবার পণ্যমূল্য নির্ধারণ করেছে, ততবার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তা কার্যকরের জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যেসব পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে, সেসব পণ্য দেশে এলে তার বাজার দরও যাচাই করা হবে। এর আগে রোজানির্ভর বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল করা হয়। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি ও খেজুর আমদানিতে মার্জিনের হার ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কম মার্জিনে আমদানিকারকরা ওইসব পণ্য আমদানি করতে পারবেন। ফলে উদ্যোক্তাদের পণ্য আমদানিতে নগদ টাকার বিনিয়োগ কমেছে। এতে পণ্যের দামও কমার কথা। গত ১৭ জানুয়ারি এসব পণ্য আমদানির মার্জিন কমানো হয়েছে। এসব পণ্য বাজারে আসতে আরও সময় লাগবে।

এদিকে উদ্যোক্তারা বলেছেন, অপরিশোধিত চিনি ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম অয়েল এগুলো খালাস করার পর পরিশোধন করে বাজারে আনতে কমপক্ষে এক মাস সময় লেগে যাবে। ফলে বাজারে এর প্রভাব এক সপ্তাহেই পড়বে না। তবে রোজার আগেই এর প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করেন। তবে ডলারের দাম বাড়লে বা আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেলে তখন আবার নতুনভাবে হিসাব করতে হবে।

বর্তমানে দেশে নিত্যপণ্যের উৎপাদন, মজুত ও সরবরাহ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজার ও গুদামে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রোজানির্ভর ছয় পণ্যের দাম তিন মাস আগ থেকেই বাড়ানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য এক বা একাধিক পণ্য টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। পরে এ দাম আর তেমন একটা কমছে না। আর দাম বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওইসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। কিন্তু যত টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল, পুরোটা না কমিয়ে সামান্য কিছু কমানো হয়। এমনকি উৎপাদন, পরিবহণ, ব্যবসায়ীর মুনাফাসহ যে দাম হওয়ার কথা, এর চেয়েও বেশি দাম নির্ধারণ করা হয়। এতে প্রকৃতপক্ষে ভোক্তা কোনোভাবেই লাভবান হচ্ছেন না। লাভবান হচ্ছে কথিত সিন্ডিকেট।

রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন মাস ধরে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরও রমজাননির্ভর পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে পরিচিত সেই সিন্ডিকেট। চক্রের কারসাজিতে নভেম্বরে প্রতিকেজি চিনি ১৩৫ টাকা বিক্রি হলেও চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ১৪৫-১৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি ভালো মানের মসুর ডাল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। আর ফেব্রুয়ারিতে ১৪০ টাকা। প্রতিকেজি ছোলা নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে দাম বেড়ে ১০০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, আর ফেব্রুয়ারিতে দাম বেড়ে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের মধ্যে নভেম্বরে প্রতিলিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৮ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি হয়েছে ১৭২-১৭৩ টাকা। পাম সুপার প্রতিলিটার নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে আরেক ধাপ বেড়ে ১৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নভেম্বরে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা বিক্রি হলেও ডিসেম্বরে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে দেশিজাত বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও সরকারের একাধিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু হাঁকডাকের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছে। এতে বাজারে ক্রেতাসাধারণ প্রতারিত হচ্ছেন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বছরে কয়েক দফায় ভোক্তার পকেট কাটছে সেই চিহ্নিত সিন্ডিকেট সদস্যরা। তারা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. এম কে মুজেরী বলেন, পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আগে থেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকার কী করছে, সেটি ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জানাতে হবে। অনিয়ম করলে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা হলেই ভোক্তা সরকারের উদ্যোগের সুফল পাবে। ভোক্তার সুরক্ষা দিতে হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। দেশে সেটি হচ্ছে না। কিছু ব্যক্তিগোষ্ঠীর হাতেই নিত্যপণ্যের নিয়ন্ত্রণ। এরা কারসাজি করলে তখন সরকারের আর করার কিছু থাকে না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/772263